অন্য বোলাররা যেখানে ধুঁকছেন, সেখানে আবু জায়েদ রাহি বেশ ব্যতিক্রম। বাংলাদেশের বিবর্ণ বোলিং লাইনআপের ব্যর্থতা ঢাকতে না পারলেও, একা কাঁধে দায়িত্ব তুলে নিয়ে চেষ্টার কমতি রাখছেন না এ পেসার। দ্বিতীয় দিনের শুরুতে তারকায় ঠাসা ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপকে ধাক্কা দিয়েছিলেন, শেষ সেশনে এসে সেঞ্চুরি পেতে দিলেন না আজিঙ্কা রাহানেকে। তবে মায়াঙ্ক আগারওয়ালকে থামাতে পারছেন না কেউই।
ইন্দোর টেস্টের দ্বিতীয় দিনে শুক্রবার রাহানের সঙ্গী আগারওয়াল সেঞ্চুরি পেয়েছেন মাঝ সেশনের শুরুতেই। শেষ সেশনে ভারত সহ-অধিনায়ক ছিলেন সে পথেই। নিজের দ্বাদশ টেস্ট সেঞ্চুরি পেতে যখন প্রয়োজন মাত্র ১৪ রান, আঘাত হানলেন রাহি। চা পান বিরতি শেষে ফেরার পর দ্বিতীয় ওভারেই রাহির লেন্থ বলকে অফসাইড দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে তাইজুলের হাতে ধরা পড়েন রাহানে। এদিন ব্যক্তিগত ২৫ রানে থাকার সময় তিনি ঢুকে গেছেন চার হাজারি ক্লাবে।
বাংলাদেশ-১৫০, ভারত-৩৪৯/৪ (৯৬)
৯ চারে ১৭২ বল খেলে ৮৬ রান করেছেন রাহানে। ফেরার আগে করে গেছেন বাংলাদেশকে রান পাহাড়ে চাপা দেয়ার বন্দোবস্ত। আগারওয়ালের সঙ্গে চতুর্থ উইকেট জুটিতে তুলে দিয়ে গেছেন ১৯০ রান। দুজনের বিশাল জুটিতে লিড ২০০ পার করার পথে আছে ভারত।
রাহানে ফিরলেও সত্যিকারের কাঁটা হয়ে ঝুলে আছেন আগারওয়াল। এরইমধ্যে একা হাতে পার করে ফেলেছেন বাংলাদেশের ১১ ব্যাটসম্যানের করা মোট রানকে। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত করেছেন ১৮৬ রান। নিজ থেকে ভুল না করলে দ্বিতীয় টেস্ট ডাবল সেঞ্চুরি পাওয়া সময়ের ব্যাপার ভারতীয় ওপেনারের জন্য।
অথচ এই আগারওয়ালই ফিরতে পারতেন ৩২ রানে। প্রথমদিনের শেষ সেশনে তাকে রাহির বলেই স্লিপে জীবন দেন ইমরুল। ক্যাচটা ধরতে পারলে হয়তো ভারতের প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানকে ফেরানোর অনন্য কীর্তি গড়তে পারতেন রাহি।
প্রথমদিনে ৩৭ রানে অপরাজিত আগারওয়াল ৯৮ বলে ফিফটি তুলেছেন নতুন দিনের প্রথম সেশনে। এ সেশনেই সেঞ্চুরির আগে ডানহাতি ব্যাটসম্যান জীবন পেয়েছেন আরও একবার। ৮২ রানে থাকার সময় মেহেদী মিরাজকে সুইপ খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েছিলেন। তবে রিভিউ নিয়ে বেঁচে গেছেন।
দুইদফা সুযোগের পর আগারওয়াল সেঞ্চুরি তুলেছেন ১৮৬ বলে। ইবাদত হোসেনকে সোজা ব্যাটে চার মেরে পৌঁছান নিরানব্বইয়ে। তিন বল পর অনসাইডে ফ্লিক করে দুই রান নিয়ে তিন অঙ্কের ঘরে। সেঞ্চুরি পেতে ১৫ চারের সঙ্গে একটি ছক্কাও মেরেছেন ভারত ওপেনার।
দিনের শুরুতে সফরকারীদের ভালো সূচনা এনে দিয়েছিলেন পেসার রাহি। আগেরদিনের অপরাজিত পূজারা ৪৩ রানে ক্রিজে এসে ফিফটি তুলে নেন। তাকে বদলি ফিল্ডার সাইফ হাসানের ক্যাচ বানিয়ে শুরু রাহির। ৯ চারে ৭২ বলে ওয়ানডে ঢংয়ে করা ৫৪ রানের ইনিংসটি থামে পূজারার।
পরে কোহলি ক্রিজে এলে টিকতে দিয়েছেন মাত্র দুই বল। অল্পের জন্য ভারত অধিনায়ককে ‘গোল্ডের ডাক’ উপহার দেয়া যায়নি। তবে রানের খাতা খোলার আগেই মুখোমুখি দ্বিতীয় বলে তাকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে স্বাগতিকদের বড় ঝটকাই দেন রাহি।