সিলেট থেকে: মিরপুরে টানা দুই ম্যাচে হার। সিলেটে এসে সেটি উন্নীত হল তিনে। টানা তিন ম্যাচ হেরে বিপিএলের ষষ্ঠ আসরে সেরা চারে ওঠার পথ কঠিন করে ফেলল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন রংপুর রাইডার্স। স্বাগতিক সিলেট সিক্সার্সের কাছে রংপুর বুধবার হেরেছে ২৭ রানে।
সিলেট-১৮৭/৫, রংপুর-১৬০/৬
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে রাতের ম্যাচে ডেভিড ওয়ার্নার ও লিটন দাসের ফিফটিতে ১৮৭ রান তোলে সিলেট। লক্ষ্য তাড়ায় নেমে মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার দল করতে পেরেছে ১৬০।
১১ রানে নেই তিন উইকেট। পেরিয়ে গেছে ২.৩ ওভার। সিক্সার্সের তৃতীয় শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরা ব্যাটসম্যানের নাম ক্রিস গেইল। সেখান থেকে ১৮৮ রান তাড়া করে ম্যাচ জেতার চেয়ে কঠিন কাজ তখন আর কী হতে পারে! বাজে অবস্থা থেকেও রাইলি রুশো ও মোহাম্মদ মিঠুন দুর্দান্ত প্রতিরোধ আশা দেখায়। তবে তা পূর্ণতা পায়নি আর কেউ জ্বলে উঠতে না পারায়।
ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে পাল্টা জবাব দেন রুশো-মিঠুন। মাত্র ১৯ বল খেলেই দুই ব্যাটসম্যান যোগ করে ফেলেন জুটিতে ৫০। সময়ের সঙ্গে ভয়ঙ্কর হতে থাকা রুশো তাসকিনের বলে বোল্ড হয়ে যখন সাজঘরে ফেরেন, দলের রান একশ স্পর্শ করেছে। আর জুটিতে ৮৯।
৩২ বলে ৫৮ রানের ইনিংস খেলে রুশো ফেরার পর বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারেননি মিঠুন। তাসকিনের দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে এ ডানহাতি ব্যাটসম্যান করেন ২৯ বলে ৩৫ রান। বিনি হাওয়েল ১৩, আর মাশরাফীর অপরাজিত ৩৩ রান হারের ব্যবধানই কমিয়েছে কেবল।
মিরপুরে পর্দা ওঠা বিপিএলের ষষ্ঠ আসরের শুরুটা ছিল ম্যাড়মেড়ে। ঘুমপাড়ানি ব্যাটিংয়ে বিরক্তি চূড়া ছোঁয়ার পর দেখা মেলে চার-ছক্কার প্রদর্শনী। টি-টুয়েন্টির সেই উত্তাপ গায়ে মেখে বিপিএল সিলেটে আসতেই পেছনে ফিরে যাওয়া। ছোট পুঁজির তিনটি ম্যাচ গড়ানোর পর অবশেষে দেখা গেল রানের জোয়ার। সেটি হোম টিম সিলেট সিক্সার্সের ব্যাটসম্যানদের দৃঢ়তায়।
আগের রাতে ৬৮ রানে অলআউট হওয়া ডেভিড ওয়ার্নারের দল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে শুরুতে ব্যাট করে তুলে ফেলে দুইশর কাছাকাছি সংগ্রহ। মঙ্গলবার যারা নিজ দলের খেলোয়াড়দের দুয়োধ্বনি দিয়েছেন, তারাই এদিন ‘সিক্সার্স…সিক্সার্স’ কোরাস তুলে গ্যালারি মাতিয়ে রাখলেন। আর উপভোগ করলেন লিটন-সাব্বির-ওয়ার্নার-পুরানের ব্যাটে আসা চার-ছক্কার প্রদর্শনী।
শেষটায় রোমাঞ্চ আরও বাড়িয়ে দিলেন ওয়ার্নার ডানহাতে ব্যাট করে। ক্রিস গেইলের করা ইনিংসের ১৯তম ওভারের চতুর্থ বলটি থেকে বাঁহাতি ব্যাটসম্যান স্ট্যান্স বদলে হয়ে যান ডানহাতি। ব্যাটিং স্টাইল পরিবর্তন করে প্রথম বলেই মারেন সোজা ব্যাটে ছক্কা। পরের বলে স্কয়ারলেগ দিয়ে চার, শেষ বলটায় রিভার্স সুইপ করে মারেন আরও একটি চার। শেষ পর্যন্ত ৬১ রানে অপরাজিত থাকেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার। খেলেন মাত্র ৩৬ বল। তার আগে লিটন দাস খেলে যান ৪৩ বলে ৭০ রানের ইনিংস।
সিলেট পর্বে প্রথম তিন ম্যাচে আগে ব্যাট করা দল তুলতে পারে ১২৮, ৬৮ ও ১৩৬ রান। যার মধ্যে শেষটিতে ১৩৬ রান নিয়েও ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে জেতে রাজশাহী কিংস। সেটিও আবার ২০ রানের ব্যবধানে। ওরকম ম্যাচ দেখার পর রাতে বড় সংগ্রহ স্বস্তি দেয় দর্শকদের। শুরুর বিপর্যয় ব্র্যাকেটবন্দী করে রাখলে রংপুরের ব্যাটিংটাও একদম খারাপ হয়নি, কঠিন অবস্থা থেকেও পেরিয়েছে দেড়শ’র পথ।