আসন্ন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সভাপতি পদে শাকিব খানকে প্যানেলের নেয়ার জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক নিপুন আক্তার। গত শনিবার সমিতির পিকনিকে এ কথা জানিয়েছেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক অমিত হাসান।
‘ভুলোনা আমায়’ ছবির নায়ক অমিত হাসান জানান, তিনি নিজেও নিপুনের প্যানেল থেকে নির্বাচন করবেন। পাশাপাশি শাকিব খানকেও তাদের প্যানেলে আনার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে শাকিব নির্বাচনে অংশ নেবেন কিনা জানার চেষ্টা করা হলেও তার সরাসরি কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, শাকিব নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক নন। নির্বাচনে তাকে নেয়ার জন্য একাধিকবার তদবির করা হলে শাকিব হাসিমুখে ‘না’ বলে দিয়েছেন।
এই সুপারস্টারের ঘনিষ্ঠরা জানান, চলচ্চিত্রকে এগিয়ে নিতে হলে ভালো ভালো সিনেমা করতে হবে। আর ভালো সিনেমা করার জন্য চেষ্টা মূখ্য, সমিতি বা নির্বাচন নয়। তাই এফডিসির শুধু শিল্পী সমিতি কেন, কোনো নির্বাচন নিয়ে মোটেও মাথা ঘামাচ্ছেন না এই সুপারস্টার।
১৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে শিল্পী সমিতির নির্বাচন। তার আগে রমজান মাস জুড়ে শুরু হবে ভোটের প্রচারণা। শাকিব তখন ‘তুফান’ সিনেমার শুটিংয়ে চেন্নাই থাকবেন। তাছাড়া ঈদে তার ‘রাজকুমার’ সিনেমাটি বাংলাদেশের পাশাপাশি একযোগে আমেরিকা, কানাডা, যুক্তরাজ্যে মুক্তি পাবে। এ কারণে তিনি কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন। তাই শাকিবের নির্বাচনে অংশ নেয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে তিনি চান, এফডিসিতে কাজের পরিবেশ ফিরে আসুক।
ঘনিষ্ঠজনদের কথা, এর আগে ২০১৪ সাল থেকে টানা দুইবার সভাপতি পদে জয়ী হয়েছিলেন শাকিব। তার মেয়াদে সমিতির সৌন্দর্য বৃদ্ধি, বাগান তৈরিসহ শিল্পীদের স্বার্থরক্ষায় ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছিল।
সিনিয়র শিল্পীদেরও কথা, শাকিব সভাপতি থাকাকালীন সকল শিল্পীদের মধ্যে একতা ছিল। পারস্পরিক বন্ধন অটুট ছিল। শিল্পীর বিপদে তাকে দূরে ঠেলে দেয়া হতো না। ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ ছিল। তার পরবর্তীকালে যারাই ক্ষমতায় এসেছেন, তারা শিল্পীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সঠিক সিদ্ধান্ত নেননি। শিল্পীদের মধ্যে বিভেদ তৈরি হয়েছে, একতা নেই। অনেকেই তাই সমিতি বিমুখ।
২০২২-২৩ নির্বাচনের আগেও শাকিবকে সভাপতি হিসেবে চেয়েছিলেন নিপুন। তিনি না করায় ইলিয়াস কাঞ্চনকে নিয়ে প্যানেল করেন এই নায়িকা। তবে আসন্ন নির্বাচনে ইলিয়াস কাঞ্চনও অংশ নেবেন না জানিয়ে বলেছেন, অনেক দুঃখ নিয়ে শিল্পী সমিতি থেকে বিদায় নিচ্ছি। নির্বাচনের পর থেকেই সমিতির একটা পদ নিয়ে মামলা মোকদ্দমা কত কিছু করেছেন। কিন্তু শিল্পী সমিতি ও শিল্পীদের স্বার্থ তো আলাদা জিনিস। এই বিষয়টাই কেউ বুঝতে চাইল না।
এদিকে, শাকিব খান নির্বাচনে অংশ নিতে অনাগ্রহ দেখানোয় সেকেন্ড অপশন হিসেবে আলমগীর, ববিতা, মৌসুমী, অনন্ত জলিলের কাছেও সভাপতি পদে নির্বাচনে অংশ গ্রহণের প্রস্তাব গেলে তারাও রাজি হননি বলে শোনা যাচ্ছে। কানকথা হিসেবে শোনা যাচ্ছে, শেষ পর্যন্ত নিপুনের প্যানেল থেকে সভাপতি প্রার্থী হতে পারেন অমিত হাসান অথবা রিয়াজ!
অনন্ত জলিল বলেন, নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার খোরশেদ আলম খসরু ও আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান শামসুল আলম, প্রযোজক ইকবাল, মোহাম্মদ হোসেন, নিপুণসহ হোটেল ওয়েস্টিনে বসেছিলাম। নির্বাচন করলে এর পিছনে যত সময় দিতে হয় ততটা আমার কাছে নেই। চলচ্চিত্রকে ভালোবাসি সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রয়েছে, সবার বিপদে আমি পাশে থাকবো। কিন্তু আমি বলেছি নির্বাচন করার মতো সময় আমার হাতে নেই।
শিল্পী সমিতির আরেকটি প্যানেল থেকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন করতে যাচ্ছেন মনোয়ার হোসেন ডিপজল ও মিশা সওদাগর।