আগামী অর্থবছরের (২০১৯-২০২০) প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্য সেবা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ এর জন্য ২৫ হাজার ৭৩২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল।
চলতি অর্থ বছরে (২০১৮-২০১৯) এ খাতে বরাদ্দ ছিল ২২ হাজার ৩৩৬ কোটি টাকা।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, স্বাস্থ্য খাতে আশাতীত সাফল্য অর্জিত হয়েছে। শিশু মৃত্যু হার প্রতি হাজারে ৪৫ জন থেকে কমে ২৪ জনের নেমে এসেছে। মেডিকেল কলেজের সংখ্যা ৪৬টি থেকে বেড়ে বর্তমানে ১১১টি হয়েছে।
২০০৬ সালে দেশের জনগণের গড় আয়ু ছিল ৬৫ বছর। বর্তমানে তা ৭২ দশমিক ৮ বছর। সামাজিক খাতে প্রায় প্রতিটি এলাকায় বাংলাদেশের অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ায় সবার উপরে।
এর মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের পরিচালন ব্যয় ১০ হাজার ৭ কোটি টাকা ও উন্নয়ন ব্যয় ৯ হাজার ৯৩৬ কোটি টাকা এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার ক্যলাণ বিভাগের পরিচালন ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকা ও উন্নয়ন ব্যয় ধারা হয়েছে ২ হাজার ৩৩০ কোটি টাকা।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা খাতে উন্নয়নের মাধ্যমে মান সম্মত স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও সবার জন্য সাশ্রয়ী ও গুনগত পরিবার পরিকল্পনা সেবা নিশ্চিত করতে একটি স্বাস্থ্য সচেতন সুস্থ, সবল ও কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে সরকার নিষ্ঠা ও একাগ্রতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্যখাতে আমাদের লক্ষ্য হল সবার জন্য সুলভে মানসম্মত স্বাস্থ্য ও পরিবার ক্যলাণ সেবা নিশ্চিত করা। জানুয়ারি ২০১৭-জুন ২০২২ মেয়াদে ১ লাখ ১৫ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকা ব্যয়ে স্বাস্থ্যসেবা খাতে ৪র্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্ঠি সেক্টর কমর্সূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। মোট ২৯ টি অপারেশনাল প্ল্যানের মাধ্যমে সারাদেশে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা প্রদান ও চিকিৎসা শিক্ষার মানোন্নয়ন করা হচ্ছে। উক্ত কর্মসূচির ৮৪ শতাংশই সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে হচ্ছে।
মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যের উন্নয়নের জন্য অগ্রাধিকার মূলক বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে মুস্তফা কামাল বলেন: মাতৃস্বাস্থ্যের উন্নয়নের জন্য গৃহীত কার্যক্রমের মধ্যে অন্যতম হলো- চিকিৎসকদের জরুরী প্রসূতি সেবা প্রদান।
অন্যদিকে, নবজাতকের চিকিৎসা সেবা সম্প্রসারণের জন্য ১০ টি জেলা হাসপাতাল এবং ৬১ টি উপজেলা হাসপাতালে স্পেশাল কেয়ার নিউবর্ন ইউনিট চালু করা হয়েছে। একই সাথে জনগণের স্বাস্থ্য সেবার চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে সরকার ৯ হাজার ৭৯২ জন মেডিকেল অফিসার নিয়োগের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বিজ্ঞানের নতুন নতুন উদ্ভাবন ও উচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করে চিকিৎসা কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। বিগত দশ বছরে সারাদেশে মেডিকেল কলেজের সংখ্যা এবং এমবিবিএস কোর্সের আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। দেশে মেডিকেল কলেজের সংখ্যা ৪৬ টি থেকে ১১১ টিতে উন্নীত হয়েছে। একই ভাবে এমবিবিএস কোর্সের সংখ্যা ২ হাজার ৫০ টি থেকে ১০ হাজার ৩০০ টি করা হয়েছে।
সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ: সময় এখন আমাদের, সময় এখন বাংলাদেশের’ শিরোনামে ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ‘স্মার্ট’ বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। নতুন অর্থবছরে বাজেটের প্রস্তাবিত আকার ধরা হয়েছে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা।