চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দশমবারের মতো ফাইনাল খেলতে চলেছে লিভারপুল। আগের নয় ফাইনালে অলরেডরা ছয়বার শিরোপা জিতেছে। শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় শিরোপার মঞ্চে স্তাদে দে ফ্রান্স স্টেডিয়ামে তাদের প্রতিপক্ষ রিয়াল মাদ্রিদ। যাদের সাথে ফাইনালে শেষ দেখায় হেরেছিল প্রিমিয়ার লিগের দলটি।
১৯৭৭, ১৯৭৮, ১৯৮১, ১৯৮৪, ২০০৫ এবং ২০১৯ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মুকুট পরেছিল লিভারপুল।
এক নজরে দেখে নেয়া যাক অলরেডদের খেলা আগের নয় ফাইনালের ইতিবৃত্ত-
১৯৭৬-৭৭ মৌসুম
দ্বিতীয় ইংলিশ ক্লাব হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জিতেছিল অলরেডরা। তাদের আগে কেবল চেলসি কীর্তিটি গড়তে পেরেছিল। জার্মান ক্লাব বরুশিয়া মনশেনগ্লাডবাখকে ৩-১ গোলে হারিয়েছিল ১৮৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত ক্লাবটি।
১৯৭৭-৭৮ মৌসুম
টানা দ্বিতীয়বার ফাইনালে উঠে শিরোপা অক্ষুণ্ণ রাখে লিভারপুল। লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে বেলজিয়ামের ক্লাব ব্রুগেকে তারা একমাত্র গোলে হারিয়েছিল।
১৯৮০-৮১ মৌসুম
শনিবার রাতের ফাইনালের আগে ১৯৮০-৮১ মৌসুমের সুখস্মৃতি অলরেড দলটি বারবার মনে করতে চাইবে। ৩১ বছর আগে স্তাদে দে ফ্রান্সেই হয়েছিল ফাইনাল। ইংলিশ লেফট ব্যাক অ্যালান কেনেডির ৮১ মিনিটে করা একমাত্র গোলে রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়ে শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছিল লিভারপুল।
১৯৮৩-৮৪ মৌসুম
টাইব্রেকারের রোমাঞ্চভরা ফাইনাল দেখেছিল রোম। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ের খেলা ১-১ গোলে অমীমাংসিত ছিল। পরে পেনাল্টি শ্যুট আউটে এএস রোমাকে ৪-২ গোলে হারায় অলরেড বাহিনী। নিজ দেশের ক্লাবের পরাজয়ের বেদনায় নীল হয় ইতালিয়ানরা।
১৯৮৪-৮৫ মৌসুম (হেইসেল ট্র্যাজেডি)
মিশেল প্লাতিনির পেনাল্টি কিকে আসা সাফল্যে লিভারপুলকে একমাত্র গোলে হারিয়ে সেবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল জুভেন্টাস। তবে ম্যাচের ফলাফলের জন্য নয়, ৩৯ সমর্থকের মর্মান্তিক মৃত্যুর কারণ হয়েছিল আলোচিত।
ব্রাসেলসের হেইসেল স্টেডিয়ামে সেদিন লিভারপুল সমর্থকদের একটি অংশ দাঙ্গা শুরু করে। জুভেন্টাস সমর্থকদের দিকে তেড়ে যায়। উপায় না দেখে জুভে সমর্থকেরা গ্যালারির দেয়ালের দিকে পেছাতে থাকে। ঘটে মহাবিপদ। তাদের ভারে দেয়াল ধসে পড়ে। মারা যান ৩৯ সমর্থক। আহত হন অনেকে। ঘটনার পর ইংলিশ ক্লাবগুলোকে ইউরোপীয় প্রতিযোগিতা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
২০০৪-০৫ মৌসুম (মিরাকল অব ইস্তাম্বুল)
২০ বছর পর আবারও ফাইনালে ওঠে লিভারপুল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ নামকরণের পর সেবারই প্রথম। ইস্তাম্বুলে হয়েছিল খেলা। ফুটবল ইতিহাসের পাতায় যেটি মিরাকল অব ইস্তাম্বুল নামেই বেশি পরিচিত। হবেইবা না কেনো, ৩-০ গোলে পিছিয়ে থেকেও তারা এসি মিলানের থেকে ট্রফি ছিনিয়ে ফিরেছিল বাড়ি!
প্রথম মিনিটেই গোল করেন সর্বকালের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার পাওলো মালদিনি। ৩৯ ও ৪৪ মিনিটে বল জালে জড়িয়ে ব্যবধান বাড়িয়ে নেন আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার হার্নান ক্রেসপো।
বিরতির পর ঝলসে ওঠে লিভারপুল। ৫৪ মিনিটে স্টিফেন জেরার্ড, ৫৬ মিনিটে ভ্লাদিমির স্মাইকের ও ৬০ মিনিটে জাবি আলোনসো লক্ষ্যভেদ করলে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৩-৩। পোলিশ গোলরক্ষক জার্জি দুদেকের বীরত্বে টাইব্রেকারে ৩-২ ব্যবধানে জেতে ইংলিশ জায়ান্টরা।
২০০৬-০৭ মৌসুম (এসি মিলানের প্রতিশোধ)
আবারও ফাইনালে মুখোমুখি হয় লিভারপুল-এসি মিলান। ইস্তাম্বুলে হারার প্রতিশোধ এথেন্সে মিলান ঠিকই নিতে পেরেছিল। ফিলিপ্পে ইনজাগির জোড়া গোলে ২-১ ব্যবধানে হারে অলরেডরা।
২০১৭-১৮ মৌসুম
লিভারপুলকে ৩-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ১৩তম শিরোপা ঘরে তুলেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। কিয়েভে হওয়া ম্যাচের ৫১ মিনিটে করিম বেনজেমার গোলে রিয়াল এগিয়ে যায়। চার মিনিট পর সাদিও মানের গোলে অলরেডরা সমতায় ফেরে। ৬৪ ও ৮৩ মিনিটে গোল করে ক্লপের দলকে আর ম্যাচেই ফিরতে দেননি গ্যারেথ বেল।
২০১৮-১৯ মৌসুম
মোহাম্মদ সালাহর স্পট কিকে এবং ডিভক অরিগির বাঁ-পায়ের শটে অল ইংলিশ ফাইনালে টটেনহ্যাম হটস্পারকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় লিভারপুল।