মিরাজময় ম্যাচে বাংলাদেশের সিরিজ জয়

মিরপুর থেকে: বল হাতে ৪ উইকেট নেয়ার পর ব্যাট হাতেও দায়িত্বশীল ইনিংস খেললেন মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রয়োজনের সময় নাজমুল হোসেন শান্তকে দিলেন দারুণ সঙ্গ। তার অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টি-টুয়েন্টি সিরিজেই বাংলাদেশ পেল জয়ের স্বাদ।

রোববার শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ ৪ উইকেটে হারিয়েছে ইংল্যান্ডকে। বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের দেয়া ১১৮ রানের লক্ষ্যে স্বাগতিকরা পৌঁছায় ৬ উইকেট হারিয়ে, ৭ বল হাতে রেখেই। তিন ম্যাচ সিরিজের ফয়সালা হয়ে গেল এক ম্যাচ আগেই।

টি-টুয়েন্টিতে টাইগারদের ১৭ বছরের পথচলায় এটিই প্রথম ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ। মঙ্গলবার মিরপুরে টিম টাইগার্স তৃতীয় টি-টুয়েন্টি খেলতে নামবে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নদের ধবলধোলাইয়ের লক্ষ্য নিয়ে।

ছোট ফরম্যাটে টাইগারদের সবচেয়ে বড় অর্জনের এটি একটি। আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে এরআগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও জিম্বাবুয়েকে সংক্ষিপ্ত সংস্করণে সিরিজে হারিয়েছে বাংলাদেশ।

ওয়ানডে সিরিজ হাতছাড়া হওয়ার ভেন্যুতেই টি-টুয়েন্টি সিরিজ জয়ের সুযোগ আসে বাংলাদেশের। ইংল্যান্ডকে ১১৭ রানে আটকে ফেলে দারুণ সম্ভাবনা জাগায় স্বাগতিকরা। জবাবে নেমে দুই ওপেনার লিটন দাস ও রনি তালুকদার ৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন।

দলীয় ১৬ রানে লিটন ও ২৭ রানে আউট হন রনি। আগের ম্যাচে জয়ের নায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত দারুণ ব্যাটিং করে জয়ের দিকে এগিয়ে নেন দলকে। তৌহিদ হৃদয়ের সঙ্গে জুটিও জমে ওঠে। দলীয় পঞ্চাশ পেরোনোর পর অভিষিক্ত লেগ স্পিনার রেহান আহমেদের শর্ট বলে ব্যাকওয়াট পয়েন্টে ক্যাচ দেন হৃদয়। লো-স্কোরিং ম্যাচে ১৮ বলে ১৭ রান করে যান তিনি।

৫৬ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর শান্তর সঙ্গে মিরাজের জুটি একশর কাছে নিয়ে যায় দলকে। ১৬ বলে দুই ছক্কায় ২০ রান করা মিরাজ জফরা আর্চারের বলে আদিল রশিদের হাতে ক্যাচ দেন। দলের রান তখন ৯৭।

বাংলাদেশ একশ ছুঁতেই আউট হন সাকিব। ৩ বলে শূন্য রানে ফেরেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। আফিফ হোসেনের (২) স্টাম্প উপড়ে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন আর্চার। শান্ত আবারও নিজেকে মেলে ধরে এনে দেন রোমাঞ্চকর জয়। এ বাঁহাতি ৪৭ বলে ৪৬ রানে অপরাজিত থাকেন। মারেন তিনটি বাউন্ডারি। ইংলিশ পেসার ক্রিস জর্ডানকে টানা দুই বলে চার মেরে সিরিজ জয়ের আনন্দে মাতেন তাসকিন আহমেদ।

টস জিতে সফরকারীদের ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে একশর পরপরই আটকে দেয় বাংলাদেশ। এক ম্যাচ পর একাদশে ফিরে বল হাতে বাজিমাত করেন মিরাজ, নেন ৪ উইকেট।

মিরপুরের স্পিনিং উইকেটে ২০ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে জস বাটলারের দল তোলে ১১৭ রান। সর্বোচ্চ ২৮ রান করেন বেন ডাকেট। ওপেনার ফিল সল্টের ব্যাট থেকে আসে ২৫ রান। বাংলাদেশের দারুণ বোলিংয়ে বাকি ব্যাটাররা ছিলেন আসা-যাওয়ার মধ্যে।

পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে এক উইকেট হারিয়ে ৫০ রান তুলেছিল ইংল্যান্ড। বোলারদের উপর চড়াও হন সল্ট। ১৯ বলে তিন চার ও এক ছয় মেরে কোয়ার্টার পূর্ণ করে সাকিবের বলে ফিরতি ক্যাচ দেন।

সপ্তম ওভারে বোলিংয়ে এসে তৃতীয় ডেলিভারিতেই উইকেট নেন সাকিব। অধিনায়ক ব্রেক থ্রু এনে দেয়ার পর উইকেট তুলে চাপ জারি রাখেন হাসান মাহমুদ ও মিরাজ। টানা তিন ওভারে একটি করে উইকেট হারায় ইংলিশরা।

পরে মিরাজ ১৫তম ওভারে বোলিংয়ে এসে দুই উইকেট তুলে বিধ্বস্ত করেন সফরকারীদের ব্যাটিংলাইন। এক্ষেত্রে কৃতিত্ব লিটন দাসেরও। দারুণভাবে দুটি স্টাম্পিং করেন।

নিজের শেষ ওভারে শেষ বলে মিরাজ উইকেট নিলে স্কোরবোর্ডের চেহারা হয়ে পড়ে বিমর্ষ (১৭ ওভারে ১০০/৭)। সেখান থেকে আর ১৭ রান যোগ করতে পারে ইংলিশরা, শেষের তিন ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে।

নিজের দ্বিতীয় ওভার ও ইনিংসের তৃতীয় ওভারে তাসকিন আহমেদ অসাধারণ এক ডেলিভারিতে ডেভিড মালানকে (৫) হাসানের ক্যাচ বানিয়ে এনে দেন প্রথম উইকেট। শেষের উইকেটটি নেন মোস্তাফিজুর রহমান।

বাংলাদেশবাংলাদেশ-ইংল্যান্ড সিরিজমিরপুরমিরাজলিড স্পোর্টসশান্ত