জাতীয় পার্টির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গাকে সীমা লঙ্ঘন না করার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন: ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নূর হোসেনকে কটাক্ষ করলে জনগণ ক্ষমা করবে না। বিষাক্ত কটূক্তি করে সীমা লঙ্ঘন না করবেন না। একবার মুখ ফসকে গেলে যতই সরি বলুন কাজে আসবে না।’
মঙ্গলবার রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে (কেআইবি) আয়োজিত ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন: ‘নূর হোসেনকে হত্যার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে হত্যার চেষ্টা কারা করেছিলেন সেটা জাতি জানে। সেই নূর হোসেনকে অশ্রাব্য ভাষায় কটাক্ষ করা হয়েছে। আমাদের নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার আদালতে অক্সিজেন নিয়ে যারা রাজনীতিতে অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছে তারা আজ নেত্রীকে কটাক্ষ করে। কথা মুখ থেকে একবার ফসকে গেলে মুখে আর ফিরে আসে না, যত সরিই বলুন না কেন।’
তিনি আরও বলেন: ‘এ ধরনের মন্তব্য কটাক্ষ আমাদের রাজনৈতিক পরিবেশকে নষ্ট করছে। আবারও বলছি, শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটাক্ষ করলে বাংলাদেশের মানুষের অনুভূতিতে আঘাত করা হবে৷ বাংলাদেশের মানুষ তাদের ক্ষমা করবে না।’
গত ১০ নভেম্বর রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে মহানগর উত্তর শাখার উদ্যোগে আয়োজিত ‘গণতন্ত্র দিবস’র এক আলোচনা সভায় দলটির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ‘হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ কাকে হত্যা করলেন? নূর হোসেনকে? নূর হোসেন কে? একটা অ্যাডিকটেড ছেলে। একটা ইয়াবাখোর, ফেন্সিডিলখোর।’
ওই সভায় রাঙ্গা আরও বলেন, ‘নূর হোসেনকে নিয়ে গণতান্ত্রিক দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নাচানাচি করে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির গণতন্ত্রটা হলো এমন, যারা অতি ফেন্সিডিলখোর, ইয়াবাখোর, যারা ক্যাসিনোর ব্যবসা করে, তারাই হলো গণতন্ত্রের সোনার সন্তান। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় দেখবেন নূর হোসেন দিবস। সেই নূর হোসেন চত্বর এরশাদ করেছেন। বাংলাদেশে গণতন্ত্র এরশাদ প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি গণতন্ত্রের ধারক ও বাহক ছিলেন।’
মঙ্গলবার ওই বক্তব্য প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব।
মঙ্গলবারের ভাষণে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ৭৫-এ জাতির পিতার খুনিদের পুনর্বাসন করেছিলেন বলে অভিযোগ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন: ‘বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে জাতির পিতার খুনিদের পুরস্কৃত করছিল। তাদের বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আমাদের দূতাবাসগুলোতে চাকুরি দেওয়া হয়েছিল।’
তিনি যোগ করেন: ‘এটাই বিএনপি…যার ধারাবাহিকতায় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তারা বোমা হামলা চালিয়ে আমাদের নেত্রীকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল। এরপরও বারবার আমাদের নেত্রীকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি বলে দিতে চাই আমরা অনেক ধৈর্য ধরেছি, আর নয়।’
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ৭৫-এ বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, ৩ নভেম্বরের জাতীয় চার নেতার হত্যার বিচার এবং ৭১’র রাজাকারদের বিচার সম্পন্ন করার মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা দেশকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন বলে মন্তব্য করেন কাদের।
এ সময় তিনি স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রশংসা করে বলেন: ‘স্বেচ্ছাসেবক লীগ সব সময়ই সুসংবদ্ধ। বরাবরই আমাদের যে কোনো বড় আয়োজনে শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব তাদের থাকে। আমাদের নেত্রী আপনাদের ওপর খুশি। এখানে সম্মেলনে এসে আমার মনে হচ্ছে উত্তরের নয় জাতীয় সম্মেলনে চলে এসেছি।’
এ সময় নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের নিয়ম তুলে ধরে তিনি বলেন: ‘আপনারা সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক পদে যে ক’জনের নামই আসুক না কেন, সমঝোতার মাধ্যমে একজনের নাম আমাদের দিতে হবে। না হলে নেত্রী যে সিদ্ধান্ত দিবেন তা মেনে নিতে হবে।’