স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে নিহত যুবলীগ নেতা শহীদ নূর হোসেনকে নিয়ে মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গার ‘আপত্তিকর ও কুরুচিপূর্ণ’ বক্তব্যের প্রতিবাদে তার কুশপুত্তলিকা দাহ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ।
সোমবার বিকেলে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে কুশপুত্তলিকা দাহ ও বিক্ষোভ করা হয়।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব হারুনুর রশিদ বিক্ষোভ মিছিলের নেতৃত্ব দেন।
মিছিলটি যুবলীগের প্রধান কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু করে জিরো পয়েন্ট ঘুরে প্রধান কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
এসময় সদস্য সচিব হারুনুর রশিদ বলেন, ‘মশিউর রহমান রাঙ্গার ওই কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য রাষ্ট্রদ্রোহীতার সামিল। তার বিরুদ্ধে মামলা হওয়া উচিত।’
‘‘তার বক্তব্যর জন্য তাকে জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত তিনি ক্ষমা চাইবেন না, ততক্ষণ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা হবে।’’
ওই বক্তব্যর জন্য রাঙ্গাকে দলটির মহাসচিবের পদ থেকে অব্যহতি দেওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।
বিক্ষোভ মিছিল থেকে মশিউর রহমান রাঙ্গাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।
এর আগে দুপুর তিনটা থেকে শহীদ হওয়া নূর হোসেনকে নিয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গার মন্তব্যের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান ধর্মঘট করছেন নূর হোসেনের পরিবার।
নূর হোসেনের পরিবারের পক্ষ থেকে ওই আপত্তিকর মন্ত্যবের জন্য মশিউর রহমান রাঙ্গার ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত তারা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দেন।
গত ১০ নভেম্বর রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে মহানগর উত্তর শাখার উদ্যোগে আয়োজিত ‘‘গণতন্ত্র দিবস’র এক আলোচনা সভায় দলটির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ‘হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ কাকে হত্যা করলেন? নূর হোসেন কে? নূর হোসেন কে? একটা অ্যাডিকটেড ছেলে। একটা ইয়াবাখোর, ফেন্সিডিলখোর।’’
এখন সেই জায়গাটি শহীদ নূর হোসেন স্কয়ার নামে পরিচিত। বুকে-পিঠে ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক / স্বৈরাচার নিপাত যাক’ লিখে মিছিল করা অবস্থায় পুলিশ তাকে গুলি করে হত্যা।
সেই ঘটনার পর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন আরো বেগবান হয়ে উঠে। তার তিন বছর পর ১৯৯০ সালের শেষ দিকে বিদায় নিতে বাধ্য হন স্বৈরাচার এরশাদ।