২০১৩ সালে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের জন্য পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞায় পড়েছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। সাকিব আল হাসান যখন ফিক্সিং না করেও নিষেধাজ্ঞায় অন্তক্ষরণটা ভালোই বোঝার কথা তার। আশরাফুল বুঝছেনও। সাকিব ইস্যুতে মুখ খুলেছেন তিনি, কঠিন সময়ে বাঁহাতি অলরাউন্ডারের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক আশরাফুল আরেক সদ্যসাবেক অধিনায়ককে নিয়ে বলেছেন, ‘সাকিব আর আমার কেসটা পুরোপুরি আলাদা। ক্রিকেট জুয়াড়ি সাকিবের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করতে চেয়েছিল। সাকিব তাদের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়। কিন্তু জুয়াড়ির ফোন আসা নিয়ে আইসিসি’র কাছে কোনো ধরনের অভিযোগ জানায়নি। সেটাই তার ভুল।’
ইএসপিএন-ক্রিকইনফোকে অ্যাশ বলেছেন, ‘সাকিবের থেকে আমার কেসটা তাই একেবারেই আলাদা। আমি পুরোপুরি ফিক্সিংয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। সাকিব শুধু জুয়াড়ির ফোন কল আসা নিয়ে গুরুত্ব দেয়নি। সাকিবের কেসটা সিস্টেমের চোখ খুলে দেবে। আফসোস শুধু, আমার ভুল থেকে দেশের ক্রিকেটাররা কোনো শিক্ষা নেয়নি!’
নিজের শাস্তি প্রসঙ্গেও মন্তব্য করেছেন আশরাফুল। বলেছেন, ‘ক্রিকেট থেকে দূরে থাকাটা কোনো ক্রিকেটারই মেনে নিতে পারে না। সাকিবেরও আগামী দিনগুলো খুব কষ্টে যেতে চলেছে। আমার নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রেও আমি মানতে পারিনি। প্রথম ছয়মাস নিজের মানসিক অবস্থা ঠিক রাখতে ঘুমিয়ে কাটাতাম। সারারাত ধরে টিভি দেখে দুপুর ২টা ঘুম থেকে উঠতাম। শাস্তির সময়টায় আমার খেলাতেও নিষেধাজ্ঞা জানানো হয়েছিল। যে কারণে আমার আইনজীবীর সঙ্গে ক্রিকেট খেলতাম। সাকিবের সঙ্গে অবশ্য এসব হবে না। সাকিব নির্বাসনের সময়টায় মিরপুরে ট্রেনিং করতে পারবে। আমার বিশ্বাস সে দারুণভাবে প্রত্যাবর্তন করবে।’
‘আমি সবসময়ই ভাবতাম যে আবার খেলতে পারব কিনা, মূলত আমার বয়সের কারণে (আশরাফুলের বয়স যখন ৩০ বছর তখন নিষিদ্ধ হন)। ক্রিকেট বোর্ড সাকিবকে সহায়তা করছে। আমিও সমর্থন পেয়েছি, তবে সাকিব যা পাবে তা আমরা পাইনি। আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার মতো খেলোয়াড় (যিনি প্রায়শই ইনজুরিতে পড়তেন) এবং সাকিবরা সবসময়ই অসাধারণ প্রত্যাবর্তন করেন।’
নিষিদ্ধ হওয়ার পর ভক্তদের কাছ থেকে যে সমর্থন পেয়েছিলেন তা আশরাফুলকে অবাক করেছিল বলেও স্বীকার করেছেন, ‘আমি যখন বাংলাদেশের হয়ে খেলতাম, তখন আমাকে দেশের অর্ধেক লোক পছন্দ করত এবং বাকি অর্ধেক আমাকে অপছন্দ করত। আমি ম্যাচ-ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকার করার পরে যখন সবার কাছে ক্ষমা চেয়েছিলাম, তখন প্রায় ৯৫% আমার সমর্থনে ছিল। কেউ বিশ্বাস করেনি যে আমি এটি একা করেছি। এটা সম্ভব ছিল না।’
উল্লেখ্য, জুয়াড়ির সঙ্গে একাধিকবার বার্তা চালাচালি করেও সেটি আইসিসির দুর্নীতিদমন ইউনিট বা বিসিবির দুর্নীতি সংশ্লিষ্ট ইউনিটের কাউকে না জানানোর অভিযোগ এনে গত মঙ্গলবার সাকিব আল হাসানকে দুবছরের জন্য নিষিদ্ধ করে আইসিসি। যার একবছর স্থগিত নিষেধাজ্ঞা।