রাজনীতি যখন আদর্শবোধের সোপান হয়ে ওঠে

দেশভাগ যেন সাহিত্যের আঙিনাকেও একটা রেষারেষির স্তরে এনে ফেলেছে। এপার বাংলার শারদ উৎসব কেন্দ্রিক সাহিত্য ওপার বাংলার মানুষের কাছে সহজে পৌঁছায় না। আবার ওপার বাংলার ঈদ কেন্দ্রিক সাহিত্য এপারের পাঠকের হাতে আসেই না। বাংলাদেশের মানুষের, পশ্চিমবঙ্গের সাহিত্য ঘিরে একটা উৎসাহ আছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ এই ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময়েই একটু নাক উঁচু মানসিকতা নিয়ে থাকে।প্রতিবেশি রাষ্ট্রের ঈদ সংখ্যা তো দূরের কথা, এই বাংলাতেই সহনাগরিকেরা যে ঈদ সংখ্যা প্রকাশ করেন, তার খবর আমরা কজন রাখি? কবীর সুমন একটা সময়ে গেয়েছিলেন, সাহিত্য মরে পুজো সংখ্যার চাপে।সেই চাপের গুঁতোতে কয়েকবছর আগে আমরা দেখেছি, ব্রেন স্ট্রোকে অচৈতন্য, চিকিৎসার ভাষাতে যাকে ‘কোমা স্টেজ’ বলা হয়, তেমন এক রোগীকে কেবল অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে সারিয়ে দিয়েছিলেন সমরেশ মজুমদার।

এই ধরণের লেখা যখন ক্রমে সাহিত্যের অঙ্গনে জলচল হতে শুরু করে তখন সিরিয়াস পাঠকের ভিতর সাহিত্য পাঠ ঘিরে আগ্রহ ক্রমশ হারাতে থাকে। জীবনবোধের বিন্দুমাত্র পরিচয় না দিয়ে, ইন্টারনেটের সাহায্য নিয়ে, আর থ্রি ডি অ্যানিমেশনের সাহায্য নিয়ে যখন অনেকে নিজেদের বিভূতিভূষণের, ‘লবটুলিয়ার কাহিনী’ বা ‘চাঁদের পাহাড়ে’ র সমতুল্য লেখক বলে ধরে নেন, তখন তাদের জন্যে করুণা করলেও একটু বেশি ‘কিছু’ করা হয়ে থাকে।

এইরকম একটা সামগ্রিক হতাশাব্যঞ্জক অবস্থায় এই বছর সংযুক্ত হয়েছে কোভিড-১৯ জনিত অতিমারি। এই সঙ্কটকালে যেন মারণ রোগ করোনার থাবাকে অতিক্রম করে গোটা মানব সমাজের সামনে সবথেকে বড় জ্বলন্ত সমস্যা হিসেবে উঠে এসেছে ক্ষুধা। উঠে এসেছে ছাঁটাই। জ্বলন্ত হয়েছে আরো বেশি করে বেকারত্ব। আজ যদি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় বা সমরেশ বসু বেঁচে থাকতেন, আমরা হয়তো নতুন করে একটা ‘উত্তর কালের গল্প, বা ‘আদাব’ পেতাম। এই না পাওয়ার বেদনাটাকে হঠাৎ আলোর ঝলকানির মতো ঝলমল আঙ্গিকে, হিরন্ময় পাত্রে ঢেকে নয়, কয়লায় কালো সত্য করে উপস্থাপিত করলেন এই সময়কালের বিশিষ্ট্য কথা সাহিত্যিক প্রচেত গুপ্ত তার ‘নিষাদ’ উপন্যাসের ভিতর দিয়ে।

‘নিষাদ’ আমার কথা। ‘নিষাদ’ আপনার কথা, ‘নিষাদ’ আমাদের সকলের কথা। মধ্যবিত্ত বাঙালির সুখস্বপ্ন গত নয়ের দশকের শুরু থেকেই বাজার অর্থনীতি ভাঙতে শুরু করেছিল। কোভিড-১৯ উচ্চবিত্তকে পরিণত করল কার্যত নিম্নবিত্তে। মধ্যবিত্তের সঙ্কট, সেই সঙ্কটে নিছক পাঁচের দশকের উত্তম-সুচিত্রার প্রেমের গল্পের ফিল্মি সুগার কোটিং নয়, আবার অতিমারির হাতছানির স্পষ্ট ইঙ্গিত নয়, কিন্তু মানবতার সঙ্কটের এক ভয়াল আগামীদিনের আশঙ্কা-এর ভিতর দিয়ে প্রচেত গুপ্ত যে সমাজমনস্কতার পরিচয় দিয়েছেন, তেমনটা এপার বাংলার সাহিত্যের বাজারচলতি ধারাই বলুন, আর লিটল ম্যাগাজিন সম্পৃক্ত সাহিত্যই বলুন, আর পাওয়া যায়নি বললে চলে।

রাজনীতির সঙ্কট, রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্কট, রাজনীতিকে কেবল ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহারের অভিষ্পা, এমন কি সহযোদ্ধাকে শষ্যাসঙ্গী করার ভিতর দিয়েও আগমার্কা বিপ্লবী লেবাস রচনা, নিজের সুখ স্বাচ্ছন্দ্য এতটুকু বিসর্জন না দিয়ে, কর্মীদের ব্যবহার করা। রাজনৈতিক শত্রুদের বিরুদ্ধে নয়, নিজের দলের বিপক্ষ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। দলের কমিটি দখলের স্বার্থে আদর্শের বুলি কপচিয়ে নিবেদিত প্রাণ রাজনৈতিক কর্মীদের বিভ্রান্ত করা, তাদের জেলের পথে ঠেলে দেওয়া। তারপর কিছু জানি না, কিছু বুঝি না করে পিঠ বাঁচানো।এই ‘অগ্নীশ’ চরিত্রের সাথে আমাদের কার না পরিচয় হয়েছে?

অথচ সমস্ত রকম প্রত্যয় থেকে কার্যত প্রতারিত ‘সিন্ধুরা’ যখন নিজের রাজনৈতিক বিশ্বাস ছাড়েনি, বোধকে বিসর্জন দেয়নি। নিষাদের কাছে যেন স্বপ্নিল হয়ে ফিরে আসে তার মৃত বাবা। তখন মনে হয়, প্রচেতবাবু নিজে প্রত্যক্ষ রাজনৈতিক কর্মী না হয়েও একদম হার্ডকোর রাজনৈতিক কর্মীর অভিজ্ঞতাতে সময়ের জ্বলন্ত আখ্যান লিখেছেন।

এইসময়ের রাজনৈতিক সঙ্কট, বেকারত্বের জ্বালাকে কাজে লাগিয়ে ‘অপূর্ব রায়ে’ র মতো চরিত্র, ‘ঐশানী’ র মতো চরিত্র, সব থেকে জোর দিয়ে বলতে হয়, ‘অগ্নিশের’ র মতো একটি ভণ্ড, কামাতুর, ব্যক্তিস্বার্থবাহী, বুকনিবাজ চরিত্র-এই চরিত্রের লোকেদের দ্বারাই আজ রাজনীতির অঙ্গনের একটা বড় অংশ ভরে গেছে। এসব যেন, ‘যারা পায়, যারা সবই থেকে কিছু নাহি পায়, কেন কিছু আছে বোঝানো, বোঝা না যায়’ অমিয় চক্রবর্তীর সেই অমোষ উচ্চারণকেই প্রত্যক্ষতে অপ্রত্যক্ষ থেকে লেখক করেছেন।

নিষাদের প্রেম, সেই প্রেমে প্রতারণা, উষ্ণির মত একটি বিকৃতকাম মনস্তাত্ত্বিক নারী যে মেঘপর্ণাকে গাছে তুলে মই কেড়ে নেয়, এ ধরণের যৌন বিকৃত মানুষের পাল্লায় আমাদের মাঝে মাঝেই পড়তে হয়। মনস্তত্ত্বে একটা বড় জায়গা জুড়ে আছে যৌন ঈর্ষা। এই যৌন ঈর্ষার পরিস্ফুটনে উষ্ণি, নিষাদের বাবা শাশ্বত, নিষাদের মা নয়নতারা এবং সর্বোপরি সিন্ধুরা, আর অগ্নিশ যেন আমাদের চেতনার এক একটি পরতে এক এক ধরণের অনুভূতি জাগায়।

সিন্ধুরার তীব্র মানসিক যন্ত্রণাকে কার্যত ব্ল্যাকমেল করে যখন তার আদর্শ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব অগ্নিশ, সিন্ধুরাকে বিছানায় তোলে, সিন্ধুরাকে তার কোলপাঁজা করে বসার ঘর থেকে শোওয়ার ঘরে আনা, বিছানায় শোওয়ানো, নিরাভরণ করা–নরনারীর উভয়ের সম্মতির একটি যৌনমিলন ঘিরেও দল, রাজনীতি, আদর্শবাদের বুলি কপচিয়ে আখের গোছানো আমাদের চারপাশের লোকেদেরই কথা মনে করে আমরা শিউরে উঠি। কোনো যৌন উত্তেজনায় শিউরাই না। নারীর অসহায়তা ঘিরেই কেবল নয়, শিউরে উঠি সামগ্রিকভাবে মানুষের অসহায়তায়, মনুষ্যত্বের সঙ্কটকে ঘিরে।

এই চরম মানবিক সঙ্কটে, তীব্র বেকারত্বের জ্বালায়, ঘরে বাইরে অশান্তিময় জীবনের ভিতরে আর কতো কতো কাল অগ্নিশদের মতো ভণ্ড রাজনীতিকদের ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইলিং এর শিকার হবে সিন্ধুরারা? নীতির ফুলঝুরি ছোটানো অগ্নিশদের তো আমরা সব সময়েই আমাদের চারিপাশে দেখি। যে কোনো ‘অতি’ রাজনীতিতে তো এই অগ্নিশরা রান্নায় লবণের মতো থাকবেই থাকবে। অথচ এই অগ্নিশেরাই যে নিজের স্কুলের চাকরিটা বজায় রেখে, প্রথম স্ত্রীর প্রতি বিচ্ছেদের পর, তার প্রতি কোনো সামাজিক, অর্থনৈতিক দায়িত্ব পালন করেছেন কিনা, সেটা উহ্য রেখেই, সিন্ধুরার ছাঁটাই হওয়া ইস্কুলের সঙ্গে বোঝাপড়া করে ফেলে তাকে বলে, একটা পোলাইট চিঠি স্কুল কর্তৃপক্ষকে দিতে। এই চিঠিতেই চাকরি আবার ফেরত পাবে সিন্ধুরা। কারণ, অগ্নিশ বিয়ে করতে চায় সিন্ধুরাকে। চিঠি, যেটা কার্যত ক্ষমা প্রার্থনা, দিতে অস্বীকার করে সিন্ধুরা। সেই রাত্রে সে কি খাবে তার কোনো ঠিক ঠিকানা না থাকলেও, চিঠি লিখে ক্ষমা চেয়ে, ইস্কুলের চাকরি ফেরত পাওয়া, তারপর স্কুল চাকুরে অগ্নিশ, যে কিনা উপদলীয় কার্যকলাপের ভিতর দিয়ে একদিন নেতা হয়ে উঠবেই, এইসব মেনে নিয়ে, নিশ্চিন্তে, নিরাপদে জীবন কাটানোর মেয়ে সিন্ধুরা নয়। আজ ও সিন্ধুরা আছে বলেই শত প্রলোভন, আত্মসমর্পণের ভিতরেও রাজনীতি টিকে আছে। সিন্ধুরারাই টিকিয়ে রাখবে, রাজনীতি মানে পাইয়ে দেওয়া নয়। রাজনীতি মানে যে কোনো সহযোদ্ধার সঙ্গে বিছানা শেয়ার করা নয়। রাজনীতি মানে আদর্শবোধ।

সিন্ধুরার জন্মরহস্য ঘিরে যে সংশয়ী পদচারণা করেছেন প্রচেত, সেটি বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসের সমাজবাস্তবতার ক্ষেত্রে একটি গবেষণার বিষয় হতে পারে। শাশ্বতের রাজনৈতিক সহযোগীদের তার বাড়িতে আসা। সেই আসার নিরিখে শাশ্বতের স্ত্রী নয়নতারার সাথে কোনো সহযোদ্ধার সম্পর্ক ঘিরে শাশ্বতের দিনলিপি সিন্ধুরার পড়ে ফেলা–রাজনৈতিক আন্দোলনের পর্দার আড়ালের এই দৃশ্যমানতাকে উল্লেখ করে প্রচেত এই অনালোচিত, অথচ সকলের ই জানা, এমন একটি বিষয়কে যেভাবে তুলে ধরেছেন, তা শাশ্বতের জীবনকালের প্রথম পর্যায়ের সঙ্কীর্ণতাবাদী রাজনীতির ফসল কি না- এটি বাংলার রাজনীতির সামাজিক প্রেক্ষিত গবেষণার একটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য বিষয়। যে সমরেশ মজুমদারের অ্যান্টিবায়োটিকে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ রোগ সেরে যাওয়ার কথা দিয়ে এই আলোচনা শুরু করেছিলাম, সেই সমরেশ মজুমদারই ছয়, সাতের দশকের সঙ্কীর্ণতাবাদী রাজনীতির ভিতরে, একদম অভ্যন্তরে কামলোলুপতার বিষণ্নকাহিনি লিখেছিলেন তার ‘গর্ভধারিণী’ উপন্যাসে। সেই প্রেক্ষিতেরই যেন এক বিবর্তিত উপলখণ্ড আমাদের সামনে মেলে ধরলেন প্রচেত গুপ্ত।

নিজের পত্নীর গর্ভের সন্তানের পিতৃত্ব ঘিরে সন্দেহ আর তার জেরে সেই সন্তানকে নষ্ট করে দেওয়ার তাগিদ-এই পর্যায়ে শাশ্বতের স্থিত প্রাজ্ঞ আচরণ আমাদের যেন অনেক না বলা কথাকে মনে করিয়ে দেয়। এক ফায়ার ব্রান্ড ছাত্র নেতার বৃদ্ধ বয়সের চোখের ভাষা কেই আমি ফুটে উঠতে দেখি শাশ্বতের ভেতরে।দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতার বৃদ্ধ বয়সে ব্রিটিশের বিরুদ্ধে গোলাগুলি চালানো স্ত্রীর বিশ্বাসহীনতার জেরে, দিল্লির মহাফেজখানাতে রুদ্রাক্ষ পরিহিত একদা আগুনখেকো নেতার অসহায়তাই যেন ফুটে ওঠে।

এই সময়কালের যুব সমাজের অসহায়তা, বিশেষ করে বেকারত্বের জ্বালা, তাদের ঘিরে ক্ষমতাশালীদের পিংপং বলের মতো খেলা- আমরা এসব দেখেও দেখি না। আজ নানা ধরণের সামাজিক অপরাধের সঙ্গে যুক্ত মানুষদের যদি পরিসংখ্যান নেওয়া যায়, দেখা যাবে এদের একটা বড়ো অংশেরই ন্যুনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক। অথচ এরা কেউ চাকরি পাননি। একটা সময়ে শাসকের চরিত্র ছিল, নিজের তাবেদারদের চাকরি, সরকারি লোন, ডোল, পারমিট, লাইসেন্স ইত্যাদি পাইয়ে দেওয়া। এটাকেই তারা রিলিফ বলে মনে করতেন। এই রিলিফটাকেই তারা উন্নয়ন বলে চালাতেন।

জামানা বদলের সাথে সাথে চাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রটি থেকে শাসক কার্যত হাত তুলে নিয়েছেন। নিজের দলের কর্মী, সমর্থকদের ও চাকরি দেওয়ার উপায় তাদের নেই বেহিসেবি খরচের দরুণ। সরকারের আমোদ প্রমোদের জেরে রাজকোষ শূন্য। ঋণ নেওয়ার যে মাপকাঠি থাকে, সেটাও কবে শেষ হয়ে গেছে। ফলে শাসক এখন প্রকাশ্যেই সবকিছু এলোমেলো করে দিচ্ছে, যাতে লুটেপুটে খাওয়া যায়। এইভাবে লুটেপুটে খাওয়ার সুযোগ করে দিয়েই সে তার কর্মী সমর্থকের বেসটাকে ঠিক রাখতে চাইছে। এই অবস্থায় ‘নিষাদ’রা অসহায়। ‘সিন্ধুরা’রা অসহায়। তবু তারা দিকভ্রান্ত নয়। প্রচলিত ধারার রাজনীতিকদের মতো অগ্নিশের সঙ্গে শরীরের সুখ মিটিয়ে, মুচলেকা দিয়ে চাকরি ফেরত নিয়ে, সেই অগ্নিশের সঙ্গে ঘর বেঁধে নিশ্চিন্তে জীবন না কাটানোর মতো একজন মানুষ হলেও আছেন। তেমন ই একজনকে তুলে ধরেছেন প্রচেতবাবু।

বহুমাত্রিকতাকে একমাত্রার সুরে বেঁধে, সেই সুর কেই আবার বহুমাত্রায় উপস্থাপিত করা-এমনটা এপার বাংলার হাল আমলের উপন্যাসে প্রায় দেখাই যায় না। সমরেশ বসুর পর মানুষকে দেখে, দেশকালসমাজের গহিনে প্রবেশ করে চরিত্রকে সেখান থেকে তুলে আনার চেষ্টা এপার বাংলায় প্রায় নেই-ই বলা চলে। তাই উপন্যাস বা তার চালচিত্র বা চিত্রকল্প অথবা চরিত্রায়ণ-কোনো কিছুতেই তেমন যেন একটা প্রাণের স্পর্শ আমরা পাই না। রমাপদ চৌধুরীর মধ্যবিত্ত যাপনচিত্র একটা সময়ে এসে আমাদের একঘেঁয়ে স্বাদ এনে দেয়। আবার বিকল্প ধারার অমলেন্দু চক্রবর্তীর ‘রাধিকা সুন্দরী’ আমাদের কাছে পৌনঃপৌনিকতার এক আবর্তনেই আবদ্ধ করে রাখে। সমরেশ বসু একদিকে বৈচিত্র্য, অপর দিকে সমাজমনষ্কতা এবং সেই সঙ্গে পরিমিতিবোধ, অর্থাৎ; একটা দেবেশ রায়ের মতো ঢাউস উপন্যাস, যেখানে উপন্যাসের চিত্রকল্পের থেকে রিপোর্টাজ ই প্রধান( উদাহরণ, বরিশালের যোগেন মন্ডল), এইসবের প্রেক্ষিতে প্রচেত গুপ্তের ‘নিষাদ’, তার গতবছরের উপন্যাস’ মাটির দেওয়ালে’ র মতোই আমাদের একটা পূর্ণতা দেয়। আদর্শবোধে স্থিত করে।রাজনীতিকে একটা পরিত্যক্ত বিষয় হিসেবে দেখানোর বাজারি প্রবণতার বিরুদ্ধে আমাদের সংকল্পে স্থিত করে। পরিশেষে আমাদের মনে এই প্রত্যাশাই জাগায় যে, আমার ঘরে, কবে একজন ‘সিন্ধুরা’ জন্মাবে।

(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)

রাজনীতি