ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেছেন, মার্কেটগুলো বেশিরভাগই ঝুঁকিপূর্ণ। পুলিশের পক্ষ থেকে আমরা সবগুলো বিষয় মাথায় রেখে তদন্ত করব। এগুলো নিছক দুর্ঘটনা, নাকি এর পেছনে অন্য কোনও কারণ আছে তা খতিয়ে দেখা হবে।
শনিবার ১৫ এপ্রিল দুপুরে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত নিউ মার্কেট এলাকায় পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, এর সায়েন্সল্যাব ও গুলিস্তানে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বঙ্গ বাজারে একটি বড় আগুনের ঘটনা ঘটলো। গতকাল রাতে একটি হাজারীবাগের ট্যানারিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আজকে ভোরে আবার এই নিউমার্কেটে আগুন লেগেছে। এর আগের দুটো বিস্ফোরণের ঘটনাতেই আমরা মামলা নিয়েছি। বঙ্গবাজারে আপনার ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। আর আমরা ইন্টারনাল একটা তদন্ত করেছি। যদিও তদন্ত কমিটি করা হয়নি।
তিনি বলেন, আমাদের বিশেষজ্ঞরা বলছেন বিস্ফোরণের দুটি ঘটনা (সায়েন্সল্যাব ও গুলিস্তান) প্রাকৃতিক গ্যাস জমার কারণে এক্সিডেন্ট। কারণ আমাদের তদন্তে এখন পর্যন্ত কোনও নাশকতার আলামত খুঁজে পাইনি। আর দুটি আগুনের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তদন্ত প্রতিবেদন দেখলে বুঝতে পারব এগুলো নাশকতা না দুর্ঘটনা।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বের পাশাপাশি মানবিক পুলিশিংটাও আমরা করে থাকি। কোনও ঘটনা ঘটলে আমাদের সবার আগে বলা থাকে ফায়ার সার্ভিস যেন নির্বিঘ্নে আগুন নেভানোর কাজ করতে পারে। মানুষজন যেন ফায়ার সার্ভিসের যাতায়াতের পথে কোনও প্রকার প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে না পারে সেই ব্যবস্থা করা। তারপর কোনও জিনিসপত্র কেউ যেন লুটপাট না করে সেই বিষয়টা দেখা এবং মানবিক পুলিশিং আমাদের তিন নম্বর কাজ। এর জন্য যদি আমাদের ঝুঁকি নিতে হয়, তবে আমরা সেই ঝুঁকি নিতে রাজি আছি।
শনিবার ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে নিউ সুপার মার্কেটে এ আগুন লাগে এবং ৫টা ৪৩ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে ইউনিট সংখ্যা বাড়িয়ে ৩০টি করা হয়েছে। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। সঙ্গে যুক্ত হয়ে সহায়তা করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর অগ্নি নির্বাপণ সাহায্যকারী দল। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে বিজিবি ও পুলিশ। আগুন পুরোপুরি নির্বাপণ হওয়া পর্যন্ত কাজ করবে ফায়ার কর্মীরা।
অন্যদিকে আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে ধোঁয়ায় অসুস্থ ১২ দমকলকর্মীসহ ২২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পাঁচ দোকান কর্মচারীকে নেওয়া হয়েছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। আগুনের ধোঁয়ায় তারা অসুস্থ হন বলে জানা যায়।