শেষ হতে চলেছে ২০২৩। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি নতুন বছরকে বরণ করতে প্রস্তুত শিল্পীরাও। নতুন পরিকল্পনার ছক আঁকছেন কেউ কেউ। যাকে বলছেন নিউ ইয়ার রেজ্যুলেশন!
অভিনেতা শামীম হাসান সরকারও তার কাজ নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জানিয়েছেন, জামাই, বউ, বেয়াই, বেয়াইন, প্রবাসী, নিবাসী, ভাশুর, শশুর, পশুর এসব নাম থাকা গল্পের নাটক থেকে বিদায় নিচ্ছেন। এই অভিনেতা পরিস্কার জানান, নতুন বছরটা নতুনভাবে শুরু করতে চান তিনি।
উদ্ভট নামে হরহামেশাই ইউটিউব ফেসবুকে নাটক প্রচার হচ্ছে। এসবে আর কোনো নাটকে কাজ করবেন না জানিয়ে ‘ম্যাংগো স্কোয়াড’র এই লিডার বলেন, হয় ভালো গল্প, নয়তো এক্সিকিউশন, না হলে শুট না করলাম। পকেটে টাকা হোক অল্প। প্রয়োজন মনে হলে চাকরী বদলাবো কিন্তু মনের সুখ তো থাকবে। ইনশাল্লাহ আমি সবসময় পেরেছি। এবারও পারবো। আমি আশা করি আপনারাও আমার সাথে থাকবেন যেমনটা প্রথম থেকে ছিলেন।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ এমএসসি করে চাকরী ছেড়ে ইউটিউবার হয়েছিলেন শামীম হাসান সরকার। সেখান থেকে অভিনয়ে আসেন, এখন পুরোপুরি অভিনেতা তিনি। নানামাত্রিক চরিত্র দিয়ে শামীম হয়ে উঠেছেন ছোটপর্দায় ব্যস্ততম অভিনেতাদের একজন। ইউটিউব থেকে অভিনয়ে আসার পর ভিত মজবুত করতে শামীমকে কম শ্রম দিতে হয়নি। শুরুতে ‘ক্যারেক্টার আর্টিস্ট’ হলেও ধীরে ধীরে তিনি হয়ে ওঠেন ‘সেন্ট্রাল ক্যারেক্টার’ অভিনেতা।
ইউটিউবার থেকে টেলিভিশন অভিনেতা হওয়ার পর শামীম খেয়াল করেন, সংশ্লিষ্ট বেশিরভাগই ইউটিউবারদের চেয়েও বেশি ভিউস কাউন্ট করেন। শামীম হাসানের কথা, ফেসবুক ক্লিপস আর ভিউস আমাদের নাটক ধ্বংস করে দিচ্ছে। আমি প্রতিজ্ঞা করেছি, অনেক ধ্বংস করেছি আর করবো না।
৮ বছর ধরে অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত শামীম হাসান সরকার। তিনি চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, শুরুতে ফেসবুক ক্লিপস সিস্টেম ছিল না। যেহেতু এতোদিন অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত আছি তফাৎটাও বুঝতে পারছি। এই ক্লিপস আমাদের নাটক কালচার ধ্বংস করছে। এখন যেভাবে নষ্ট হয়েছে এতোদিন সেটা এই লেভেলে ছিল না। ক্লিপসের কারণে সস্তা সস্তা নাম আর স্ক্রিপ্ট শুরু হয়েছে। এখন ইউটিউব থেকে টিভি অ্যাক্টর হয়ে সবাইকে ক্লিপসের ভিউস থেকে কতো টাকা উঠলো ভাবতে দেখে হাসি পায়। তাই যদি হয়, তাহলে টিভি মাধ্যমে কাজ করে লাভ কী? ইউটিউবার হয়ে গেলেই তো হয়!
সমসাময়িক ইউটিউব কিংবা ফেসবুককে টার্গেট করে নাটক নির্মাণ প্রসঙ্গে শামীম হাসান সরকার বলেন, একটা গল্পে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যে জার্নি সেটা এখন গায়েব হয়ে গেছে। আমাদের শিল্পীদের সবসময় ক্ষমতা থাকে না। অনেকসময় প্রযোজক এবং পরিচালকরা আমাদের সঙ্গে আলোচনা না করেই আজব সব নাম দেয়, কিন্তু দিনশেষে দর্শকরা ভাবে আমরা সস্তা হয়ে গেছি। আসলেই কি আমরা নির্যাতিত হচ্ছি নাকি সস্তা হচ্ছি?
“এটা আমরা বুঝতে পারছি, কিন্তু বেশীরভাগ দর্শকরা এগুলো বুঝতে পারছে না। কেউ ভাবুক না ভাবুক আমি আর ভিউস গোনার দলে নাই। আগে যেটা করতাম, সেটা করতে এখন রেডি। সত্যি বলছি, কাজ কম হোক, টাকা কম উপার্জন হোক আমাকে দিয়ে আর কিছু দুর্গন্ধ না হোক এটাই চাই।” -বলছিলেন শামীম হাসান সরকার।
ঢাকা/এনই/এমটিএল