হামলা নিন্দনীয়, তবে বহিরাগত নিয়ে ডাকসুতে কেন: হাছান মাহমুদ

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘ডাকসুতে হামলার ঘটনা অগ্রহণযোগ্য, অনভিপ্রেত, নিন্দনীয়। কিন্তু বহিরাগতদের নিয়ে যাওয়া নিয়েই এ ঘটনা ঘটেছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন হলো, ভিপি নুর ডাকসু ভবনে বহিরাগতদের নিয়ে কেন হাজির হয়েছিলেন এবং এ ধরণের ঘটনা ঘটানোর জন্য কোনো ইন্ধন ছিল কি না?’

সোমবার দুপুরে রাজধানীতে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সাথে সংক্ষিপ্ত মতবিনিময়কালে রোববার ডাকসুতে হামলার ঘটনায় ভিপি নুরসহ কয়েকজনের আহত হবার ঘটনার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী একথা বলেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা কখনোই এই ধরণের হামলাকে সমর্থন করি না। হামলার পরপরই আমাদের দলের দুজন নেতা সেখানে গিয়েছিলেন। আজ মাননীয় সড়ক ও সেতুমন্ত্রী, দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি দল এবং সরকারের পক্ষে কথা বলেছেন। আমরা এ ধরণের ঘটনাকে কখনোই সমর্থন করি না।’

‘কিন্তু এখানে আরো কয়েকটি প্রশ্ন থেকে যায়’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘ডাকসু ভিপি নুর কেন বহিরাগতদের নিয়ে ডাকসু ভবনে গেলেন? এতজন বহিরাগতদের নিয়ে সেখানে যাওয়ার কি প্রয়োজনীয়তা ছিল? দ্বিতীয় হচ্ছে, আপনারা দেখেছেন সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য নানা ধরণের ষড়যন্ত্র আছে। রাজনৈতিকভাবে সরকারকে মোকাবিলায় করতে ব্যর্থ হয়ে আমাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এবং যারা দেশের পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে চায়, তারা নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। সেই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এ ধরণের ঘটনা ঘটানো হয়েছে কি না এবং এই ধরণের ঘটনা ঘটানোর ক্ষেত্রে কোনো উস্কানি ছিল কি না, তা-ও দেখতে হবে। কারণ আমরা অতীতেও দেখেছি ডাকসু ভিপি নুর এ ধরণের ঘটনার মাধ্যমে আলোচনায় থাকতে চান।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতের বিষয় নিয়ে আন্দোলন করার চেষ্টা এবং বহিরাগতদের নিয়ে সেখানে উপস্থিত হওয়া এগুলো ঘটনা ঘটানোর জন্য ইন্ধন কি না সেগুলো খতিয়ে দেখার প্রয়োজন আছে। তবে যাই হোক, যে ঘটনা ঘটেছে, তা কখনই গ্রহণযোগ্য না। অবশ্যই এটা তদন্ত হবে। শেষ রক্তবিন্দু দিয়েও আস্থা ও বিশ্বাসের মর্যাদা রক্ষা করবো।

সাংবাদিকরা এসময় দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের সভাপতি তিনি আমাকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছেন। তার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এর আগে তিনি আমাকে পরিবেশ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। সেটি আমি নিষ্ঠার সাথে ১০ বছর পালন করেছি। তিনি আমাকে প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছিলেন সেটি আমি ৭ বছর নিষ্ঠার সাথে পালন করার চেষ্টা করেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনার আমার ওপর যে আস্থা, বিশ্বাস স্থাপন করেছেন, আমার জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়েও যেন সেই আস্থা এবং বিশ্বাসের মর্যাদা রক্ষা করতে পারি সেটিই হচ্ছে আমার প্রতিজ্ঞা। আমি যেন আস্থা ও বিশ্বাসের সাথে দায়িত্ব পালন করতে পারি সেজন্য আপনাদের সহযোগিতা চাই।’

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলে একটি ঘোষণাপত্র থাকে, জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি দিকনির্দেশনা থাকে। রাজনীতি হচ্ছে একটি ব্রত, উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করার পর রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন ঘটনো হয়েছে। জিয়াউর রহমান রাজনীতিতে রাজনীতিবিদদের বেচাকেনার হাট তিনি বসিয়েছিলেন। এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন এবং বণিকায়ন ঘটানো হয়। সেই ধারাবাহিকতা এরশাদ সাহেব আরো বেগবান করেছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া সেটিকে ষোলকলায় পূর্ণ করেছেন।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য হচ্ছে একটি উন্নত রাষ্ট্র গঠন করার পাশাপাশি উন্নত জাতিও গঠন করা এবং একইসাথে রাজনীতিতে যে দুর্বৃত্তায়ন ঘটানো হয়েছে, রাজনীতিকে যে কলুষিত করা হয়েছে, সেটিকে অবমুক্ত করা। সেই লক্ষ্যেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাজ করছে। আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে শুধু নয়, জাতির পথ প্রদর্শক হিসেবে সবসময় কাজ করে চলেছে। যারা রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন ঘটিয়েছে, রাজনীতিতে কেনাবেচার হাট বসিয়েছে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের এই সম্মেলন থেকে তাদের অনেক কিছু শেখার আছে।’

ডাকসুতথ্যমন্ত্রীভিপি নূররাজনীতি