Site icon চ্যানেল আই অনলাইন

শেষ ওভারে দারুণ জয় পেল গুজরাট

ঋতুরাজ গায়কোয়াড়ের ঝড়ো ব্যাটিং, এরপর মহেন্দ্র সিং ধোনি টি-টুয়েন্টি ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো আট নম্বরে ব্যাট করে খেলেন ক্যামিও ইনিংস। এতে চ্যালেঞ্জিং স্কোর পেয়েছিল চেন্নাই সুপার কিংস। আইপিএলের চারবারের চ্যাম্পিয়নদের জন্য সেটি যথেষ্ট প্রমাণিত হয়নি। গত আসরে প্রথমবার অংশ নিয়েই শিরোপা জেতা গুজরাট টাইটান্স ৫ উইকেটের জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে।

শুক্রবার রাতে আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে হওয়া আইপিএলের ১৬তম আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা চেন্নাই ৮ উইকেটে ১৭৮ রান করে। জবাবে গুজরাট চার বল হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করে।

ডেভন কনওয়ের বিদায়ে ১৪ রানেই ভাঙে চেন্নাইয়ের ওপেনিং জুটি। কিউই ব্যাটারকে বলদকরে আইপিএলে শততম উইকেট পাওয়ার কৃতিত্ব গড়েন মোহাম্মাদ শামি।

দ্বিতীয় উইকেটে ঋতুরাজের সঙ্গে ৩৬ রানের জুটি গড়েন মঈন আলী। সাবলীল ব্যাটিং করতে থাকা ইংলিশ অলরাউন্ডার ১৭ বলে ৪টি চার ও এক ছক্কায় ২৩ রান করে রশিদ খানের বলে ঋদ্ধিমান সাহার গ্লাভসে ধরা পড়েন। মাত্র ৭ রান করে রশিদের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বেন স্টোকস।

আম্বাতি রাউডুকে নিয়ে চতুর্থ উইকেটে ৫১ রানের জুটি গড়ে চেন্নাইকে কক্ষপথে ফেরান আক্রমণাত্মক মেজাজে ব্যাট করতে থাকা ঋতুরাজ। ১২ রান করা আম্বাতিকে বোল্ড করেন জশ লিটল।

২৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি করা ঋতুরাজ অল্পের জন্য শতক হাঁকাতে পারেননি। ১৮তম ওভারের প্রথম বলে আলজারি জোসেফের ইয়র্কার বলকে লং অনের উপর দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে শুভমান গিলের তালুবন্দি হন। এর আগে খেলেন ৫০ বলে ৪টি চার ও ৯টি ছক্কায় ৯২ রানের নান্দনিক ইনিংস।

রবীন্দ্র জাদেজা এবং শিভম দুবেও দ্রুতই আউট হলেও শেষদিকে ধোনির ৭ বলে এক চার ও এক ছক্কায় অপরাজিত ১৪ রানের ইনিংসের সুবাদে ১৭৮ রান তোলে চেন্নাই।

গুজরাটের পক্ষে শামি, রশিদ ও জোসেফ দুটি ও লিটল নেন একটি উইকেট।

বোলিং ইনিংসে টুর্নামেন্টে চালু হওয়া নতুন নিয়মের ব্যবহার করে ইমপ্যাক্ট খেলোয়াড় মাঠে আনে চেন্নাই। আম্বাতির বদলে মাঠে নামেন ডানহাতি পেসার তুষার দেশপান্ডে। আইপিএলের ইতিহাসে তিনিই প্রথম ইমপ্যাক্ট খেলোয়াড় হিসেবে নাম লেখান।

১৭৯ রানের লক্ষ্য তাড়ায় আগ্রাসী ভঙ্গিতেই বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা ব্যাট করতে থাকে। পাওয়ার প্লেতে স্কোরবোর্ডে জমা করে এক উইকেটে ৬৫ রান। ১৬ বলে ২ চার ও ২ ছক্কায় ২৫ রান করে রাজবর্ধন হাঙ্গারগেকরের বলে দুবের হাতে ধরা পড়েন ঋদ্ধিমান।

৩৭ রানের ওপেনিং জুটি ভাঙার পর শুভমান গিলের সঙ্গে যোগ দেন গুজরাটের হয়ে ইমপ্যাক্ট খেলোয়াড় হিসেবে নামা সাই সুদর্শন। ফিল্ডিং করার সময় হাঁটুতে গুরুতর চোট পাওয়া কেন উইলিয়ামসনের বদলি হিসেবে নামেন। ক্রিজে এসেই মারেন বাউন্ডারি।

গিলের সঙ্গে ৫৩ রানের জুটি গড়েন সুদর্শন। ১৭ বলে ৩ চারে ২২ রান করার পর রাজবর্ধনের বলে ধোনির গ্লাভসবন্দি হন। অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়ার ব্যাট আজ হাসেনি, জাদেজার বলে বোল্ড হওয়ার আগে করেন ৮ রান।

দুর্দান্ত খেলতে থাকা গিলের উইকেট তুলে নেন ইমপ্যাক্ট খেলোয়াড় তুষার দেশপান্ডে। মিডউইকেটে ঋতুরাজের ক্যাচে পরিণত হওয়ার আগে খেলেন ৩৬ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় ৬৩ রানের ঝকঝকে ইনিংস। গিলকে ড্রেসিং রুমে ফিরিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তোলে চেন্নাই।

শেষ ৫ ওভারে গুজরাটের জয়ের জন্য দরকার ছিল ৪১ রান, হাতে ছিল ৬ উইকেট। ১৬তম ওভারে মিচেল স্যান্টনার ৭ রানের বেশি খরচ না করায় সমীকরণ দাঁড়ায় ২৪ বলে ৩৪ রান। পরের ওভারে দীপক চাহারের ওভারে আসে ৪ রান। গুজরাটের তখন দরকার ১৮ বলে ৩০ রান।

রাজবর্ধন ১৮তম ওভারে ডেথ ওভারে কার্যকরী প্রমাণিত হন। ৭ রান খরচায় তুলে নেন বিজয় শঙ্করের উইকেট। তাতে গুজরাট আরও চাপে পড়ে যায়। এ ওভারের পঞ্চম বলে আইপিএলের ইতিহাসে প্রথম ওয়াইড বলের জন্য ব্যাটারের রিভিউ চাওয়ার ঘটনা ঘটে। টিভি রিপ্লেতে রিভিউ খারিজের পরের বলেই স্যান্টনারের হাতে ধরা পড়েন ২৭ রান করা শঙ্কর।

শেষ ১২ বলে হোম টিমের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২৩ রান। বল হাতে নেন চাহার, ১৯ তম ওভারে আসে ১৫ রান। চতুর্থ বলে ছক্কা ও পঞ্চম বলে চার মেরে শেষের রোমাঞ্চ ছড়ান রশিদ খান।

গুজরাটের শেষ ওভারে দরকার ছিল ৮ রান। তুষারের প্রথম বল ওয়াইড হওয়ার পর রাহুল তেওয়াতিয়া মেরে বসেন ছক্কা। এরপর চার মেরে তেওয়াতিয়া হোম টিমের জয় নিশ্চিত করেন।

চেন্নাইয়ের পক্ষে রাজবর্ধন পান ৩ উইকেট। তুষার ও জাদেজা একটি করে উইকেট পকেটে পুরেন।

 

Exit mobile version