লুক, টিজার আর গানে গেল ডিসেম্বর থেকেই আলোচনায় গিয়াস উদ্দিন সেলিম পরিচালিত বহুল প্রতীক্ষিত ছবি ‘কাজলরেখা’। ঈদে মুক্তি সামনে রেখে এবার এলো এই ছবির ট্রেলার! মঙ্গলবার রাতে প্রকাশিত এই ছবির ট্রেলারটিও প্রশংসা পাচ্ছে দর্শকের।
প্রায় আড়াই মিনিটের ট্রেলারে দারুণ একটি গল্প, সংলাপ আর গানের যে দুর্দান্ত আভাস দর্শক পেয়েছেন; তাতে অনেকেই ছবিটি নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। এমনকি ট্রেলার মুক্তির পর জয়া আহসান, নওশাবা সহ অনেকে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ারও করেছেন। জানিয়েছেন নিজেদের ভালো লাগার কথা।
তারকাবহুল ‘কাজলরেখা’ সিনেমায় প্রধান চরিত্রে নবাগতা মন্দিরা চক্রবর্তী ছাড়াও তুমুল প্রশংসা পাচ্ছেন নাটকের এই মুহূর্তে জনপ্রিয় মুখ সাদিয়া আয়মান। এটি তারও প্রথম সিনেমা।
এছাড়া শরিফুল রাজ, ইরেশ যাকের, মিথিলা, খায়রুল বাসারসহ অনেকে তারকা মুখকে নতুনভাবে দেখা গেছে ‘কাজলরেখা’র ট্রেলারে। যা নিয়ে আলাদা করে চলচ্চিত্রের বিভিন্ন গ্রুপ ও পেজে কথা বলছেন দর্শক।
বিশেষ করে গিয়াস উদ্দিন সেলিমের সিনেমা মানেই দারুণ সব গানের সমাহার! ‘কাজলরেখা’র ক্ষেত্রেও যে ব্যতিক্রম হচ্ছে না সেটা আগেই আঁচ পাওয়া গেছে! এরইমধ্যে প্রকাশিত একাধিক গান পেয়েছে প্রশংসা। তবে ট্রেলারে আরো দু’চারটি গানের যে আভাস পাওয়া গেছে, সেগুলো প্রকাশিত হলেও যে শ্রোতা দর্শকরা লুফে নিবে, সেটাও অনেকের মন্তব্যে বোঝা গেছে। সিনেমাটিকে নির্মাতা নিজেও ‘মিউজিক্যাল ফিল্ম’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন!
সাধারণ দর্শকের পাশাপাশি ‘কাজলরেখা’ নিয়ে বেশী আগ্রহী দেখা গেছে সাহিত্য সম্পর্কিত মানুষজনের। বাংলা চলচ্চিত্র গ্রুপে ‘কাজলরেখা’র ট্রেলার শেয়ার করে রহমান মতি নামের একজন লিখেছেন,“অনার্সের সিলেবাসে ছিল ‘কাজলরেখা’। চলচ্চিত্র হচ্ছে জেনেই আগ্রহ বেড়ে গিয়েছিল। ট্রেলার চমৎকার। ন্যাচারাল প্রেজেন্টেশন। শরিফুল রাজের সময় চলছে যেন এখন। সাদিয়া আয়মান অল্প সময়েই ভালো অবস্থানে এসেছে যার প্রমাণ এ ছবি। বড়পর্দার জন্য এখন অপেক্ষা।”
রিয়াদ মাহমুদ নামের আরেক দর্শক ট্রেলার দেখে লিখেছেন,“ইংরেজি সাহিত্যে পড়েও আদার’স কোর্সে বাংলা সাহিত্যের ‘কাজলরেখা’ পড়েছিলাম। ছোটবেলায়ও অনেকবার এটা পড়া হয়েছে। যখন থেকে শুনেছি ‘কাজলরেখা’ নিয়ে সিনেমা হবে তখন থেকেই মুখিয়ে আছি দেখার জন্য।”
ট্রেলারটি ঘিরে এরকম আরো অসংখ্য মন্তব্য চোখে পড়েছে। সিনেমাটি ঈদে মুক্তি পাচ্ছে শুনে অবশ্য অনেকে ভিন্ন মন্তব্যও করেছেন। বলছেন, কাজলরেখা যে মানসম্পন্ন ছবি, সেটি ঈদে মুক্তি দিয়ে অন্য সময়ে মুক্তি দিলে আরো ভালো হতো। যেমন ফাহাদ হোসেন নামের একজন ট্রেলারটির নিচে মন্তব্য করেছেন,“এটা ঈদে আসাই ঠিক হচ্ছে না। যেসব সিনেমা ভিন্ন চিন্তার, নন কমার্শিয়াল এগুলো ঈদে না দেওয়া উচিত। আর তখনি ঈদে দেয়া উচিত যখন ঈদের সব সিনেমাই নন কমার্শিয়াল ইন্টেলেকচুয়াল সিনেমা থাকবে। এই সিনেমার ব্যাবসা করার পটেনশিয়াল ছিল যদি ঈদে না আসতো আর সেই ডিজাইনে প্রমোশন করা হইতো।”
যদিও নির্মাতা গিয়াস উদ্দিন সেলিম এমনটি মনে করেন না। চলতি মাসে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে নির্মাতা জানান,“ঈদে অনেকগুলো ছবি মুক্তি পাবে। ভালো কাজের প্রতিযোগিতা থাকাটা ইতিবাচক দিক। আর যে ছবির দম থাকবে সেই ছবি মানুষ দেখবে। বড় আয়োজন এর কাজলরেখা মুক্তির উপযুক্ত সময় হচ্ছে উৎসব। ঈদ ও বৈশাখ একসাথে আমরা পাচ্ছি। এ কারণে আমার কাছে মনে হয়েছে এই সময় ছবিটি মুক্তি দেয়া উচিত। সিনেমা নির্মাণ থেকে মুক্তি দেয়া সবকিছুই আমাদের এখানে চ্যালেঞ্জ। তাই আমি চ্যালেঞ্জ নিয়েছি, দেখা যাক ফলাফল কী আসে।”
মৈমনসিংহ গীতিকা অবলম্বনে নির্মিত ‘কাজলরেখা’ দুই বছর ধরে ৫০ দিনে নেত্রকোনার দুর্গাপুর, খুলনা সুন্দরবন, কক্সবাজার, সিলেটের হাওড় ও রাজধানীর মিরপুরে শুটিং সম্পন্ন হয়েছে। নবীন প্রবীণ মিলিয়ে শতাধিক কলাকুশলী এতে যুক্ত আছেন। ছবিটির ভিএফএক্স ও টেকনিক্যাল দিকে যুক্ত আছে ঢাকা কলকাতার নামকরা স্টুডিও। ছবির সুর ও সংগীত গবেষণায় আছেন কফিল আহমেদ এবং সংগীতের বাকি কাজ সামলেছেন ইমন চৌধুরী।