সড়ক-মহাসড়কে নিরাপত্তা জোরদার জরুরি

দেশের সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনায় প্রাণহানি প্রতিনিয়ত ঘটেই চলেছে। এর ওপর এখন যেন ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দেখা দিচ্ছে সড়কের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি। গত কয়েকদিনে একাধিক ডাকাতি ও সঙ্ঘবদ্ধ ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটেছে।

চ্যানেল আইয়ের প্রতিবেদনে জানা যায়, কুষ্টিয়া থেকে নারায়ণগঞ্জগামী একটি চলন্ত বাসে সকল যাত্রীর কাছ থেকে সর্বস্ব লুট ও সঙ্ঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকে ভোর পর্যন্ত ওই বাসে ডাকাতির পাশাপাশি এক নারী যাত্রীকে সঙ্ঘবদ্ধ ধর্ষণ করে ডাকাত দল।

এরপর বুধবার ভোরে ডাকাতদলের সদস্যরা টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া এলাকায় বাসটি রাস্তার পাশে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যান। ধর্ষণের শিকার ওই নারী বুধবার বিকালে মধুপুর থানায় ধর্ষণ ও ডাকাতির মামলা করেন। এ ঘটনায় রাজা মিয়া নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে রিমান্ডে নিয়ে বাকি অপরাধীদের গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার আসামী টাঙ্গাইলের যাত্রীবাহী বাস ঝটিকা সার্ভিসের একজন চালক।

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ধর্ষণের শিকার ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে আসা বাসে ডাকাতদের দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার নারীর ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের প্রাথমিক আলামত মিলেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

এরমধ্যেই রোববার সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদনে জানা গেছে চলন্ত বাসে নারীকে ধর্ষণের খবর। এতে জানা যায়, গাজীপুরে চলন্ত বাস থেকে স্বামীকে ফেলে দিয়ে এক নারীকে সঙ্ঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। জেলা পুলিশ বলছে, শুক্রবার রাতের এই ঘটনায় স্বামীর করা মামলায় এ পর্যন্ত পাঁচজন পরিবহন শ্রমিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধর্ষণের শিকার নারী গাজীপুরের একটি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। তাকওয়া পরিবহন নামের একটি কোম্পানির বাসে এই ঘটনা ঘটেছে।

এসব ঘটনায় প্রতীয়মাণ যে, সড়কে চলাচল দিন দিন আরও বেশি অনিরাপদ হয়ে উঠছে। বিশেষ করে নারীদের জন্য। এটা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। দু’টি ঘটনায়ই যদিও পুলিশ প্রসাশন সরব হয়েছে, অপরাধীকে গ্রেপ্তার ও বাস জব্দের মতো প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছে। তবে সেগুলো ঘটনার পর। আমরা মনে করি, সড়কে নিরাপত্তা আরও বাড়ানো গেলে এমন অনাকাঙ্খিত ঘটনা অনেকটাই কমে আসবে। একইসাথে পরিবহন চালক ও শ্রমিকদের কাউন্সেলিং বাড়ানোর পাশাপাশি অপরাধীদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক আইনের আওতায় আনতে হবে।

এক্ষেত্রে পরিবহন মালিকদের আরও বেশি সচেতনতার দিকে মনোযোগী করা যেতে পারে। নাহলে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কেননা সড়ককে কোনভাবেই যাত্রীদের জন্য অনিরাপদ করে তোলা যাবে না। এজন্য যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে আমরা সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

সঙ্ঘবদ্ধ ধর্ষণসড়ক নিরাপত্তাসম্পাদকীয়