৫৩ দিন ‘নিখোঁজ’ থাকার পর উদ্ধার হওয়া ফটোসাংবাদিক ও ‘দৈনিক পক্ষকাল’ এর সম্পাদক শফিকুল ইসলাম কাজলের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের মামলা করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। ভারত থেকে অনুপ্রবেশের অভিযোগে এ মামলা করেছে বিজিবি।
এর আগে শনিবার রাতে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরের শূন্যরেখা রেখা থেকে নিখোঁজ শফিকুল ইসলাম কাজলকে আটক করে বিজিবি।
৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের রঘুনাতপুর ক্যাম্পের ইনচার্জ হাবিলদার আছের আলী চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান: রাত পৌনে একটার দিকে তিনি বেনাপোল আন্তর্জাতিক শূন্যরেখায় আসেন। পরে বিজিবি সদস্যরা তাকে আটক করে অবৈধ অনুপ্রবেশ আইনে মামলা দিয়ে বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করে।
বেনাপোল পোর্টথানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে এবং রোববার দুপুরে তাকে যশোর আদালতে নেওয়া হবে।
ফটোসাংবাদিকতার পাশাপাশি ‘পক্ষকাল’ ম্যাগাজিনের সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করছিলেন শফিকুল ইসলাম কাজল। গত ১০ মার্চ বুধবার দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে বাসা থেকে বের হন। আনুমানিক রাত ৮টার থেকে তার দু’টি মুঠোফোনই বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর থেকে তিনি আর বাড়ি ফিরে আসেননি।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের হাতে থাকা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সেদিন বিকেল ৪টা ১৪ মিনিটে মোটরবাইকে শফিকুল ইসলাম কাজল রাজধানীর হাতিরপুলে মেহের টাওয়ারে তার অফিসে পৌঁছান। এরপর বাইকটির আশপাশে বেশ কয়েকজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়।
বিকাল ৫টা ৫৯ মিনিট থেকে সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটের মধ্যে তিনজন ব্যক্তি আলাদা আলাদাভাবে মোটরবাইকটির কাছে যায় এবং অযাচিত হস্তক্ষেপ করে। এরপর ৬টা ১৯ মিনিটে কাজলকে অন্য এক ব্যক্তির সঙ্গে অফিস থেকে বের হয়ে নিজের বাইকের পাশ দিয়ে হেঁটে যেতে দেখা যায়। পরে তিনি ফিরে আসেন এবং সন্ধ্যা ৬টা ৫১ মিনিটে একা বাইকে চড়ে চলে যান।
তারপর থেকেই কাজলের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, একটি মহল তার পেশাগত কাজে ক্ষুব্ধ ছিলেন। এমনকি তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলাও করা হয়।
ঘটনার পরের দিন ১১ মার্চ চকবাজার থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তার স্ত্রী। পরে ১৮ মার্চ রাতে কাজলকে অপহরণ করা হয়েছে অভিযোগ এনে চকবাজার থানায় মামলা করেন তার ছেলে মনোরম পলক।
তবে নিখোঁজের ঠিক ৩০তম দিনে (৯ এপ্রিল) ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের ফোন নম্বরটি বেনাপোলেই চালু হয়েছিল। তখন কাজল নিখোঁজের বিষয়টির তদন্ত কর্মকর্তা চকবাজার থানার এসআই মুন্সী আবদুল লোকমান বলেছিলেন, নিখোঁজ সাংবাদিক কাজলের ফোন নম্বরটি চালু হয়েছিল। লোকেশন দেখিয়েছে বেনাপোল। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে ও নম্বরটি চালু থাকার সময় কম হওয়ায় বেনাপোলে কোনো অভিযান চালানো সম্ভব হয়নি।