শেষ হলো স্মার্ট এডুকেশন ফেস্টিভ্যাল

একটি স্মার্ট শিক্ষা ফ্রেমওয়ার্ক তৈরির লক্ষ্য নিয়ে নানা আয়োজনে পর্দা নামলো ‘স্মার্ট এডুকেশন ফেস্টিভ্যালের’। বুধবার ৩১ মে ঢাকার সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে অনুষ্ঠানের সমাপনী ঘোষণা করা হয়।

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে স্মার্ট শিক্ষার কৌশল নির্ধারণে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর তিন দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল স্মার্ট শিক্ষা বিষয়ক উদ্ভাবন।

ফেস্টিভ্যালে ২০টি স্মার্ট শিক্ষা কার্যক্রম প্রদর্শন ও ১১টি সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এতে প্রাক শৈশবকালীন বিকাশ, মানসিক স্বাস্থ্য এবং শিশুদের বিকাশের জন্য খেলাভিত্তিক শিখন প্রক্রিয়া ‘প্লে-ল্যাব’ উপস্থাপন করে ব্র্যাক।

সোমবার ২৯ মে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি। উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে প্রয়োজন স্মার্ট সিটিজেন। স্মার্ট শিক্ষার মধ্য দিয়েই ভবিষ্যতে স্মার্ট সিটিজেন তৈরি হবে। স্মার্ট শিক্ষার বড় উপাদান হলো নতুন শিক্ষাক্রম। স্মার্ট শিক্ষার কৌশল নির্ধারণে এই এডুকেশন ফেস্টিভ্যাল আয়োজন করা হয়েছে। এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও বিশেষজ্ঞদের মতামত আমরা পাবো। এর ফলে আমরা আমাদের পরিকল্পনাকে সঠিকভাবে এগিয়ে নিতে পারব।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এমপি বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের পরবর্তী পদক্ষেপ হলো স্মার্ট বাংলাদেশ। স্মার্ট বাংলাদেশের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো স্মার্ট শিক্ষা। আমরা গতানুগতিকতা থেকে বেরিয়ে আসব। সেটাই হবে আমাদের মূল লক্ষ্য।’

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. কামাল হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান, মাউশির পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) প্রফেসর মোঃ শাহেদুল খবির চৌধুরী প্রমুখ।

তিনদিনব্যাপী এই ফেস্টিভ্যালে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট সংগঠন তাদের কর্মকাণ্ড প্রদর্শন করে।

ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব এডুকেশনাল ডেভেলপমেন্ট (ব্র্যাক আইইডি) এই আয়োজনে অংশ নেয়। অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণে ব্র্যাক আইইডি’র স্টলে প্রাক শৈশবকালীন বিকাশ, মানসিক স্বাস্থ্য এবং খেলার মাধ্যমে শিখন বিষয়ক বিভিন্ন সামগ্রী উপস্থাপন করা হয়। এখানে ছিল শিশুদের বিকাশের জন্য ব্র্যাকের মানসম্পন্ন, খেলাভিত্তিক প্লে-ল্যাব। শিশুদের জন্য আনন্দদায়ক করে তুলতে স্টলটিকে স্বপ্নের ভুবন, রঙের ভুবন, গল্পের ভুবন, আপন ভুবন ও বাইরের ভুবন– এই থিমে সাজানো হয়।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন ৩০ শে মে মঙ্গলবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর পরিচালিত, ‘স্মার্ট এডুকেশন ফর স্মার্ট বাংলাদেশ’; বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল পরিচালিত ‘কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স ইন হায়ার এডুকেশন ফর স্মার্ট বাংলাদেশ’; মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর পরিচালিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে মাদ্রাসা শিক্ষার ভূমিকা’; বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ড পরিচালিত ‘স্মার্ট টিভিইটি ফর স্মার্ট বাংলাদেশ’; জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড পরিচালিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে শিক্ষায় নতুন কারিকুলামের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারসহ নানা বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

ফেস্টিভ্যালের শেষ দিনেও ছিল নানা আয়োজন। এর মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বোর্ডর পক্ষ থেকে ‘স্মার্ট শিক্ষা বাস্তবায়নে স্মার্ট পরীক্ষা পদ্ধতি’; জাতীয় শিক্ষা ব্যাবস্থাপনা একডেমি (নায়েম) পরিচালিত ‘স্মার্ট টিচার ট্রেইনিং ফর স্মার্ট এডুকেশন’ এবং ব্র্যাক আইইডি’র পক্ষ থেকে আয়োজিত ‘নন-ফরমাল আর্লি চাইল্ডহুড ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক সেমিনার উল্লেখযোগ্য।

ব্র্যাক