Site icon চ্যানেল আই অনলাইন

আর কোনো রোহিঙ্গা নেবে না বাংলাদেশ

রোহিঙ্গা-মিয়ানমার-বাংলাদেশ-জাতিসংঘ

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা আর কোনো রোহিঙ্গাকে গ্রহণ করবে না বলে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে জানিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ।

পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক অভিযোগ করেছেন, বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীদের ফিরিয়ে নেয়ার আলোচনায় মিয়ানমার শুধু ‘ফাঁকা প্রতিশ্রুতি’ই দিয়েছে।

গত বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে একটি চুক্তি হয়েছিল। চুক্তি অনুসারে, প্রতি সপ্তাহে ১৫শ’ করে রোহিঙ্গা ফিরিয়ে নেবে মিয়ানমার। এভাবে বাংলাদেশ থেকে সব রোহিঙ্গাকে দু’বছরের মধ্যে ফিরিয়ে নেয়ার লক্ষ্য রয়েছে বলেও দেশটি জানিয়েছিল।

কিন্তু কথা রাখেনি মিয়ানমার। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে শহীদুল হক বলেন, মিয়ানমার যেহেতু কথা রাখছে না, বাংলাদেশও আর রোহিঙ্গা গ্রহণ করতে পারবে না।

সচিব বলেন, ‘রাখাইনে অনুকূল পরিবেশ না থাকায় একজন রোহিঙ্গাও স্বেচ্ছায় সেখানে ফিরে যেতে চাইছে না।’

‘বাংলাদেশ কি প্রতিবেশী দেশের একটি নিগৃহীত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর প্রতি সমমর্মিতা দেখিয়ে সংবেদনশীল ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেয়ার মূল্য দিচ্ছে?’ বলেন তিনি।

জবাবে জাতিসংঘে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত হাও দো সুয়ান বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিবকে ধৈর্য ধরতে অনুরোধ করেন। বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে একই সঙ্গে শারীরিক ও মানসিক বাধা কাজ করছে।

তিনি বলেন, ‘রাখাইনে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাস ও ভরসা সৃষ্টি করতে অনেক বেশি সময়, ধৈর্য এবং সাহস প্রয়োজন।’

তবে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়া খুব ‘ঢিলেঢালা’ বলে ওই বৈঠকেই অভিযোগ করেন মিয়ানমারে জাতিসংঘের দূত ক্রিস্টিন শ্র্যানার বার্গেনার। এর আগে জানুয়ারিতে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসও একই অভিযোগ করেছিলেন

জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, বর্মি সেনাবাহিনীর নির্যাতনে ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত সীমান্ত পেরিয়ে সাড়ে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। এর আগে ২০১৬ সালেও সেনাবাহিনীর হামলায় প্রাণভয়ে আরও বহু সংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছিল।

সেনাবাহিনীর হামলা ও সহিংসতার মাত্রার ভয়াবহতার কারণে জাতিসংঘ একে ‘পাঠ্যবইয়ে যোগ করার মতো জাতিগত নিধনের উদাহরণ’ বলে অভিহিত করেছে। অন্যদিকে একে যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ‘জাতিগত নিধন কর্মসূচি’ বলে বর্ণনা করেছে।

যদিও মিয়ানমার সরকার ও সেনাবাহিনী এখনো রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর হামলা চালানোর বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে।

Exit mobile version