কিংবদন্তি ফুটবলার পেলে আগে থেকেই ক্যান্সারের সঙ্গে লড়ছেন। শরীর ফুলে যাওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গণমাধ্যমেগুলোর প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, কিংবদন্তি হৃদরোগ সমস্যায় ভুগছেন। এবার জানা গেল, ব্রাজিলিয়ান গ্রেট করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেজন্যই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
৮২ বর্ষী পেলের হৃদস্পন্দন স্বাভাবিকের চেয়ে কম ছিল। তাকে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের জন্য গত মঙ্গলবার আলবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বর্তমানে তার অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।
গত ১৭ নভেম্বর পেলে কোভিড-১৯ টেস্ট করিয়েছিলেন এবং তাতে ফলাফল পজিটিভ আসে। ব্যথা এবং জ্বর নিয়ন্ত্রণের জন্য তাকে ওষুধ দেয়া হয়েছিল।
এর আগে সাও পাওলোর উপকূলে গুয়ারুজায় নিজ বাড়িতে থেকেই পেলের ক্যান্সারের চিকিৎসা চলছিল। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগের দিনগুলোতে ফুটবল কিংবদন্তির শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল। গত বুধবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর পর তার শরীরে ব্রঙ্কোপনিউমোনিয়া ধরা পড়ে।
একইসঙ্গে পেলের হৃদস্পন্দনে ব্র্যাডিয়ারিথমিয়া ধরা পড়ে। হৃদস্পন্দন স্বাভাবিকের চেয়ে অস্বাভাবিক কম থাকলে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় তাকে ব্র্যাডিয়ারিথমিয়া বলে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে,ক্যান্সারের জন্য কেমোথেরাপির পাশাপাশি সংক্রমণের চিকিৎসার জন্য তাকে অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হচ্ছে।
তবে ব্রাজিলের গণমাধ্যমে খবরে জানানো হয়েছিল, পেলের শরীরে কেমোথেরাপিও আর কাজ করছে না। চিকিৎসকরা কেমো বন্ধ করে দিয়েছেন। কিংবদন্তি ফুটবলারকে সুস্থ করে তোলার জন্য আর কোনো চিকিৎসাও অবশিষ্ট নেই। তাকে বর্তমানে প্যালিয়েটিভ কেয়ার (palliative care) ইউনিটে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। সেখানে তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। যেসব রোগীর শরীর দরকারি চিকিৎসায় আর সাড়া দেয় না, তাদের জীবনের শেষ প্রান্তের কষ্ট কমানোর চূড়ান্ত চেষ্টা প্যালিয়েটিভ কেয়ার।
এমতাবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কিংবদন্তি ফুটবলার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া বার্তায় ভক্তদের নিজের শারীরিক অবস্থা নিয়ে অবশ্য আশ্বস্ত করেছেন।
ইনস্টাগ্রামে দেয়া পোস্টে পেলে লিখেছিলেন, ‘বন্ধুরা, আমি চাই সবাই শান্ত এবং ইতিবাচক থাকুক। আমি শক্ত আছি এবং যথেষ্ট আশাবাদী। আমি যথারীতি নিয়মিত চিকিৎসার ভেতরেই আছি। সম্পূর্ণ মেডিকেল এবং নার্সিং টিম যেভাবে আমার যত্ন নিচ্ছেন, সেজন্য আমি তাদের ধন্যবাদ জানাতে চাই।’
‘সৃষ্টিকর্তার উপর আমার অগাধ বিশ্বাস আছে। সারা বিশ্ব থেকে আপনাদের কাছ থেকে পাওয়া প্রতিটি ভালোবাসার বার্তা আমাকে শক্তিতে ভরপুর রাখে। বিশ্বকাপে ব্রাজিলের খেলাও দেখছি। সব কিছুর জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ।’
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ফুটবল মহাতারকার শরীর থেকে একটি টিউমার অপসারণ করা হয়েছিল। এরপর থেকে তিনি নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে আসা-যাওয়ার মাঝেই ছিলেন। সেসময় থেকে তার কেমোথেরাপিও চলছে।
পেলে ব্রাজিলের তিন বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য। জাতীয় দলের হয়ে ৯২ ম্যাচে সর্বাধিক ৭৭ গোল তার, রেকর্ডটি এখনো অক্ষত আছে। বিশ্বকাপে তার গোল রয়েছে এক ডজন।