মায়ের মতো আপন কেহ নাই রে

প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববার সারাবিশ্ব জুড়ে পালিত হয় মা দিবস। দিবসটি ঘিরে থাকে নানা আয়োজন। সেই সাথে এই আয়োজনে যুক্ত থাকে নানা গান। যে গান গুলো শুনলে মায়ের জন্য হৃদয় কেঁদে উঠে। পৃথিবীজুড়ে মা‘কে নিয়ে রচিত হয়েছে প্রচুর গান, কবিতা, গল্প আর সিনেমা। বাংলা ভাষাতেও আছে তেমন কিছু গান।  মা’কে নিয়ে হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার মতো তেমন কিছু গানের তালিকা থাকলো এখানে:

দশ মাস দশ দিন ধরে গর্ভে ধারণ: গানটি গেয়েছেন জেমস। সুর ও কথা প্রিন্স মাহমুদের। ১৯৯৯ সালে ‘এখনো দুচোখে বন্যা’ নামের অ্যালবামটি শুধু এই একটি গানের জন্যই সুপার ডুপার হিট করে।

মাগো মা ওগো মা, আমারে বানাইলি তুই দিওয়ানা: বরেণ্য চলচ্চিত্রনির্মাতা প্রয়াত দিলীপ বিশ্বাসের ‘সমাধি’ ছবির গান এটি। গাজী মাজহারুল আনোয়ার কথায় এবং সত্য সাহার সুরে গানটিতে কণ্ঠ দেন শিল্পী খুরশীদ আলম। গানটির কথা ও সুর তৈরি করতে লেগে যায়  দু-তিন দিন। পর্দায় এ গানে ঠোঁট মিলিয়েছেন নায়ক রাজ্জাক।

মায়ের একধার দুধের দাম কাটিয়া গায়ের চাম: গানটির শিল্পী ফকির আলমগীর। একদিন মাকে নিয়ে ফরিদপুরে যাচ্ছিলেন ফকির আলমগীর। আরিচা ঘাটে অন্ধ এক বাউল দোতারা বাজিয়ে ভাঙা গানটি গাইছিলেন। গানটির প্রথম লাইন শুনেই ফকির আলমগীরের ভাল লেগে যায়। নিজের সঙ্গে থাকা রেকর্ডারে গানটা ধারণ করে ফেলেন। পরে গানটি নিজের মতো করে বিটিভির একটি অনুষ্ঠানে গেয়ে সবার প্রশংসা পান। নব্বইয়ের দশকে অজিত রায় বিটিভির জন্য গানটি আবার রেকর্ড করেন। পরে গানটি ফকির আলমগীরের ‘সখিনা-২’ অ্যালবামে সংযোজন করা হয়।

এমন একটা মা দে না: গানটি কথা ও সুর করেছেন ডা. নাসির আহমেদ। গানটির শিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদ। কাকরাইলের ইপসা রেকর্ডিং স্টুডিওতে গানটি রেকর্ড করা হয়। এরপর ১৯৭৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর বিটিভির বিশেষ সঙ্গীতানুষ্ঠানে গানটি প্রচারিত হয়। প্রচারের পরপরই গানটি চারদিকে বেশ সাড়া পড়ে যায়।

রাতের তারা আমায় কি তুই বলতে পারিস: এ গানটি লিখেছেন ও সুর করেছেন প্রিন্স মাহমুদ। গানটির শিল্পী জেমস। ১৯৯৭ সালে প্রিন্স মাহমুদের মা মারা যান। মায়ের মৃত্যুর পর তিনি কিছুদিন গান-বাজনা থেকে দূরে ছিলেন। মাকে হারানোর কষ্ট নিয়েই প্রিন্স মাহমুদ গান করতে বসেন। মাকে নিয়েই তৈরি করেন প্রথম গান। জেমসেরও মা নেই। রেকর্ডিংয়ে ভীষণ আবেগ দিয়ে গানটি গান জেমস। ১৯৯৯ সালে ‘এখনও দুচোখে বন্যা’ নামের একটা মিক্সড অ্যালবামে গানটি বের হয়।

ওই আকাশের তারায় তারায়: গানটির কথা লিখেছেন আসিফ ইকবাল এবং সুর করেছেন শওকত আলী ইমন। গানটির শিল্পী ক্লোজআপ ওয়ান তারকা রাশেদ। আসিফ ইকবালের মা মারা গেছেন অনেক আগে। হঠাৎ একদিন রাতে তিনি মাকে স্বপ্ন দেখেন। স্বপ্নটি দেখার পর ঘুম ভেঙে হাতের কাছে কাগজ-কলম পেয়ে মাকে ভেবে কয়েকটা লাইন লিখে ফেলেন। মাত্র বিশ মিনিতে গিটারে গানটির সুর তোলেন ইমন।

মায়ের মতো আপন কেহ নাই রে: রুমানা ইসলামের গাওয়া এই গানটি লিখেছেন এবং সুর করেছিলেন খান আতাউর রহমান। ‘দিন যায় কথা থাকে’ অ্যালবামের এই গানটি প্রকাশিত হয় ১৯৭৯ সালে।

আম্মাজান: ‘আম্মাজান, আম্মাজান, চোখের মণি আম্মাজান, প্রাণের খনি আম্মাজান, বুকের ধ্বনি আম্মাজান’- ১৯৯৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত কাজী হায়াতের ‘আম্মাজান’ ছবির গান এটি। আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের সুরে ও আইয়ুব বাচ্চুর কণ্ঠে গাওয়া গান এটি।

পথের ক্লান্তি ভুলে স্নেহ ভরা কোলে তব মাগো:  গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের এই গানটির সুর করেছেন এবং গেয়েছেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। ১৯৫৭ সালে উত্তম কুমার অভিনীত ‘মরুতীর্থ হিংলাজ’ নামের ছবিতে প্রথম ব্যবহার করা হয় এই গানটি।

মধুর আমার মায়ের হাসি: গানটির সুর করেছেন সুধীর লাল চক্রবর্তী। গানের কথা লিখেছেন প্রণব রায়। ‘মধুর আমার মায়ের হাসি’ গানটি বহু শিল্পী গেয়েছেন। তার মধ্যে অনুপ ঘোষালের গানটির বেশি জনপ্রিয়।

আইয়ুব বাচ্চুআম্মাজানখুরশীদ আলমগানজেমসমামা দিবসলিড বিনোদন