যেভাবে এখনও ফিট তারা

কক্সবাজার থেকে: আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছেড়েছেন ১৬ বছর আগে। বয়স ৫০ ছুঁইছুঁই। তবে ব্যাট হাতে ২২ গজে নামলে সেটা বোঝার কোনো উপায় থাকে না! বলা হচ্ছে আকরাম খানের কথা। ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি জয়ে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেয়া এ ক্রিকেটার খেলতে নামলে ব্যাটে ঝড়ে রানের ফল্গুধারা!

কক্সবাজারে চলমান মাস্টার্স ক্রিকেট কার্নিভালে নেমেই আকরাম খেলেছেন ৩৩ রানের অসাধারণ এক ইনিংস। তার মতো খালেদ মাসুদ পাইলট এবং হান্নান সরকারও দারুণ ধারাবাহিক। ব্যাটিং দেখে বোঝার উপায় নেই তারা সাবেক হয়েছেন সেই কবেই! নিজেদের ট্রেডমার্ক শট, রানিং বিটুইন দ্য উইকেট ঠিক রেখে প্রমাণ করে যাচ্ছেন এখনও কতটা ফিট তারা!

মাস্টার্স ক্রিকেট খেলতে সাবেক ক্রিকেটারদের মিলনমেলা বসেছে কক্সবাজারের সৈকতপাড়ে। নতুন সংস্করণ ১০০ বলের ক্রিকেটে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে তিন ম্যাচ খেলেছে পাইলটের দল এয়ার এশিয়া রাজশাহী মাস্টার্স। দিনে দুটি করে ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা হয়েছে প্রায় প্রতিটি দলের। মাঠের খেলায় ক্লান্তির বিন্দুমাত্র ছাপ অবশ্য নেই বুড়ো আকরাম-পাইলট-হান্নানদের মাঝে। কীভাবে সাবেকরা টানা ম্যাচ খেলতে পারছেন সেই রহস্য জানালেন আরেক সাবেক ক্রিকেটার হাসিবুল হোসেন শান্ত।

শুধু খেলার জন্য খেলা নয়। ম্যাচে পুরোপুরি নিমগ্ন হয়েই খেলছেন ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট। বেরিয়ে আসছে অসাধারণ সব পারফরম্যান্স! আইসিসি ট্রফি জয়ের নায়কদের একজন হাসিবুল মনে করেন ফিটনেস ধরে রাখার কারণে এখনও মানসিক ও শারীরিকভাবে সবল তারা।

চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে আলাপে শান্ত বললেন, ‘পাইলট নিয়মিত ফুটবল খেলে ধানমন্ডির চার নম্বর মাঠে। যে কারণে এখনও ফিটনেস ধরে রাখতে পেরেছে। হান্নান সবসময় খেলার মধ্যেই থাকে। ফ্রাইডে ক্রিকেট, মাস্টার্স কার্নিভালে নিয়মিত খেলে। যে কারণে ফিটনেস ঠিক আছে। আকরাম ভাই প্রচুর হাঁটেন। এজন্য তারা ব্যাটিংয়ে নামলে এখনও সেরা খেলাটাই উপহার দেন।’

মাস্টার্স ক্রিকেটে সিলেট সিক্সার্সের নেতৃত্বে হাসিবুল। শুক্রবার শেখ কামাল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ম্যাচ শেষ করে নিজের ফিটনেস নিয়েও কথা বললেন সাবেক এই পেসার।

শান্ত এদিন বোলিংয়ের পর মিডলঅর্ডারে ব্যাটিং করেছেন। ঘেমে-নেয়ে একাকার অবস্থা। ফিটনেস প্রসঙ্গ উঠতেই ফিরে গেলেন কৈশোরে, ‘যখন ক্রিকেট শুরু করি, প্রচুর রানিং করতাম। প্রচুর বোলিং করতে পছন্দ করতাম। আর পুকুর পেলেই সাঁতার কাটতাম। এখন ফিটনেস নিয়ে তেমন কিছুই করা হয় না। খেলোয়াড়ি জীবনে পরিশ্রম করে যে ফিটনেস পেয়েছিলাম, সেটি নিয়েই এখনও চলছি। খেলতে সমস্যা হচ্ছে না।’

হাসিবুল যখন জাতীয় দলে, তখন আন্তর্জাতিকমানের জিম ছিল না বিসিবিতে। বেশিরভাগ সময় ফ্রি-হ্যান্ডে কাজ করেই প্রস্তুত হতেন আন্তর্জাতিক সিরিজের জন্য। তবে এ নিয়ে আক্ষেপ নেই, ‘পরিশ্রমের কারণে প্রাকৃতিকভাবে শরীর গঠন হত আমাদের। প্রাকৃতিকভাবে শরীর গঠন হয়েছে বলেই এখনও খেলতে পারছি। আমাদের বয়সে এলে এখনকার ক্রিকেটাররা এভাবে খেলতে পারবে কিনা সন্দেহ আছে!’

আকরামলিড স্পোর্টসশান্ত