পুঁজি কম হলেও দারুণ বোলিংয়ে বারবার ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। নিয়মিত বিরতিতে তুলে নেয় উইকেটও। কিন্তু ডেভিড মালানকে আউট করা যায়নি। তিন নম্বরে নামা বাঁহাতি একাই টেনেছেন ইংল্যান্ডকে। ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরির স্বাদ নেয়ার পাশাপাশি দলকে এনে দিয়েছেন দুর্দান্ত এক জয়।
মিরপুরে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে ৩ উইকেটে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। ২১০ রানের লক্ষ্যে সফরকারীরা পৌঁছে যায় ৮ বল হাতে রেখে। শুক্রবার মিরপুরেই দ্বিতীয় ওয়ানডে।
রানতাড়ায় পুরো দলকে বেশ ভুগতে হলেও মালান ছিলেন একদমই আলাদা। ৩৫ বছর বয়সী টপঅর্ডার ব্যাটার অপরাজিত থাকেন ১১৪ রানে। ১৪৫ বলের ইনিংসে মারেন ৮টি চার, ৪টি ছক্কা।
চার নম্বর সেঞ্চুরি তুলে নেন ১৩৪ বলে। তিন অঙ্কে পৌঁছান চার মেরে। ইংল্যান্ড নয়, মালানের কাছে হেরেছে বাংলাদেশ, এ কথাও বাড়াবাড়ি হবে না। শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের মন্থর উইকেটে যেখানে স্থানীয়দেরও ধুঁকতে হয়েছে সেখানে মালান ছিলেন পুরোপুরি সাবলীল ও প্রতিরোধ্য।
দিবা-রাত্রির ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করে ৪৭.২ ওভারে ২০৯ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। জবাব দিতে নেমে ৬৫ রানে ৪ উইকেট হারায় সফরকারীরা। জাগে জয়ের আশা। আর কোনো উইকেট না হারিয়েই একশর গণ্ডি পাড়ি দেয় ইংলিশরা।
১৬১ রানে প্রতিপক্ষের ৭ উইকেট ফেলে আবারও ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। তবে মালানকে দারুণ সঙ্গ দেন আদিল রশিদ (১৭*)। ৫০ রানের অবিচ্ছিন্ন অষ্টম উইকেট জুটি তাদের নিয়ে যায় জয়েরবন্দরে।
উইল জ্যাকস ২৬, মঈন আলি ১৪, ফিল সল্ট করেন ১২ রান। বাংলাদেশের স্পিনার তাইজুল ইসলাম তিনটি, মেহেদী হাসান মিরাজ নেন দুটি উইকেট। সাকিব আল হাসান ও তাসকিন আহমেদ নেন একটি করে উইকেট।
প্রথম ওভারেই বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দিয়েছিলেন সাকিব। বাঁহাতি স্পিনে জেসন রয়কে (৪) ফেরান অধিনায়ক তামিমের ক্যাচ বানিয়ে।
ব্যাটিং বেছে নিয়ে ভালো শুরু করা বাংলাদেশ অনায়াসেই আড়াইশ রান করতে পারত। ৩৪.১ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে দেড়শ পেরিয়ে যাওয়া দলের জন্য তা কঠিন কিছু ছিল না। সেটি অনেকদূরের পথ হয়ে যায় ২৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বসলে। শেষে তাসকিন আহমেদ ও তাইজুল ইসলাম লড়াই করতে না পারলে দুইশর মুখও দেখা হতো না!
মিরপুরে ১৬ বল আগেই বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় ২০৯ রানে। ১৮২/৮ থেকে তাসকিন ১৪ ও তাইজুল ১০ রান করলে ভদ্রস্থ চেহারা পায় টাইগারদের স্কোর।
বিপিএলে সর্বোচ্চ রান করা নাজমুল হোসেন শান্ত ওয়ানডেতে ফিরেই পান ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি। আগের ১৫ ম্যাচে ২১০ রান করেছিলেন, সর্বোচ্চ ছিল ৩৮।
শান্ত অনেকটা সময় ক্রিজে কাটান। পঞ্চম ওভারে ব্যাট করতে নেমে আউট হন ৩৬তম ওভারে। ৮২ বলে ৬ চারে করেন ৫৮ রান। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৩১ রান করেন ৪৮ বলে। পঞ্চম উইকেটে শান্তর সঙ্গে তার ৫৩ রানের জুটি বাংলাদেশ ইনিংসের সেরা।
থিতু হয়ে আউট হয়েছেন তামিম ইকবাল (২৩) ও মুশফিকুর রহিম (১৬)। আর কেউ ছুঁতে পারেননি দুই অঙ্ক। সবারই আউট হওয়ার ধরণ ছিল দৃষ্টিকটু। মি. এক্সট্রা থেকে আসে ২৬ রান।
পেসের পর ইংলিশ স্পিনেও ধুঁকেছে বাংলাদেশ। জফরা আর্চার, মার্ক উড, আদিল রশিদ, মঈন আলি নেন দুটি করে উইকেট। ক্রিস ওকস ও উইল জ্যাকস একটি করে উইকেট নেন। প্রথম ম্যাচে ছয় বোলার ব্যবহার করেন জস বাটলার।