পাকিস্তানে অনাস্থা ভোটের নাটকীয়তার অবসান হলো। শেষ বল পর্যন্ত খেলার ঘোষণা দিলেও জিততে পারেননি ইমরান খান। দেশটির পার্লামেন্টে হওয়া অনাস্থা ভোটে ইমরানের বিরুদ্ধে পড়ল ১৭৪ ভোট। এর ফলে পতন হলো ইমরান সরকারের।
এতে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে উচ্ছাস প্রকাশ করেছে বিরোধীরা। ইতিমধ্যেই হেলিকপ্টারে করে ইসলামাবাদ ছেড়েছেন ইমরান খান।
এর আগে কয়েকদফা মুলতবির পর শনিবার মধ্যরাতে ইমরানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা ভোট শুরু হয় পাকিস্তান ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানতে ১২টার আগেই শুরু হয় ভোটাভুটি। তবে শুরু হয়েই চার মিনিটের জন্য স্থগিত করা হয় অধিবেশনের অনাস্থা ভোটের প্রক্রিয়া। চার মিনিটের জন্য অধিবেশন স্থগিত থাকার পর আবার শুরু হয় অনাস্থা ভোটের প্রক্রিয়া।
ভোটাভুটির আগেই ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ছেড়ে বেরিয়ে যান ক্ষমতাসীন তেহরিক-এ-ইনসাফ দলের সাংসদরা। এর কিছুক্ষণ পরেই শুরু হয় ভোটাভুটি। এতে ইমরানের বিরুদ্ধে পড়ে ১৭৪ ভোট।
অনাস্থা ভোটের আগে স্থানীয় সময় রাত ৯টায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান তার মন্ত্রিসভার সঙ্গে জরুরী বৈঠকে বসেন। সেসময় মন্ত্রীদের কাছে আইনি উপায় চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তাছাড়া অন্য কোনো উপায় আছে কিনা সে বিষয়টি নিয়েও খোঁজ খবর নেন তিনি।
গত ৩ মার্চ সংবিধানের ৫ নম্বর অনুচ্ছেদের সাথে সাংঘর্ষিক দাবি করে ইমরানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে দেন জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি। ডেপুটি স্পিকারের ওই সিদ্ধান্তের ঘণ্টাখানেকের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পরামর্শে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দিয়ে ৯০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচনের কথা জানান দেশটির প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি।
বিরোধীদলগুলো ডেপুটি স্পিকারের সেই সিদ্ধান্তকে অসাংবিধানিক মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি প্রধান বিচারপতি উমর আতা বন্দিয়াল বিষয়টির স্বতঃপ্রণোদিত নোটিশ দিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার সেই মামলার রায়ে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরির সেই সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করে পার্লামেন্ট পুনর্বহাল করেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ।
আর্থিক দুরবস্থা ও ভুল পররাষ্ট্রনীতির অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে বিরোধী দলগুলো। ৩৪২ সদস্যের জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে ইমরান খানকে ১৭২ জনের সমর্থন প্রয়োজন ছিল। তার দল পিটিআইয়ের সদস্য সংখ্যা ১৫৫। তবে দলের কয়েকজন সদস্য এবং জোট শরীকরা ইমরানের পক্ষ ত্যাগ করায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাতে হয় তাকে।