নির্ধারিত সময়ের খেলা ছিল অমীমাংসিত। ফলাফল নির্ধারণে অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় ম্যাচ। তাতেও মেলেনি ফল। শেষ পর্যন্ত লড়াই যায় টাইব্রেকারে। স্পেনিয়ার্ডদের প্রথম তিন শটের একটি লাগে পোস্টে, মরক্কোর গোলরক্ষক বোনো ঠেকিয়ে দেন দুটি, বনে যান ম্যাচের নায়ক। স্পেনকে টাইব্রেকারে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে যায় আফ্রিকার দেশটি।
এরাতেই শেষ ষোলোয় মুখোমুখি হবে পর্তুগাল এবং সুইজারল্যান্ড। জয়ী দলটি শেষ আটে মরক্কোর বিপক্ষে খেলবে। ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় আল সুমামা স্টেডিয়ামে খেলা।
আফ্রিকার ইতিহাসে চতুর্থ দেশ হিসেবে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেল মরক্কো। ১৯৯০ সালে প্রথম এই কীর্তি গড়েছিল ক্যামেরুন। ২০০২ সালে সেনেগাল ও ২০১০ সালে ঘানা শেষ আটের টিকিট কেটেছিল।
সোমবার এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে নির্ধারিত সময়ের খেলা ছিল গোলশূন্য। অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও একই থাকে স্কোর। খেলার ১০৮ ও ১১৪ মিনিটে বড় দুটি সুযোগ মিসের খেসারত গোনে ওয়ালিদ রেগ্রাগুইয়ের দল। তারপর খেলা গড়ায় টাইব্রেকার। সেখানে বাজিমাত করেন বোনো।
মরক্কোর হয়ে প্রথম শট নিতে আসা আবদেলহামিদ সাবিরি জালে জড়িয়ে দেন বল। স্পেনের প্রথম শটটি বারপোস্টে লেগে ফিরে আসে, ব্যর্থ হন পাবলো সারাবিয়া। দ্বিতীয় শটে মরক্কোর হয়ে বাজিমাত করেন হাকিম জিয়েচ। সেখানে বোনো ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দেন কার্লোস সোলেরের শট।
তৃতীয় শটে গোল দিতে ব্যর্থ হন মরক্কোর বদর বেনুন ও স্পেনিয়ার্ডদের অধিনায়ক সার্জিও বুসকেটস। চতুর্থ শটে বল জালে জড়িয়ে ইতিহাস গড়ার আনন্দে মাতেন আশরাফ হাকিমি। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠল তার দেশ।
দোহায় যদিও প্রথমার্ধে বল দখলে আধিপত্য ছিল স্পেনেরই। তবে আক্রমণে মরক্কো বেশ কয়েকটি সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি। সুযোগ হাতছাড়া আর লুইস এনরিকের শিষ্যদের আক্রমণ ঠেকিয়ে গোলশূন্য থেকে বিরতিতে যায় দুদল।
ম্যাচের ১১ মিনিটে ফ্রি-কিক পেয়েছিল মরক্কো। আশরাফ হাকিমির শট পোস্টের সামান্য উপর দিয়ে যায়। ২৭তম মিনিটে জর্ডি আলবার ক্রস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দূরহকোণ থেকে পাশের জালে বল মারেন আসেনসিও। দুই মিনিট আগে তাদের আরও একটি ভালো সুযোগ ছিল, কিন্তু অফসাইডের বাঁশি বেজে যায়।
পরে ৫৫ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে ওলমোর সোজাসুজি শট ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক ইয়াসিন বোন। ৮০ মিনিটে মোরাতার আক্রমণও ভেস্তে যায় মরক্কোর রক্ষণে। দ্বিতীয়ার্ধে বেশ কয়েকটি সুযোগ আনে মরক্কো। নির্দিষ্ট সময়ের খেলার ফল গোলশূন্য থাকে সেসবের ফসল তুলতে না পারায়।
অতিরিক্ত সময়ে খেলার ৯৬ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত স্পেন। কিন্তু মোরাতা বড় সুযোগ হাতছাড়া করেন। উইলিয়ামসের মাপা ক্রসে আশ্চর্যজনকভাবে সংযোগ ঘটাতে ব্যর্থ হন।
ম্যাচের ১০৪ মিনিটে বড় সুযোগ হারিয়ে বসেন চেদিরা। গোলের একেবারে সামনে দাঁড়িয়েও ঠিক করে শটটাই নিতে পারেননি মরক্কোর তারকা। সিমনের পায়ে প্রতিহত হয় শট।
পরে ১১৬ মিনিটেও এমন একটি সুযোগ এসেছিল মরক্কোর সামনে। তারা কাজে লাগাতে পারেনি। অতিরিক্ত সময়ের খেলা শেষ হলে টাইব্রেকারে নায়ক বনে যান বোনো। স্পেনের নেয়া প্রথম শটটি বারে লেগে ফিরলে পরের দুটি প্রতিহত করে দেন। আশরাফ হাকিমি চতুর্থ শটে গোল করলে প্রয়োজন পড়েনি স্পেনের পঞ্চম শটের।