শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে ইমাম গ্রেপ্তার

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় একটি মসজিদে ঝাঁড় ফুঁক ও পড়া পানি দেয়ার কথা বলে আট বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে ওই মসজিদের ইমামকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

এ ঘটনা ধামাচাপা দেয়া ও হাসপাতাল থেকে ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে অপহরণের চেষ্টার অভিযোগে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতিসহ আরো পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।

শুক্রবার সকালে সদর উপজেলার ফতুল্লা থানার চাঁদমারি এলাকায় বায়তুল হাফেজ জামে মসজিদের তৃতীয় তলায় ইমাম ফজলুর রহমানের ব্যক্তিগত কক্ষে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। পরে পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত ফতুল্লার চাঁদমারি ও ইসদাইরসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ধর্ষক ফজলুর রহমানসহ ছয়জনকে আটক করে র‌্যাব।

আটক করা অপর পাঁচজন হলেন মসজিদটির পরিচালনা কমিটির সভাপতি শরীফ হোসেন, ইমামের সহযোগী রমজান আলী, গিয়াস উদ্দিন, হাবিব এ এলাহি এবং মোতাহার হোসেন।

বুধবার দুপুরে র‌্যাব-১১ অধিনায়ক (সিও) লেফটেনেন্ট কর্ণেল কাজী শামসের উদ্দিন প্রেস ব্রিফিংয়ে গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান।

ধর্ষণের শিকার শিশুটি ফতুল্লার শিবু মার্কেট এলাকার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী এবং ওই এলাকারই বাসিন্দা। তার বাবা একটি গার্মেন্টস কারখানার নৈশ প্রহরী ও মা গার্মেন্টস কর্মী। তাদের তিন মেয়ের মধ্যে এই শিশুটি সবার ছোট।

প্রেস ব্রিফংয়ে র‌্যাব আরও জানায়, শিশুটি মানসিকভাবে অসুস্থ থাকায় স্থানীয় কয়েকজনের পরামর্শ মতে ঝাঁড় ফুঁক ও পড়া পানি আনার জন্য শুক্রবার সকালে শিশুটির বাবা চাঁদমারি এলাকায় বায়তুল হাফেজ জামে মসজিদের ইমাম ফজলুর রহমানের কাছে তাকে নিয়ে যায়। ইমাম ফজলুর রহমান এ সময় কৌশলে শিশুটির বাবাকে দোকানে পাঠিয়ে মসজিদের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে দেয়। পরে নিজের রুমে শিশুটিকে নিয়ে হাত বেঁধে ও মুখে স্কচ টেপ লাগিয়ে ধর্ষণ করে।

পরে তার বাবা এসে শিশুটিকে বাসায় নিয়ে গেলে রক্তক্ষরণ শুরু হয় এবং শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে তারা বাবা-মা বুঝতে পারে। এক পর্যায়ে শিশুটি তার বাবা-মাকে ধর্ষণের বিষয়টি জানালে তারা বিকেলে ওই মসজিদে গিয়ে মুসুল্লিদের জানালে ইমামের পক্ষের লোকজন তাদের হুমকি দেয়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় শিশুটিকে গুরুতর অবস্থায় নারায়ণগঞ্জ শহরের জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে গিয়েও ইমামের লোকজন শিশুটিকেসহ তার বাবা মাকে অপহরণের চেষ্টা করে।

হাসপাতালের নার্সদের সহায়তায় শিশুটির বাবা বোরকা পড়ে র‌্যাব কার্যালয়ে গিয়ে অভিযোগ দেন। পরে র‌্যাব গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হয়ে ধর্ষক ইমামসহ ছয়জনকে আটক করে।

র‌্যাব জানায়, শিশুটির শারিরীক অবস্থা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। র‌্যাবের নিরাপত্তা পাহাড়ার মধ্য দিয়ে শিশুটির চিকিৎসা চলছে।

এ ব্যাপারে গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে ফতুল্লা থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে র‌্যাব জানিয়েছে।

র‌্যাবশিশু ধর্ষণ