গোলরক্ষক ইয়ারজান বেগমের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে পেনাল্টি শ্যুটআউটে বাজিমাত করে বাংলাদেশ। সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে অপরাজিত থেকে শিরোপা জিতে নেয়। এরপর থেকে আলোচনার কেন্দ্রে অসচ্ছল পরিবার থেকে উঠে আসা ফুটবলকন্যা ইয়ারজান। এবার তার অপেক্ষা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার।
ইয়ারজানের জীবনযুদ্ধের কথা শুনে তার পরিবারকে নগদ অর্থ এবং খাদ্যসামগ্রী উপহার দিতে চলে যায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। গত মঙ্গলবার র্যাব-১৩’র পক্ষে উপহার তুলে দেয়া হয় সাফজয়ী তারকার পরিবারের হাতে।
বুধবার সকাল ১১টায় বাফুফের বাসে চড়ে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে এসেছিলেন শিরোপাজয়ী বীরকন্যারা, তাদের ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করে নেয়া হয়। দেয়া হয় সংবর্ধনা, উপহার। পরে বাংলাদেশের স্মরণীয় জয়ের তারকা চ্যানেল আই অনলাইনকে বিষয়টি নিয়ে জানিয়েছেন উচ্ছ্বসিত প্রতিক্রিয়া। হাসিমাখা মুখে সরলস্বরে বললেন, ‘কখনোই ভাবিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে কেউ যাবে। ওনারা আমার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে।’
শিরোপাজয়ী বাংলাদেশ দলকে পুরস্কৃত করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফুটবলারদের ডেকে সাক্ষাতের কথাও জানিয়ে রেখেছেন। পরিবারের অস্বচ্ছলতার বিষয়টি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীর কাছে কিছু চাইবেন কিনা- এমন প্রশ্নে লাজুক হাসির দেখা মেলে ইয়ারজানের। তার ভাষ্য, ‘উনি যেহেতু আমাদের সংবর্ধনার কথা বলেছেন, আগে ওইখানে গিয়ে দেখি চিন্তা-ভাবনাতে কী আসে। সংবর্ধনা নিয়ে আমরা সবাই ভীষণ খুশি, রোমাঞ্চিত বলা চলে।’
দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের খোপরাবান্দি গ্রামে ইয়ারজান বেগমের বাড়ি। প্রত্যন্ত অঞ্চলে বেড়ে ওঠা আর দশটা কিশোরীকে যেমন অনেক বাধাবিপত্তি পেরিয়ে খেলাধুলা করতে হয়, তাকেও পেরোতে হয়েছে তেমন বাধার প্রাচীর। দারিদ্র্যতা পিছু ছাড়েনি। পরিবারের থাকার সম্বল বলতে রয়েছে কেবল নড়বড়ে টিনের ঘর। জন্মের পর থেকে বাবাকে অসুস্থ দেখে এসেছেন। হাঁপানি রোগী হওয়ায় কাজকর্ম করতে পারেন না। মা অন্যের বাড়িতে কাজ করেন।
দারিদ্র্যতার কষাঘাতে জর্জরিত। সেসব পথ আটকাতে পারেনি। লাল-সবুজের বিজয় কেতন উড়িয়ে সাফের সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার জেতা ইয়ারজানই এখন আলোচনার মধ্যমণি। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের আকাশে অসীম সম্ভাবনাময় এক উদীয়মান তারকার নাম।