Site icon চ্যানেল আই অনলাইন

মোরসালিনের চোখ ধাঁধানো গোলে ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ল বাংলাদেশ

আক্রমণাত্মক ফুটবল উপহার দিয়ে দর্শকদের মন মাতিয়েছে লাল-সবুজের দল। বারবার আক্রমণে গিয়ে প্রতিপক্ষের রক্ষণে ধরিয়েছে কাঁপন। বারবার গোলের সুযোগ নষ্টের কারণে ধরা দেয়নি জয়। পিছিয়ে পড়েও শেখ মোরসালিনের চোখ ধাঁধানো গোলে লেবাননের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের দ্বিতীয় রাউন্ডের ‘আই’ গ্রুপের ম্যাচের ৫ মিনিটে কর্নার কিকে বল পান লেবাননের অধিনায়ক হাসান মাতৌক। তার নেয়া কিক পোস্টের পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়।

নবম মিনিটে বাংলাদেশ প্রথম সুযোগ পায়। শেখ মোরসালিনের লম্বা পাসে ডি বক্সের ভেতর বলের নাগালই পাননি ফয়সাল আহমেদ ফাহিম।

একের পর এক আক্রমণ গড়ে হাভিয়ের ক্যাবরেরার শিষ্যরা গোলের সম্ভাবনা তৈরি করতে থাকে। ২৪ মিনিটে কর্নার কিক থেকে উড়ে আসা বলে বিশ্বনাথের হেড গ্লাভসবন্দি করেন লেবাননের গোলরক্ষক মোস্তাফা মাতার। খানিক পর দারুণ এক আক্রমণে ডি বক্সে বল পান মোহাম্মাদ সোহেল রানা। লেবাননের এক ডিফেন্ডার শেষ মুহূর্তে তাকে ব্লক করেন।

ম্যাচের ৩৪ মিনিটে গোলের সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করে বাংলাদেশ। ডানপ্রান্তে থাকা ফাহিমের বাড়ানো বল পায়েই ছোঁয়াতে পারেননি মোরসালিন। গোলরক্ষককে একা পেয়েও এ ফরোয়ার্ডের মিসে স্বাগতিকরা লিড পায়নি।

জিহাদ আইউবের ৩৭ মিনিটে মারা দূরপাল্লার শট লক্ষ্যে থাকলে বিপদ হতে পারতো। মিতুল মারমা বলের নাগাল না পেলেও ডি বক্সের উপর দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ায় গোল হজম করেনি বাংলাদেশ। মিনিট পাঁচেক পর মোরসালিন গোলরক্ষককে একা পেলেও রেফারি বাজান অফসাইডের বাঁশি।

৪৪ মিনিটে আরেকটি সহজ গোলের সুযোগ জামাল ভূঁইয়ার দল হাতছাড়া করে। বিশ্বনাথের পাসে প্রথমে বল পান মোহাম্মাদ সোহেল রানা। তার কাছ থেকে ফাহিম বল রিসিভ করে পোস্টের মুখে থাকা মোরসালিনকে দেন। প্রতিপক্ষের গোলরক্ষককে একা পেয়েও মোরসালিন বল পোস্টের উপর দিয়ে মেরে বসেন।

খানিক পর পাল্টা আক্রমণে যায় লেবানন। মিতুল কর্নারের বিনিময়ে দলকে রক্ষা করায় গোলশুন্যভাবে প্রথমার্ধ শেষ হয়।

৪০ মিনিটের মাথায় পায়ের চোট পাওয়া মিতুল বিরতির পর আর খেলতে নামেননি। তার পরিবর্তে গোলপোস্টের সামনে আসেন মেহেদী হাসান শ্রাবণ।

খেলার ৪৮ মিনিটে মাতৌকের নেয়া ফ্রি কিকে ডি বক্সের ভেতর যায় বল। বাংলাদেশের বদলি গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ এগিয়ে এসে বল ফিস্ট করতে গিয়ে গড়বড় করে বসেন। কাসেম আল জেইনের হেড পোস্টের উপর দিয়ে যাওয়ার লেবানন এগিয়ে যায়নি।

খেলার ৫৩ মিনিটে এক কিশোরের ঘটানো কাণ্ডে কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকে। স্বাধীন ফিলিস্তিনের দাবিতে দেশটির পতাকা শরীরে জড়িয়ে কিশোরটি নিরাপত্তারক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে দৌড়ে মাঠে প্রবেশ করে। পরে তাকে টেনে মাঠ থেকে বের করা হয়।

পাল্টা আক্রমণ থেকে আবারও গোলের দারুণ সুযোগ পায় বাংলাদেশ। বিশ্বনাথের বাড়ানো বল ৫৯ মিনিটে আবারো জালে জড়াতে ব্যর্থ হন মোরসালিন।

অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াকে ৬১ মিনিটে বেঞ্চে বসানো হয়। মিডফিল্ডার রবিউল হাসানকে মাঠে নামান ক্যাবরেরা।

৬৮ মিনিট গোলরক্ষক শ্রাবণ বল লুফে নিতে ব্যর্থ হন। বল বিপদমুক্ত করতে পারেননি বিশ্বনাথ। পোস্ট ফাঁকা পেলে বল জালে জড়িয়ে লেবাননকে লিড পাইয়ে দেন বদলি খেলোয়াড় মাজেদ ওসমান।

৭০ মিনিটে ফাহিমকে বাজাভাবে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন জাহিদ । ৭১ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে বিশ্বনাথের হেড অল্পের জন্য জালের দেখা পাননি।

পিছিয়ে পড়া বাংলাদেশকে চোখ ধাঁধানো এক গোলে ম্যাচে ফেরান মোরসালিন। ডানপায়ের দূরপাল্লার শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করে ৭২ মিনিটে জাল কাঁপান এ ফরোয়ার্ড। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর মতো ‘সুই’ সেলেব্রেশন করেন। গোল উদযাপনের সময় গ্যালারির দর্শকদের কাছে ঘেঁষতে যাওয়াটা সীমা ছাড়ানো মনে হওয়ায় রেফারি তাকে হলুদ কার্ড দেখান।

মিনিট দুয়েক পর হতে পারতো সর্বনাশ। বিশ্বনাথের কিকে বল নিজেদের জালেই জড়িয়ে ফেলছিলেন। তৎপর থাকায় ঝাঁপিয়ে বল লুফে নেন শ্রাবণ। ৮৩ মিনিটে ফাহিমের জায়গায় মাঠে নামেন রফিকুল ইসলাম।

রফিকুলের ক্রসে বল পেয়ে ডি বক্সে থাকা মোরসালিন ৮৯ মিনিটে আবারো সহজ সুযোগ নষ্ট করেন। বাঁ পায়ে শট ঠিকমতো নিতে পারেননি।

৯০ মিনিটে হৃদয়ের জায়গায় নামেন মজিবুর রহমান জনি। ছয় মিনিট সময় যোগ হলেও তাতে আর কেউ জালের দেখা না পাওয়ায় দুদল ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে।

Exit mobile version