মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সিএনএন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক ও রোহিঙ্গা ইস্যুসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন। সিএনএন-এর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাংকর ও এডিটর এ্যাট লার্জ রিচার্ড কোয়েস্ট’র সেই সাক্ষাতকারটি গ্রহণ করেছেন।
ইউক্রেন যুদ্ধ বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে রিচার্ড কোয়েস্টের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সবসময়ই শান্তিপূর্ণ সমাধানে বিশ্বাস করি। আলোচনার মাধ্যমে যে কোন সঙ্কটের সমাধান হতে পারে। আমরা কখনই হামলা বা সংঘাত সমর্থন করি না। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতি খুবই স্পষ্ট ও সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়। আমরা সবসময় এই নীতিতে চলি। তাই যখনই কোথাও মানবাধিকার লঙ্ঘন বা আগ্রাসন-দখলদারিত্ব দেখি, আমরা এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেই। তবে যুদ্ধ যখন শুরু হয় তখন তা উভয় পক্ষ থেকেই হয়। আমি মনে করি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে কারো এগিয়ে আসা উচিত। কারণ এতে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেখুন, আমি আপনাকে বলেছি আমি কখনোই কোন ধরনের হামলা বা দখলদারিত্ব সমর্থন করি না। প্রতিটি দেশেরই স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও নিজস্ব ভূখন্ডে বাস করার অধিকার রয়েছে, আমি তাই বিশ্বাস করি।
বাংলাদেশ চীন সম্পর্ক নিয়ে রিচার্ড কোয়েস্টের এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলি। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত সবার সাথে আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে। যারা আমাদের উন্নয়নে সহযোগী সবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভালো। চীন আমাদের এখানে বিনিয়োগ করছে, কিছু অবকাঠামো নির্মাণে কাজ করছে। আমরা কারও ওপর নির্ভরশীল নই।
চীন বাংলাদেশকে নিজের আয়ত্তের মধ্যে নিয়ে নিতে চায় কিনা সিএনএন সাংবাদিকের এমন এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেখুন, আমরা ঋণ নেওয়া এবং উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যাপারে খুবই সতর্ক। যে প্রকল্পগুলো আমাদের দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং যেখান থেকে আমরা উপকার পাই, শুধু সেসব প্রকল্পই আমরা হাতে নেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমরা বিশ্বব্যাংক বা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক-এডিবির মতো সংস্থা থেকে ঋণ নেই। চীনের কাছ থেকে আমরা খুবই অল্প পরিমাণ ঋণ নিয়েছি। এটা শ্রীলঙ্কা কিংবা অন্যদেশের মতো নয়। আরেকটি বিষয়, আমরা সব সময়ই নিজেদের অর্থায়নে উন্নয়নের চেষ্টা করি। এটাও বলে রাখি, আমরা অপ্রয়োজনীয় ঋণ কিংবা বড় প্রকল্প নেই না। আমরা সবসময়ই এটাই বিবেচনা করি কোন প্রকল্প থেকে আমরা লাভবান হবো এবং আমাদের দেশের নাগরিক সুবিধা পাবে।