হেলস-বাটলার সাইক্লোন, ভারতকে উড়িয়ে ফাইনালে ইংল্যান্ড

শিরোপার প্রতিপক্ষ পাকিস্তান

ভারতের ছোড়া দেড়শ ছাড়ানো লক্ষ্য মামুলি বানিয়ে ফেলেছেন অ্যালেক্স হেলস। চার-ছক্কার ফুলঝুরি ছোটাতে ছাড় দেননি ভারতের ছয় বোলারের কাউকেই। যোগ্য সঙ্গী হয়ে দুর্দান্ত ছিলেন অধিনায়ক জশ বাটলারও। রোহিতদের কোনো সুযোগ না দিয়ে ১০ উইকেটের জয়ে ইংল্যান্ডকে তুলে নিয়েছেন ফাইনালে। শিরোপার মঞ্চে প্রতিপক্ষ পাকিস্তান।

অ্যাডিলেডে টস হেরে কোহলির মাইলফলক ছোঁয়ার পর পান্ডিয়ার ক্যামিও ফিফটিতে ১৬৮ রান আনে ভারত। জবাবে বাটলার-হেলসের তাণ্ডব চালানো দুই ফিফটিতে ২৪ বল থাকতেই জয়ে নোঙর করে ইংল্যান্ড। মেলবোর্নে ১৩ তারিখ শিরোপার লড়াই।

বৃহস্পতিবার ১৬৯ রানের জবাবে ভারতের কোনো বোলারকে সামান্য সুযোগও দেননি ইংলিশ ওপেনারদ্বয়। পাওয়ার প্লেতে বাটলার-হেলস তুলে নিয়েছেন ৬৩ রান। শেষ পর্যন্ত ভারতের বিপক্ষেই গড়া পাকিস্তানের দুই ওপেনার বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের ওপেনিং জুটির রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন।

টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপে ওপেনিংয়ে সর্বোচ্চ ১৭০ রানের জুটি গড়ার দিনে দুইশ ছুঁইছুঁই স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করেছেন হেলস। পুরো টুর্নামেন্টে একটি মাত্র ফিফটি পাওয়া ডানহাতি সেমিতে খেলেছেন ৮৬ রানের ক্যামিও। ৪৭ বলের অপরাজিত ম্যাচসেরা ইনিংসে ৪ চারের সঙ্গে ছিল ৭ ছক্কার মার। অধিনায়ক বাটলারও কম যাননি। ইংলিশদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ টি-টুয়েন্টি জুটি গড়ে ফাইনালে তুলে ফিরেছেন।

পনেরতম ওভারের শেষ বলে সামিকে ছক্কায় উড়িয়ে বাধভাঙা উদযাপনে মাতেন ইংলিশ অধিনায়ক। ৪৯ বলের অপরাজিত ইনিংস সাজান ৯ চার ও ৩ ছক্কায়। ১৬৩.২৬ স্ট্রাইক রেটে খেলেছেন ৮০ রানের ইনিংস।

বাটলার-হেলসে পাত্তা না পাওয়ার দিনে সবচেয়ে খরুচে ছিল ভূবনেশ্বর কুমার। ডানহাতি পেসার ২ ওভারে খরচ করেছেন ২৫ রান। ৪ ওভারে ৩০ রান দিয়েছেন অক্ষর প্যাটেল। ওভার প্রতি ১৩ করে রান দেয়া সামি দিয়েছেন ৩৯ রান।

এর আগে ভালো শুরু আনতে পারেননি রাহুল-রোহিত। বড় ম্যাচে ব্যাট হাতে প্রশ্নবিদ্ধ রাহুল এদিনও ব্যর্থ। ফেরার আগে ৫ বলে করে যান ৫ রান। নামের সুবিচার করতে পারেননি রোহিত শর্মাও। মার্ক উডের বদলি পেসার জর্ডানের প্রথম শিকার হয়ে ফেরেন, একবার জীবন পেয়েও আনতে পারেন সবে বলে ২৭ রান।

চতুর্থ উইকেটে সূর্যকুমারকে দ্রুত ফিরিয়ে দেন আদিল রশিদ। লেগ স্পিনে দুর্বল নতুন ৩৬০ ডিগ্রিকে কাবু করে সফল হয়েছে বাটলারের দল। বারোতম ওভারে মঈনকে ক্যাচ দেয়ার আগে টি-টুয়েন্টির এক নম্বর ব্যাটার যোগ করে যান ১৪ রান। পরের জুটিতে পান্ডিয়াকে নিয়ে ৬১ রান আনেন কোহলি।

ওভারপ্রতি প্রায় ১২ রান এনে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়া জুটি হতে পারত এটি। দলীয় ১৩৬ রানে ফিফটি করে ফেরেন কোহলি। টি-টুয়েন্টিতে প্রথম ব্যাটার হিসেবে ছুঁয়েছেন চার হাজার রানের মাইলফলক। ফেরার আগে ৪০ বলে চারটি চার ও এক ছক্কায় খেলেছেন ৫০ রানের ইনিংস।

শেষ ৫ ওভারে ব্যাট করতে আসা পান্ডিয়া পূরণ করেছেন টপ অর্ডারের ঘাটতি। মারমুখী ডানহাতি ব্যাটার শেষ বলে হিট উইকেট আউট হওয়ার আগে ৪ চার ও ৫ ছক্কায় করে যান দুর্দান্ত ফিফটি। সংগ্রহ দেড়শ ছাড়িয়ে দিতে ৩৩ বলে খেলেছেন ৬৩ রানের ক্যামিও। ব্যাট চালিয়েছেন দুইশ ছুঁইছুঁই স্ট্রাইকে রেটে। ইংলিশ বোলারদের শেষ ৫ ওভারে ৬৩ রান তুলে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য আনেন পান্ডিয়া-পান্ট। ৬ বলে ৪ রান করে রান আউট হয়ে ফেরেন পান্ট।

ইংলিশদের দুর্দান্ত শুরু এনে দেয়া ক্রিস ওকস ৩ ওভারে ২৪ রান খরচ করেছেন, ফিরিয়েছেন রাহুলকে। ৪ ওভারে ২০ রান খরচ করে যাদবকে ফিরিয়েছেন রশিদ। ৪৩ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট নেন জর্ডান। ইংলিশদের হয়ে খরুচে ছিলেন স্যাম কারেনও। ৪ ওভারে তিনি ৪২ রান দিয়েও পাননি উইকেটের দেখা।

অ্যাডিলেডটি-টুয়েন্টি ইংল্যান্ডটি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২২টি-টুয়েন্টি ভারতবাটলাররশিদসেমিফাইনালহেলস