মাতৃভাষার জন্য যে দেশের মানুষ রক্ত দিয়েছে, জীবন দিয়ে রক্ষা করেছে মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার; সেই দেশে অন্য ভাষার চর্চাও হয় গুরুত্বের সাথে। ‘বাংলাদেশে নানা ভাষার চর্চা’ শিরোনামে চ্যানেল আইয়ে প্রচারিত ধারাবাহিক প্রতিবেদনের প্রথম পর্বে উঠে এসেছে; উচ্চশিক্ষা, পেশাগত প্রয়োজন কিংবা অভিবাসনের প্রয়োজনে দেশের তরুণ প্রজন্মকে আগ্রহী করে তুলেছে অন্য ভাষার চর্চায়।
এই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য অনেক প্রতিষ্ঠানে বিদেশি ভাষা শেখার বিষয়টি। দিনে দিনে এর গুরুত্বও বাড়ছে। তরুণ প্রজন্মের অনেকেই এখন ঝুঁকছে নতুন নতুন ভাষা শিখতে। তবে ভাষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরতেও বিদেশি ভাষা শেখা জরুরি।
আমরা জানি, বাঙালির ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটেই আজ একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করেছে জাতিসংঘ। এর মূল উদ্দেশ্য বিশ্বের যে কোনো জাতির মাতৃভাষাকে শ্রদ্ধা জানানো। তার মানে, আমার মায়ের ভাষার প্রতি আমার শ্রদ্ধা-ভালোবাসা থাকবে; তবে সাথে সাথে নিজেদের প্রয়োজনেই অন্য ভাষাও শিখতে হবে।
বিশ্বায়নের কারণে পৃথিবী এখন ‘গ্লোবাল ভিলেজে’ পরিণত হয়েছে। খুব সহজেই এখন এক দেশের নাগরিক শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসা, অভিবাসনসহ নানা করণে ভিন্ন ভিন্ন দেশে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে তার জন্য সবচেয়ে বড় বিষয় হয়ে দাঁড়ায় সেই দেশের প্রচলিত ভাষা জানা। তা না হলে শুরুতেই তাকে পিছিয়ে পড়তে হয়। এ জন্যই মাতৃভাষার পাশাপাশি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ভাষা জানতে আগ্রহী হচ্ছে।
তবে আমরা মনে করি, সবার আগে মাতৃভাষা ভালোভাবে শিখতে হবে, জানতে হবে। শুধুমাত্র বিদেশে চাকরি বা আশ্রয় পেতে ভাসা ভাসা কোনো ভাষা শেখায় খুব একটা কাজে আসে না। কেননা, সবার আগে মাতৃভাষা।