মানবপাচাররোধে হয়রানির শিকার হচ্ছেন প্রতিরোধকারীরাই

মানবপাচাররোধে পুলিশের অভিযানে বন্দুকযুদ্ধে শনিবার রাতে কক্সবাজারে এক ‘পাচারকারীর’ নিহত হয়েছে। কক্সবাজারের বিভিন্ন গ্রামে মানবপাচাররোধে যারা কাজ করছেন তারা দালালদের হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

কক্সবাজারের উখিয়ার জালিয়াপালং-এর সোনাপাড়া গ্রামের পাশ দিয়ে যাওয়া রেজুখাল দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার হচ্ছিল মানবপাচারের রুট হিসেবে। দু’বছর আগে মানবপাচার অনেক বেশি বেড়ে গেলে স্থানীয় মুরব্বিদের নিয়ে প্রতিরোধ কমিটি তৈরি করে কিছু সচেতন যুবক। তারা গ্রামবাসীর মধ্যে অবৈধপথে বিদেশ না যাওয়ার বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে গেলে দালালদের হামলার শিকার হন। মামলাও হয় তাদের নামে।

মানবপাচার প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব হামিদ বলেন, একবার পাচারকারীদের নাম বলায় তার নামে ৩টি মামলা হয়েছে। এবার নাম বললে তাকে মেরে ফেলবে দালালরা। প্রায় রাতেই তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় দালাল-পাচারকারীরা।

পাচার হওয়ার পরও যারা ফিরে আসতে পেরেছেন তারা পাচারকারীদের নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছেন। ট্রলারে করে পাচারের সময় নারীদের ওপরও নির্যাতন চালাতো পাচারকারীরা।

পুলিশের দাবি মানবপাচাররোধে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছেন।

পুলিশ সুপার শ্যামল কান্তি নাথ বলেন, ফিরে আসা পাচারকারীরা কোন দেশে গেছেন তা তারা ঠিকভাবে বলতে পারেননি। পুলিশ এখন সব কিছু খতিয়ে দেখছে। কারা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত তাও তদন্ত করছে পুলিশ। সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া শুরু করেছেন তারা।

তিনি আরো বলেন, যারা এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়নি তাদের গ্রেফতার করার জন্য পুলিশ এখনও অভিযান অব্যহত রেখেছেন। মানবপাচারকারীরা প্রায় পুলিশের ওপর হামলা চালায়। পুলিশ কঠোরতার সঙ্গে জনগণকে সাথে নিয়ে মানবপাচারের মত জঘন্য অপরাধ রোধের চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে রিপোর্ট হওয়ার পর দালালদের বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। জালিয়াপালংয়ে সোনারপাড়ায় শনিবার রাতের অভিযানে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে জাফর মাঝি নামে এক দালালের।

এই ঘটনায় আহত হন দুই পুলিশ সদস্য। ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারের দাবি করেছে পুলিশ। এর আগে গত ৮ মে কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন চিহ্নিত তিন মানবপাচারকারী।

কক্সবাজারমানবপাচার