মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন শাহ সুন্নি আল কাদেরী ওরফে মাওলানা প্রফেসর মো. ইকবাল হোসাইন (৪৫) বিভিন্ন ইসলামিক বই পড়ে ও মোবাইলে বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিল শুনে কিছু ধর্মীয় বিষয় মুখস্ত করে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতেন।
রোববার ১৮ জুন রাতে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে কুমিল্লার দেবিদ্বারে সাত বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে ধর্ষক ভণ্ডপীর মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন কে গ্রেপ্তার করে র্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১১।
সোমবার ১৯ জুন দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন: কুমিল্লার চান্দিনা এলাকার তথাকথিত একজন পীরের মুরীদ এবং স্বনামধন্য একটি দরবার শরীফের অনুসারী ও প্রতিনিধি হিসেবে নিজেকে দাবী করে আসছিলেন ভণ্ডপীর ইকবাল। তিনি কুমিল্লার একটি স্থানীয় কলেজ থেকে স্মাতক সম্পন্ন করেন। বিভিন্ন কলেজে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকতা করতো সে। এরজন্য স্থানীয় লোকজন তাকে প্রফেসর বলে ডাকতেন। একপর্যায়ে সে স্থায়ী কোন চাকরী না পেয়ে সহজে টাকা উপার্জনের মাধ্যম হিসেবে স্থানীয় জনগণের ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে নিজেকে কথিত পীর হিসেবে দাবি করেন। পরে সে তার বেশভূষা ও চলাফেরায় পরিবর্তন এনে পীরের লেবাস ধারণ করে নামের শেষে শাহ সুন্নি আল কাদেরী উপাধি যুক্ত করে ধর্মীয় অপব্যাখ্যার মাধ্যমে এলাকার স্থানীয় লোকদের অন্ধবিশ্বাসকে পুঁজি করে দীর্ঘদিন ধরেই প্রতারণা করে আসছিল।
আল মঈন বলেন: ইকবালের ধর্মীয় বিষয়ে তার কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। শুদ্ধভাবে আরবি পড়তে পারত না। বিভিন্ন ইসলামিক বই পড়ে ও মোবাইলে বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিল শুনে সেগুলো মুখস্ত করত। এরপর প্রতি সপ্তাহে নির্দিষ্ট একদিন তার আস্তানায় জমজমাট আসর বসিয়ে ধর্মীয় বিষয়ে বক্তব্য দিত এই ভণ্ডপীর। অনেক সময় সে নিজের আস্তানার বাইরেও বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিত।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন: তার আস্তানায় আগত লোকজন মাদকসেবনসহ বিভিন্ন অনৈতিক কার্যকলাপ করতো বলে জানা যায়। এছাড়াও সে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের এবং তার আস্তানার বিভিন্ন আইডি ও পেইজ খুলে আস্তানার প্রচার-প্রচারণা করে সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করতো। এর আগেও সে বেশ কয়েকবার অসামাজিক কার্যক্রমে লিপ্ত হলে স্থানীয় লোকদের কাছে ধরা পড়েছিলেন। পরে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে অঙ্গিকারনামা দিয়ে সেখান থেকে ছাড়া পায়। তার অন্ধ ভক্তরা তাকে হাদিয়া স্বরূপ টাকা-পয়সা, স্বর্ণ অলংকার ও গবাদী পশু ইত্যাদি দিতেন। এগুলো সে নিজের আস্তানার জন্য ব্যয় করতো বলে জানা যায়।
তিনি বলেন: গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের ঘটনার সাথে নিজের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে স্বীকার করেছে ধর্ষক ভণ্ডপীর মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন শাহ সুন্নি আল কাদেরী।