১৩৬ রানে নেই ৯ উইকেট। লক্ষ্য থেকে ৫১ রানের দূরত্ব। মিরপুরের মন্থর উইকেটে তা অসম্ভব ভেবেই হয়ত অনেক দর্শক স্টেডিয়াম ছেড়ে যাচ্ছিলেন। ফাঁকা হতে থাকা গ্যালারিতে অবিশ্বাসের ছায়া সরিয়ে নতুন ইতিহাস লিখেছে বাংলাদেশ। জয়ের নায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ সংবাদ সম্মেলনে জানালেন, ভারতকে হারানো এটি নতুন শুরু।
ভারতের বিপক্ষে জয়ের খুব কাছে গিয়ে হারের করুণ গল্প অনেকবারই লেখা হয়েছে অতীতে। এবারও সেরকম কিছুরই শঙ্কা জেগেছিল। লোকেশ রাহুল যদি মিরাজের আকাশে তোলা ক্যাচটা গ্লাভসবন্দি করতে পারতেন, আরেকটি বিষাদ মাখা রাতই অপেক্ষা করত বাংলাদেশের।
মোস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে মিরাজ শেষ পর্যন্ত পৌঁছেছেন জয়ের বন্দরে। ৭ বছর পর ওয়ানডেতে ভারতকে হারানোর স্বাদ পেল বাংলাদেশ। বন্ধু, সতীর্থ মোস্তাফিজের দেয়া বার্তায় সাহস সঞ্চার করে বাউন্ডারির দিকে ঝুঁকেছেন মিরাজ। ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে সে গল্প বিস্তরভাবেই বললেন জয়ের নায়ক।
‘এমন একটা ম্যাচ জেতা আমাদের জন্য দরকার ছিল। আমরা বারবার হারছিলাম। একদম শেষে গিয়ে আমরা অনেক ম্যাচ হেরেছি। কিন্তু আজকে আমরা ম্যাচটা জিততে পেরেছি এজন্য খুবই ভালো লাগছে।’
‘মোস্তাফিজ আমার খুব ভালো বন্ধু এবং ও খুব ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। একটা জিনিস আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে যে, ও খুব আত্মবিশ্বাসী ছিল। আমাকে একটা কথা বারবার বলছিল, আমাকে নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই। আমি ঠেকিয়ে দিচ্ছি বল, মানে আউট হবো না। যদি গায়ের ওপর বল লাগে সমস্যা নেই, কিন্তু আউট হবো না। ওর এই বিশ্বাস দেখে আমার খুব ভালো লেগেছে এবং আমার আত্মবিশ্বাসটা বেড়েছে ওর আত্মবিশ্বাস দেখে।’‘প্রথমে যখন ৫০ রানের মতো লাগতো, আমি ঝুঁকি নিয়েছি, লেগেছে। যখন ১৪ রান লাগতো বা ১০ রান দরকার, তখন একটু বেশি চিন্তিত ছিলাম। এত কাছে এসে যদি হেরে যাই, এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে আমাদের সঙ্গে। কিন্তু মোস্তাফিজ আমাকে সাহস দিয়েছে, এটা খুব ভালো লেগেছে। ও একটা কথা বলছিল বারবার যে, এখন তাড়াহুড়ো করার কিছু নেই, ৬ মারার দরকার নেই। নিচে নিচে গ্যাপে খেললে রান পাবো। আমিও ওইভাবেই চিন্তা করেছি। আমার গেমপ্ল্যান নিয়ে অনেক বেশি পরিষ্কার ছিলাম যে, আমি কী করব। সেটি খুব ভালো হয়েছে।’
‘ও(মোস্তাফিজ) আমাকে শুধু একটা কথা বলছিল, সাহস দিচ্ছিল, শুধু বলছিল আমি ওকে নিয়ে যেন টেনশন না করি। আমি ঠেকিয়ে দিচ্ছি বল, আউট হবো না। গেমপ্ল্যান আমি সাজিয়েছি। কোন বোলারকে রিস্ক নিবো, কাকে মারব, কোন দিকে মারব, নিজে নিজে প্ল্যান করেছি। আমি সব চালাইনি। রিচে যা পেয়েছি তাতে অ্যাটাক করেছি। সব বলে চালাতাম তাহলে কিন্তু আউট হওয়ার ব্যাপার থাকত। আমি দুটি বল উপরে উঠিয়ে দিয়েছি। চান্সও দিয়েছি। ওরা কিন্তু চান্স নিতে পারেনি।’ বলেন মিরাজ।