৩ জানুয়ারি থেকে শুটিং শুরু হতে যাওয়া বিগ বাজেটের ‘অপারেশন জ্যাকপট’ ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েও শেষ পর্যন্ত থাকছেন না নায়ক বাপ্পী চৌধুরী। ছবি সংশ্লিষ্ট কেউ মুখ না খুললেও বিষয়টি ‘ওপেন সিক্রেট’ যে, চুক্তি ও সাইনিং মানি নেয়ার পরে বাপ্পীকে বাদ দেয়া হয়েছে! তবে বাপ্পীর দাবি, তিনি নিজেই সরে গেছেন।
গুঞ্জন রয়েছে, কয়েকজন ‘ফ্যান মেইড’ আকারে পোস্টার বানিয়ে অনলাইনে ছেড়েছেন। সেগুলো সম্পর্কে বাপ্পী অবগত। যেখানে প্রযোজক কিংবা পরিচালকের নাম নেই। বাপ্পীর এসব কাজ ভালো ভাবে নেয়নি ‘অপারেশন জ্যাকপট’ সংশ্লিষ্টরা!
‘অপারেশন জ্যাকপট’ প্রসঙ্গে আগেই নাকি জানানো হয়েছিল, ছবিটি করার ব্যাপারে আগে থেকে কাউকে জানাতে পারবেন না বাপ্পী। এসব শর্ত না মানায় চুক্তির তিনদিন পরে বাপ্পীকে বাদ দেয়া হয়েছে। কিন্তু নিজের পেজ থেকে লাইভে এসে বাপ্পী জানান, তার সঙ্গে রীতিমত প্রতারণা করা হয়েছে।
প্রতারণার অভিযোগ তুলে বাপ্পী বলেন, আমাকে মৌখিকভাবে যা বলেছিল বিশ্বাস করেছিলাম। এ কারণে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলাম। পরে যখন স্ক্রিপ্ট পাই তখন মনে হয় কাজটি করা আমার মোটেও উচিত হবে না। এ কারণে সরে আসি। কিন্তু আমাকে বাদ দিয়েছে বলা হচ্ছে। এটা সম্পর্ণ ভুল তথ্য। যারা নিউজ করছেন তারা এভাবে ইয়োলো জার্নালিজম করবেন না। নিউজ করলে দুই পক্ষের সঙ্গে আলাপ করে করুন। একপাক্ষিক নিউজ ঠিক না।
দীর্ঘদিন যাবৎ সিনেমা করছেন না বাপ্পী। কয়েক বছরে তার সবগুলো ছবি মুখ থুবড়ে পড়েছে। উল্টো সেই সব ছবিতে বাপ্পীর অভিনীত বিভিন্ন ক্লিপস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রল ও মিম হচ্ছে। সর্বশেষ গত রোজার ঈদে তার অভিনীত ‘শত্রু’ ছবি মুক্তি পেলেও ব্যবসায়িক বিপর্যয় ঘটে।
বছর খানেক হলো বাপ্পী নতুন কোনো ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছে না। এমনকি তার অভিনীত প্রায় পাঁচটি ছবি মুক্তির অপেক্ষায় থাকলেও সেগুলোর মুক্তি অনিশ্চিত। এতে করে অনেকেই ধারণা করছেন, বাপ্পী ফিল্ম ক্যারিয়ার নিয়ে পুরোপুরি হতাশ! তবে বাপ্পীর দাবি, তিনি ভালো গল্প ও চরিত্রের আশায় আছেন।
বাপ্পী চৌধুরী বলেন, দরকার হলে আরও দেরি করবো কিন্তু ভালো ছবি ছাড়া করবো না। আমি অনেক ছবি ছেড়ে দিয়েছি। যদি আমি সিনেমাগুলো ছেড়ে না দিতাম অনেকেই কাজ পেত না। তার মানে এই না যে আমি নতুন ছবি পাচ্ছি না। আমি আসলে ভালো কাজের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছি এবং সময় নিচ্ছি। আমাকে অনেকেই ভালোবাসেন, আমি তাদের কোনো হতাশ করতে চাই না।
বাপ্পী তার লাইভে জানান, সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই তার পিছনে লেগেছে। তিনি বলেন, আমাকে ডাউন করলে ইন্ডাস্ট্রির লোকসান, ইন্ডাস্ট্রি একজন হিরো হারাবে। সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি আগাতে হলে বছরে দুটো ছবি হিট হলে চলবে না, বাণিজ্যিক ধাঁচের কমপক্ষে পাঁচ-সাতটি ছবি চলতে হবে। সুতরাং অযথা আমার পিছনে না লেগে ইন্ডাস্ট্রিকে নিয়ে ভাবুন। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের বাংলার সিনেমার মার্কেট একদিন হাজার কোটি টাকা হবে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে নির্মিত হতে যাওয়া সিনেমা ‘অপারেশন জ্যাকপট’। মুক্তিযুদ্ধের সময় অপারেশন জ্যাকপট নামের এক অভিযানে চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্র বন্দর, চাঁদপুর ও নারায়ণগঞ্জে একযোগে গেরিলা অপারেশন চালানো হয়েছিল। সেই অভিযানে পাকিস্তান ও অন্য আরও কয়েকটি দেশ থেকে অস্ত্র, খাদ্য ও তেল নিয়ে আসা ২৬টি জাহাজ ডুবিয়ে দিয়েছিল মুক্তিযোদ্ধারা। সেই ঘটনা নিয়ে বিশাল বাজেটে চলচ্চিত্র নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
যদিও বছর কয়েক আগে এই উদ্যোগ নিয়েছিলো নৌমন্ত্রণালয়। সেই সময় সিনেমাটি নির্মাণের কথা ছিলো দেশের গুণী নির্মাতা গিয়াসউদ্দিন সেলিমের। তবে নতুন উদ্যোগে নির্মিতব্য ‘অপারেশন জ্যাকপট’ নির্মাণ করতে যাচ্ছেন কলকাতার ‘পাগলু’ খ্যাত নির্মাতা রাজীব বিশ্বাস।