আকাশের সব তারাই নক্ষত্রে পরিণত হয় না। যেটি হয়, তার আলো আলোকিত করে বহু ক্রোশ দূর পর্যন্ত। তেমনি এক নক্ষত্র লিওনেল মেসি। অনেক ফুটবলারকে দীক্ষা দিলেও যে আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি কথা ভুলতে পারেন না পেপ গার্দিওলা। কেমন করেই বা ভুলবেন, মেসির মতো করে এতো গৌরব তো আর কেউ এনে দিতে পারেননি ম্যানসিটি কোচকে। তাইতো সুযোগ পেলেই প্রিয় শিষ্যের গল্প বলে নিজ দলের ফুটবলারদের সাহসী হওয়ার মন্ত্র শেখান সিটিজেন বস।
সম্প্রতি এমনই এক ভিডিও সামনে এসেছে গার্দিওলার। যেখানে ম্যানসিটি ফুটবলারদের কাছে মেসি বন্দনা করতে দেখা গেছে ইতিহাসের অন্যতম সফল এ কোচকে। সিটিতে আসার আগে মেসিকে তুরুপের তাস বানিয়েই তো তিনি সর্বজয়ী করে তুলেছিলেন বার্সাকে।
একসাথে, আবার চ্যাম্পিয়ন! নতুন মৌসুম শুরুর আগে সিটি ফুটবলারদের মাথায় এই লাইনটি ঢুকিয়ে দিতে চেষ্টা চালাচ্ছেন গার্দিওলা। ফুটবলারদের একসাথে টিম হয়ে ওঠার গল্প বলছেন দলের মিটিংগুলোতে। কারণ, আরও একটি মৌসুম শুরুর কাছাকাছি বর্তমান লিগ চ্যাম্পিয়নরা। এমন সময় নেটে ঘুরপাক খাচ্ছে গার্দিওলার সেই ভিডিও। যেখানে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ক্লাব ব্রুগের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে টিম মিটিংয়ে মেসির কথা বলে চিৎকার করে তিনি কৌশল বোঝাচ্ছিলেন সিটি শিষ্যদের।
‘তোমরা কি জানো কেন মেসি আমার জীবনে দেখা সেরা খেলোয়াড়? কারণ সে একজন প্রতিযোগী। আমরা যখন বল পাস করি, তখন একবার দেখে নেই। তোমরা যখন বল পাস করো, তখন আক্রমণে ছুটে যাও। তোমাদের গোল করতে হবে। মেসি বল পাস করার পর মেশিনের মতো ভেতরে ঢুকে পড়েন। সে তখন গোলের গন্ধ পায়! তোমাদেরও তাই করতে হবে, সেখানে পৌঁছাতে হবে।’
মেসি বন্দনার পরের ম্যাচে সিটি ফুটবলারদের উপর সেটির প্রভাবও লক্ষ্য করা গিয়েছিল। বেলজিয়ামের ক্লাব ব্রুগের বিপক্ষে সেদিন ৫-১ গোলে জয় পেয়েছিল গার্দিওলার দল। তবে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে হেরে আসর থেকে ছিটকে যেতে হয়েছিল তাদের। নতুন মৌসুমে প্রথম পছন্দ হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপার দিকে তাকিয়ে থাকছেন গার্দিওলা। সে কারণেই আগেভাগেই হয়ত শিষ্যদের সাহসী করতে পুরনো ভিডিও নতুন করে সামনে এনেছে সিটি।
মেসির সাথে গার্দিওলার সম্পর্কটা শুধু পুরনোই নয়, বেশ গভীরও। ২০০৮ সালে বার্সার দায়িত্ব নেয়ার পর মেসিতে মজে যান তিনি। ২০১২ সালে বার্সা ছাড়ার আগ পর্যন্ত গার্দিওলার প্রধান হাতিয়ার তো ছিলেন মেসিই। এ সময়ে বার্সার সাথে বহু শিরোপা জয়ের সাক্ষী হয়েছেন। তার অধীনে এ সময়ে একের পর এক গোল করে মেসি পৌঁছে যান কিংবদন্তির কাতারে। ২০০৯ থেকে ২০১২, টানা ৪ বার ব্যালন ডি’অর জয়ের স্বাদ পান, হয়ে ওঠেন সর্বকালের সেরাদের একজন। সুযোগ পেলেই সেই ম্যাজিক্যাল মেসি বন্দনায় মাতেন গার্দিওলা।