সিনেমা অঙ্গনে সুদিনের হাওয়া। করোনা পরবর্তী দেশীয় সিনেমা অঙ্গন রীতিমত ধুঁকছিলো। দর্শকের অভাবে যখন সিনেমা হলগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার অবস্থা, তখন দর্শকদের আবারও হলে ফেরাতে শুরু করে ‘শান’ ও সরকারি অনুদানে নির্মিত ‘গলুই’ এর মতো ছবিগুলো।
তবে সেই সুবাতাসের চূড়ান্ত হাওয়া বইতে শুরু হয় গেল ঈদুল আযহা থেকে! কারণ এই ঈদে মুক্তি পাওয়া রায়হান রাফীর ‘পরাণ’ সাম্প্রতিক বাংলা সিনেমায় নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। মুক্তির প্রায় দেড় মাস অতিক্রম করলেও ছবিটি দেখতে এখনও হাউজফুল দর্শক!
প্রযোজনা সংস্থা লাইভ টেকনোলজিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘পরাণ’ মুক্তির একমাসের মধ্যেই ‘ব্লকবাস্টার হিট’ হয়ে গেছে! সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হচ্ছে, এখনো ‘পরাণ’-এর টিকেটের জন্য হাহাকার লেগে আছে! স্টার সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ বলছে, বাংলা সিনেমায় এমন দৃষ্টান্ত বিরল! অনেকটা ইতিহাস বলা যায়।
লাইভ টেকনোলসিজের প্রযোজনায় বিদ্যা সিনহা মিম, শরিফুল রাজ, ইয়াশ রোহান, রাশেদ অপু, শহীদুজ্জামান সেলিম, রোজি সিদ্দিকী অভিনীত ‘পরাণ’ সাফল্যের ধারাবাহিকতায় চলছে অস্ট্রেলিয়াতেও। সেখানকার পরিবেশক বঙ্গজ ফিল্মসের তানিম আল মিনারুল মান্নান জানান, অস্টেলিয়ার সবখানে ‘পরাণ’ ভালো চলছে। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান লাইভ টেকনোলজিস জানাচ্ছে, শিগগির ইউরোপ, আমেরিকায় ও মধ্যপ্রাচ্যেও ‘পরাণ’ মুক্তি পেতে যাচ্ছে।
এদিকে, দেশে মুক্তির সাফল্যে লাইভের পরিচালক ও প্রযোজক ইয়াসির আরাফাত স্পষ্ট জানিয়েছেন, ‘পরাণ’ ব্লকবাস্টার হিট সিনেমা।
চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন, আমাদের লগ্নীকৃত টাকার চেয়ে পাঁচগুণ বেশি টাকা উঠে এসেছে। নির্দিষ্ট পরিমাণ এমাউন্ট বলতে পারছি না, তবে যে পরিমাণ অর্থ এসেছে এটা আমাদের ধারণার বাইরে ছিল। সিনেপ্লেক্স থেকে রেকর্ড পরিমাণ লভ্যাংশ পেয়েছি। সিঙ্গেল স্ক্রিনেও হিট। ক্লিয়ার এমাউন্ট জানাতে সময় লাগবে। যে পরিমাণে অর্থ একমাসে তুলতে পেরেছি তাতে আরও ভালোভাবে দুইটা থেকে তিনটা সিনেমা বানাতে পারবো।
‘পরাণ’ এর এই সাফল্যের রহস্য কী? জানতে চাইলেন ইয়াসির আরাফাত বলেন, এ ধরনের সিনেমার অনেক বছরের গ্যাপ ছিল। করোনায় হলগুলো বন্ধ ছিল। দর্শক তেমন ভালো সিনেমা পায় নাই। ‘পরাণ’ মুক্তির মাধ্যমে দেখলাম দলে দলে মানুষ হলে। সব শ্রেণির দর্শক ‘পরাণ’ দেখেছে। আমার কাছে আরো যেটা মনে হয় ডিরেক্টর আর্টিস্ট অলরাউন্ডার পারফর্মেন্স করেছে। বাংলাদেশ ক্রিকেটে দুর্দান্ত ম্যাচ উপহার দিলে দলের সবাইকে যেমন ভালো পারফর্ম করতে হয়, পরাণেও তেমননি সবাই অসাধারণ পারফর্ম করেছেন। দর্শক সিনেমা দেখে হলে হলে সেই জয় উল্লাস করেছে। আমরা দর্শকদের কাছে কৃতজ্ঞ।
লাইভ টেকনোলোজিস এখন থেকে নিয়মিত সিনেমা বানাবে উল্লেখ করে ইয়াসির আরাফাত বলেন, অবশ্যই দর্শকের চাহিদা অনুযায়ি সিনেমা বানানো। আমরা ‘পরাণ’ দিয়ে বুঝে গেলাম যে দর্শকদের আসলে চাহিদাটা কী! লাইভ টেকনোলজিসের আরেক ডিরেক্টর তামজিদ অতুল ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন আমরা বছরে দুটি করে সিনেমা বানাবো। দর্শকদের এই চাহিদার ভিত্তিতে আমরা নতুন সিনেমাগুলোতে লগ্নী করবো।