আজ ২০ এপ্রিল, ৬ষ্ঠ বর্ষে পদার্পণ করলো চ্যানেল আই অনলাইন। করোনাভাইরাসের কারণে এবার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে থাকছে না কোনো আনুষ্ঠানিকতা। বরং মানুষের তথ্য চাহিদা মেটাতে বিশেষ এ সময়ে আরো বেশি সত্য উন্মোচনকেই বার্ষিকীর উদযাপন হিসেবে দেখছেন চ্যানেল আই অনলাইন।
বিশেষ এদিনে চ্যানেল আই এবং চ্যানেল আই অনলাইনের দর্শক, পাঠক, শুভানুধ্যায়ী, বিজ্ঞাপনদাতা ও ক্যাবল অপারেটরসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।
২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে চ্যানেল আই অনলাইন। করোনাভাইরাসের মহামারী পরিস্থিতিতে ষষ্ঠ বর্ষে পদার্পণে দেশের শীর্ষ এ অনলাইন মাধ্যমটি উদযাপন করছে ‘বাড়িতে থাকি সব সময়, সঙ্গে চ্যানেল আই অনলাইন’ স্লোগানে।
চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ বলেন: আমরা সবাই কঠিন এক সময় অতিক্রম করছি। করোনাভাইরাস নামে অদৃশ্য এক ঘাতক পুরো পৃথিবীকে গ্রাস করে নিচ্ছে, যেখান থেকে আমাদের রক্ষার একমাত্র উপায় নিজেরা সচেতন থাকা, ঘরে থাকা এবং মহান আল্লাহ রাব্বুল আল আমিনের করুণা প্রার্থনা করা। প্রতিনিয়ত আমি এবং আমরা বাংলাদেশ এবং পুরো বিশ্বকে প্রার্থনায় রেখেছি। আপনারাও তাই রেখেছেন।
বাড়িতে থাকার সময়টিতে মানুষ যেহেতু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সক্রিয় তাই যাচাই-বাছাই যে আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ সে কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন উন্নয়ন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন: আজ আপনাদের সামনে উপস্থিত হওয়ার উপলক্ষ চ্যানেল আই অনলাইনের ৬ষ্ঠ বর্ষে পদার্পণ। ২০১৫ সালের এদিন আমরা বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলগুলোর প্রথমদিকের একটি হিসেবে আমাদের অনলাইন অপারেশন শুরু করেছিলাম। মানুষের আস্থার প্রতিদান হিসেবে টিভি হিসেবে চ্যানেল আই যেমন দেশ এবং বিশ্বে বাংলাভাষী মানুষের কাছে শীর্ষ টিভি চ্যানেল, তেমনি চ্যানেল আই অনলাইনও গত ৬ বছরে সবচেয়ে বিশ্বস্ত সংবাদমাধ্যম হিসেবে বাংলাদেশের অনলাইন দুনিয়ায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে। এজন্য আমি চ্যানেল আই এবং চ্যানেল আই অনলাইনের প্রতিটি কর্মীকে ধন্যবাদ এবং অভিনন্দন জানাই। একইসঙ্গে শুদ্ধ সাংবাদিকতার মাধ্যম হিসেবে চ্যানেল আই অনলাইনকে মানুষ যেভাবে গ্রহণ করেছে, সেজন্য আমি আমাদের পাঠক, দর্শক এবং পৃষ্ঠপোষকদেরও আরো একবার অভিনন্দন জানাই, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি।
সকলকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে শাইখ সিরাজ বলেন: চলুন সচেতন থেকে বুকে সাহস রেখে আমরা বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলা করি। মহান আল্লাহ নিশ্চয়ই আমাদের সহায় হবেন। হৃদয়ে মাটি ও মানুষকে রেখে আমাদের সম্মিলিত চেষ্টায় আমরা এ সময়টা পেরিয়ে আলোর একটা সকাল নিশ্চয়ই পাবো। সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করি।
গত পাঁচটি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী নানা আয়োজেন উদযাপিত হলেও এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। করোনাভাইরাসের কারণে চ্যানেল আই যতোবেশি সম্ভব কর্মীদের জন্য হোম অফিসের ব্যবস্থা করায় টেলিভিশন সীমিত কর্মী দিয়ে চললেও অনলাইন পুরোটাই পরিচালিত হচ্ছে ভার্চুয়াল অফিস থেকে। কঠিন চ্যালেঞ্জের এ সময়ে তাৎক্ষণিক সঠিক সংবাদ পরিবেশ করে যাচ্ছে চ্যানেল আই অনলাইন।
প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে চ্যানেল আই অনলাইনের সম্পাদক এবং চ্যানেল আই সংবাদের প্রধান বার্তা সম্পাদক জাহিদ নেওয়াজ খান বলেন: এ মুহূর্তে আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জ মূলতঃ তিনটি: ১. নিজেদের সুরক্ষা, ২. নিজেদের সুরক্ষিত রেখে করোনা পরিস্থিতির সত্য উন্মোচন, যাতে নীতি-নির্ধারকরা তাদের মনোযোগের বাইরে থাকা বিষয়গুলোর দিকে দৃষ্টি দিয়ে সংক্রমণ ও মৃত্যু কমিয়ে আনার পাশাপাশি যাদের প্রয়োজন তাদের খাবারসহ অন্য বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে পারেন এবং অর্থনীতি বিশেষ করে ব্যক্তি খাত কিছুটা হলেও সচল রাখতে পারেন এবং ৩. অফিসের ভেতরে বাইরে আরো বেশি সহমর্মী মনোভাব নিয়ে সাংবাদিকদের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিশেষ করে অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্যগত বিষয়ে ব্যক্তি বা সামষ্টিকভাবে একজন আরেকজনকে সহায়তা করা। আমরা আমাদের জায়গা থেকে সেটা করার চেষ্টা করছি।
ষষ্ঠ বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে চ্যানেল আই এবং চ্যানেল আই অনলাইনের সকল সংবাদকর্মীকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান জাহিদ নেওয়াজ খান।
করোনাভাইরাসের এ সংকট সময় সাংবাদিকতা অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং হলেও সত্য উন্মোচনের সাংবাদিকতা করে যাচ্ছে চ্যানেল আই এবং চ্যানেল আই অনলাইন।
চ্যানেল আই অনলাইনের ডিজিটাল অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া এডিটর তৌফিক আহমেদ বলেন: দেখতে দেখতে ছয় বছরে পদার্পণ করলো চ্যানেল আই অনলাইন। এই সময়ের মধ্যে আমরা আমাদের সাধ্যমতো বস্তুনিষ্ঠভাবে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে সংবাদ দর্শক-পাঠকের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছি। একইসঙ্গে আমরা প্রযুক্তির সহযোগিতায় আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট দর্শকের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছি।
তিনি আরও বলেন: চ্যানেল আই অনলাইন কোন জনবিচ্ছিন্ন নিউজ পোর্টাল নয়৷ এই সময়ের মধ্যে পাঠকের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠতে পারাটা চ্যানেল আই অনলাইনের বড় অর্জন। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সংবাদ আকারে প্রচারের পাশাপাশি, জনদুর্ভোগ ও অনিয়ম তুলে ধরে সরকারকে জনগণের আরও কাছাকাছি নিয়ে আসতে ভূমিকা রেখে চলেছে চ্যানেল অনলাইন৷
করোনা বিশ্ব মহামারী পরিস্থিতিতে যে কোন গুজব থেকে জনগণকে সচেতন করার কাজটি সচেতন ভাবে করে যাচ্ছে চ্যানেল আই অনলাইন। এ সময়ে সকলকে সচেতন হবার পাশাপাশি সরকারের নির্দেশনা মেনে সকলকে ঘরে থাকার আহ্বান জানান তৌফিক আহমেদ।
অনলাইনের জন্য শতভাগ হোম অফিস সম্ভব হলেও টেলিভিশনে সেটা সম্ভব নয়। টেলিভিশনে প্রতিদিনের কার্যকর কর্মী সংখ্যা কমিয়ে এবং একটি অংশের জন্য হোম অফিসের ব্যবস্থা করেও তাই প্রতিদিন টিভি কর্মীদের অনেককে অফিসে আসতে হচ্ছে, মাঠেও যেতে হচ্ছে একটি অংশকে। টেলিভিশনের পাশাপাশি সেসব খবরও পাওয়া যাচ্ছে চ্যানেল আই অনলাইনে।