সিলেটে কমছে বন্যার পানি। জেগে উঠছে বসতভিটা। আশ্রয়কেন্দ্র থেকে মানুষ ফিরছে নিজ নিজ ভিটায়। তবে এ ফেরায় নেই কোন আনন্দ, নেই উচ্ছাস। বানের জলে ভেসে গেছে তাদের সহায় সম্বল ও স্বপ্ন। ক্ষতিগ্রস্ত ঘরকে বাসযোগ্য করতে দুশ্চিন্তার শেষ নেই তাদের। এরমধ্যে তাদের ‘মরার ওপর খাড়ার ঘাঁ’ হিসেবে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত রোগবালাই।
পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে শহরের পাড়া–মহল্লায়, রাস্তাঘাটে ভেসে উঠছে ময়লা-আবর্জনা। ছড়িয়ে পড়ছে দুর্গন্ধ। মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন নানা রোগবালাইয়ে। এর মধ্যে ডায়রিয়া, আমাশয়, পেটে ব্যথা, জ্বরসহ নানা চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা যায়, সেনাবাহিনীর একটি দল সকাল থেকে শহরের শহীদ আবুল হোসেন মিলনায়তন প্রাঙ্গণে মানুষদের চিকিৎসাসেবা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ দিচ্ছে। অনেক নারী-পুরুষ সেখানে সেবা নিচ্ছেন। চিকিৎসা দলে থাকা ক্যাপ্টেন কাজী তানজিদুর রহমান জানান, মানুষজন পানিবাহিত রোগ নিয়েই বেশি আসছেন। এ চাড়া চর্মরোগও আছে। তারা সবাইকে প্রয়োজনীয় সেবা ও ওষুধ দিচ্ছেন।
সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন শঙ্কার মধ্যেও আশার কথা শুনিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘জেলা সদর হাসপাতাল, শাল্লা ও ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ছাড়া আর সব হাসপাতালই প্লাবিত হয়েছিল। তবে সেবা কার্যক্রম কোথাও বন্ধ হয়নি। আমাদের কর্মীরা কাজ করছেন। সরকারি-বেসরকারি পর্যায় থেকে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হচ্ছে। যেখানে ট্যাবলেট পাওয়া যাবে না, সেখানে পানি ফুটিয়ে পান করতে হবে। বাড়িঘর থেকে পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে ভেতর-বাহির সব জায়গা ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। তাহলেই রোগবালাই কম হবে।’ এ পরামর্শ মেনে চলতে পারলে উপকার পাওয়া যাবে বলে আমাদের বিশ্বাস। তবে বন্যা পরিস্থিতিতে এ পরামর্শ কতটুকু মেনে চলা সম্ভব, সেটাই দেখার বিষয়।
বন্যা কবলিত এলাকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা যে অনেকটাই ভেঙে পড়েছে সেটা অস্বীকার করার উপায় নেই। উদ্ধার কার্যক্রম ও ত্রাণ সহায়তার পাশাপাশি বন্যায় বিধ্বস্ত অঞ্চলের মানুষের রোগবালাই নিয়ন্ত্রণে বিশেষ নজর দিতে হবে। তাহলে পরিস্থিতি মোকাবেলা অনেকটাই সহজ হবে। সেজন্য বন্যাদুর্গত মানুষদের রোগবালাই লাঘবে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগ গ্রহণ করতে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।