আর্জেন্টিনার ঢাকায় আসার সম্ভাবনার দুয়ারে ‘তালা’

বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনাকে আসছে জুনে বাংলাদেশে আনার চেষ্টার কথা সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। গত ১৮ জানুয়ারি প্রেস ব্রিফিং করে বিস্তারিত জানানোর বিজ্ঞপ্তিও পাঠিয়েছিল ফেডারেশন। পরে অবশ্য ব্রিফিং বাতিলের খাতায় ঠেলে দুঃখপ্রকাশ করে। শেষ খবর, আলবিসেলেস্তেদের ঢাকায় আনার কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রয়েছে।

ব্রিফিং বাতিলের পর আরেক বিজ্ঞপ্তিতে বাফুফে জানায়, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবহিত করা হবে। আর্জেন্টিনাকে ফিফা উইন্ডোতে আনার জন্য কার্যক্রম পূর্ণাঙ্গরূপে চলমান রয়েছে। যদিও আর্জেন্টিনার ফুটবল ফেডারেশন আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানায়নি। তবে চ্যানেল আই অনলাইনকে বাফুফের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, মেসিদের আসার সম্ভাবনা শেষ না হলেও তাদের আগমন কার্যক্রমের দুয়ারে পড়েছে তালা।

মেসিদের আসার খবরে এদেশের আর্জেন্টাইন সমর্থকদের মন নড়েচড়ে বসেছিল! গত ৯ জুন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন যখন বলেছিলেন, ‘আর্জেন্টিনাকে আনার পরিকল্পনা চলছে। গতবার যখন এসেছিল তখন তিন মিলিয়ন ডলারের মতো খরচ হয়েছিল। এবার ছয় থেকে সাত মিলিয়ন ডলার খরচ হতে পারে।’

অবশ্য খরচের পরিমাণ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ১৯২তম স্থানে থাকা বাংলাদেশের ফুটবলের উন্নতিতে মেসিদের সফর আদৌ কোনো প্রভাব ফেলবে কিনা, এমন আলোচনাও ছিল সমালোচনাকারীদের। সাম্প্রতিক ডলার সঙ্কটকে সামনে এনেছেন অনেকে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেকদিন ধরেই সবধরনের অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানোর নির্দেশ দিচ্ছেন জোরালভাবে। গত মঙ্গলবারও জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে একই নির্দেশ দিয়েছেন। ডলার সঙ্কট এড়াতে ‘ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেল’ খোলার কথা গত ডিসেম্বরে জানায় বাংলাদেশ সরকার। দেশে ডলারের এমন পরিস্থিতিতে আর্জেন্টিনাকে আনা কতটা যুক্তিসঙ্গত- সেই প্রশ্ন ডালপালা মেলছিল।

লিওনেল স্কালোনির বিশ্বজয়ী দলের বাংলাদেশে এসে ম্যাচ খেলার পথে রয়েছে আরেকটি অন্তরায়ও। দুবছর আগে প্রায় ৯৮ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ রেখে শুরু হয়েছিল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজ। এবছরের জুনে কাজ শেষের কথা থাকলেও বাজেট স্বল্পতায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সহকারী পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) সুকুমার সাহা চ্যানেল আই অনলাইনকে আগেই বলেছেন, ‘নির্ধারিত সময়ের ভেতর কোনভাবেই স্টেডিয়াম সংস্কার কাজ শেষ করা সম্ভব নয়। বরাদ্দকৃত বাজেটের ভেতর ২০২১-২২ অর্থবছরে ২৪ কোটি টাকা ছাড় দেয়া হয়েছিল। চলতি অর্থবছরে ১০ কোটি টাকা দেয়ার কথা রয়েছে। এরমধ্যে সাড়ে ৪ কোটি টাকা পাওয়ার অপেক্ষা। অর্থাৎ, ৩৪ কোটি টাকায় পুরো কাজ শেষ করা যাবে না।’

৯৮ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও এই পরিমাণ অর্থে সংস্কার কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় বলেও জানিয়েছেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সহকারী পরিচালক। তার মতে, ‘বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতি এবং টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বেড়ে যাওয়াতে বাজেট বাড়াতে হবে। সবমিলিয়ে সংস্কার কাজে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে।’

বাংলাদেশে একবারই এসেছিল আর্জেন্টিনা, ২০১১ সালে। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে নাইজেরিয়াকে ৩-১ গোলে হারিয়েছিল লিওনেল মেসির দল। তাতে দর্শকদের উন্মাদনার পারদ চড়েছিল। বিপরীতে লাল-সবুজের দলের খেলায় উন্নতি যেন সুদূরপরাহত বিষয়ই হয়ে আছে।

বিজ্ঞাপন

আর্জেন্টিনাঢাকাবাফুফেবাংলাদেশমেসিলিড স্পোর্টস