মন্ত্রীর চেয়ারে বসে নির্বাচন করা কঠিন: নসরুল হামিদ বিপু

নসরুল হামিদ বিপু’র জন্ম ১৯৬৪ সালের ১৩ নভেম্বর। তিনি আওয়ামী লীগের একজন নেতা এবং দুইবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য। তার নির্বাচনী এলাকা ঢাকা-৩ কেরানীগঞ্জ থেকে দশম জাতীয় নির্বাচনে জয়লাভ করেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

নসরুল হামিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অব হার্ভার্ড এর জন এফ কেনেডি স্কুল থেকে সার্টিফিকেট প্রোগ্রাম অন লিডারশিপ সম্পন্ন করেন।

নসরুল হামিদ তরুণ বয়স থেকেই রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি আওয়ামী লীগের তৃণমুল পর্যায় থেকে আস্তে আস্তে সাংগঠনিক পদ্ধতিতে আজকের এই পর্যায়ে এসেছেন। ১৯৯৪ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত কেরানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক ছিলেন।

১৯৯৭ সালে তিনি আওয়ামী লীগের সহকারী সেক্রেটারি নির্বাচিত হন এবং ১২ বছর এই দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ছিলেন। ঢাকা-৩ আসন থেকে নবম জাতীয় নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর তিনি প্রথমবারের মত সংসদ সদস্য হন।২০১৪ সালে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত হন এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।

রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি নসরুল হামিদ একজন সফল ব্যবসায়ী ও সংগঠক। তিনি হামিদ গ্রুপের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, রিহ্যাব এর সাবেক সভাপতি এবং আবাহনী স্পোর্টিং ক্লাব এর পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

নসরুল হামিদের জন্ম রাজনৈতিক পরিবারে। তার পিতা মরহুম হামিদুর রহমান মহান মুক্তিযুদ্ধের আগে আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশ সরকারের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুব কাছের সহযোগী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। নসরুল হামিদের মা হাসনা হামিদও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ নিয়েছিলেন। সম্প্রতি তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে একান্ত সাক্ষাতকারে মিলিত হন।

প্রশ্ন: নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় কেরানীগঞ্জে আপনার সমর্থনে বিরাট শো ডাউন হয়েছে- এটি কি আচরণবিধি লংঘন নয়?
নসরুল হামিদ বিপু: এই বিষয়টি আমার জানাই ছিল না। আমি কিন্তু যাইনি। প্রার্থী নিজে উপস্থিত থাকলে সেটি আচরণবিধি লংঘন তা আমার জানা ছিল। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় উপজেলা চেয়ারম্যানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। তখন সাধারণ মানুষ জানতে পেরেছেন মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাচ্ছে। কারা কারা মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাচ্ছে এই উৎসুক জনতারও ভীড় ছিল সেখানে। তাই মনে হয়েছে অনেক বড় মিছিল নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমার তো মিছিল নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন নাই। কারণ এই নিয়ে আমি তিনবার ইলেকশন করছি। আর রাজনীতি করি প্রায় ২৫ বছর। তবে উৎসুক জনতার অনেক ভীড় ছিল। আমাদের বা অন্যদের যারই সমর্থনে বলেন। সবাই আশাবাদী যে কারা মনোনয়নপত্র কখন দিচ্ছেন? এই কারণে হয়তো হাজারো জনতা আপনারা দেখেছেন।

প্রশ্ন: তা আপনার জানা ছিল না?
নসরুল হামিদ বিপু: আমার যতোটুকু ধারণা ছিল যে, ওরা হয়তো ১০/১২ জন যাবে, গিয়ে মনোনয়নপত্র দিয়ে আসবে। আমি মনে করি শো ডাউন করার দরকার কী? শো ডাউন হবে ৩০ তারিখে। ভোটের নির্বাচনের দিনই প্রকৃতপক্ষে জনগণ যাচাই বাছাই করবেন কার জনপ্রিয়তা বেশি?

প্রশ্ন: মন্ত্রীর চেয়ারে বসে নির্বাচন করা খুবই কঠিন। একদিকে আপনাকে সতর্ক থাকতে হচ্ছে। আরেক দিকে আপনার বিরোধীদের সহযোগিতা করতে হচ্ছে- এই দুটোর মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখছেন কিভাবে?
নসরুল হামিদ বিপু: মন্ত্রীর শেয়ারে বসে নির্বাচন করা কঠিন। আরেক দিকে এটিকে সহজভাবে আমি নিয়ে নিয়েছি। আমি মনে করছি না যে আমি এখন মন্ত্রী। এভাবে যদি চিন্তা করি। সাধারণ প্রার্থীর মতো আচরণ করতে চাই। আগেও যেরকমভাবে করেছি আমরা। ওই রকমভাবে করছি। আমি যখন আমার এলাকায় যাই- আমি কিন্তু পতাকা লাগাই না। আমাদের সাথের প্রটোকলও থাকে না। সাধারণ মানুষের সাথে মিশি এবং সবসময় মিশে এসেছি যেরকমভাবে। কারণ আমার এলাকায় মানুষ আমাকে সাধারণভাবেই দেখেছে। কারণ আমি একেবারে থানা লেভেল থেকে পলিটিক্স করে আসছি। প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের সমস্যা কিন্তু আসছে। আমার কাজের গতি রাখতে হবে।

প্রশ্ন: তার মানে সরকারে থেকে নির্বাচন করা বড় বাধা কিংবা সতর্ক থাকতে হচ্ছে সরকারি পক্ষের লোকদেরই বেশি?
নসরুল হামিদ বিপু: আমি বলবো যে, বাধা না। এটা অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং। কারণ আমাকে দুই দিকেই সময় দিতে হচ্ছে। এই বিষয় বড় চ্যালেঞ্জের জায়গা।

প্রশ্ন: ১১ তারিখ থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হয়ে যাবে। আপনার নির্বাচনী ইশতেহার, কী হয়নি আপনার এলাকায়?
নসরুল হামিদ বিপু: আমার আগে আমার বাবাও এই এলাকার সংসদ সদস্য ছিলেন। ১৯৭০ সাল থেকে। কেরানীগঞ্জে মাঝখানে বিএনপি-জামায়াত জোট ছিল। ওই সময় সন্ত্রাসের জনপদ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিল কেরানীগঞ্জ। ১১/১২ ঘণ্টা তখন এলাকায় বিদ্যুৎ থাকতো না। সেই সময়ের পত্রিকাতে দেখবেন সবসময়ই সেখানে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলেছে। আরেকটি দিক ছিল, আমার এলাকায় শিক্ষার হার খুব কম ছিল। তাই এটা চ্যালেঞ্জ ছিল আমার এলাকাকে শিক্ষার দিক দিয়ে ভাল অবস্থায় নিতে হবে। সন্ত্রাসের জায়গা থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে।

প্রশ্ন: এবং ঘনবসতিপূর্ণ?
নসরুল হামিদ বিপু: হ্যাঁ। এই এতো মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোতে আনতে হবে, বিদ্যুতায়ন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই আমাকে বিদ্যুতের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য। আমার মনে আছে যখন বিরোধীদলে ছিলাম তখন বিদ্যুতের দাবীতে মিছিল করেছি। সাব স্টেশন ঘেরাও করেছি। তখন সারাদিন বিদ্যুৎ থাকতো না। এই জায়গা থেকে কেরানীগঞ্জ চ্যাম্পিয়ন এখন। প্রতিটি স্কুলে নতুন ভবন হয়েছে। শিক্ষার হার অবিশ্বাস্য আকারে বৃদ্ধি পেয়েছে। গেলো দশ বছরের পরিসংখখ্যান দেখলে বোঝা যায়।

আরেকটি দিক হলো- মেয়েদের মধ্যে শিক্ষা। এইটার একটা বড় জায়গা তৈরি হয়েছে। তারা অনেকে সরকারি চাকরি করছে। মেয়ে উদ্যোক্তা আমাদের এলাকায় বিশেষভাবে তৈরি হয়েছে। অনলাইনে বিজনেস করার জন্য কেরানীগঞ্জের ছেলেমেয়েরা উদ্বুদ্ধ হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়াতে সাংঘাতিকভাবে তারা ইনভলভ কেরানীগঞ্জে প্রোডাক্ট মার্কেটিং করার জন্যে। এই আস্থার জায়গা তৈরি হয়েছে।

রাজনৈতিকভাবে কখনো আমরা সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দেইনি এই দশ বছর। এই কারণে সন্ত্রাস আস্তে আস্তে বন্ধ হয়ে গেছে। জামায়াত-বিএনপি জোটের সময় সন্ত্রাসকে রাজনৈতিকভাবে লালন পালন করা হয়েছিল। স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার এবং জনপ্রতিনিধিসহ এই বিষয়টা তারা ক্যাডার পলিটিক্স এর মত নিয়ন্ত্রণ করতো। এই জায়গা থেকে আমরা সরে এসেছি। কোনভাবেই সন্ত্রাসকে আমরা প্রশ্রয় দেইনি।

এই কারণে নৌকার প্রতি, আমাদের প্রতি মানুষের আস্থা তৈরি হয়েছে কেরানীগঞ্জে এবং সারা বাংলাদেশে। শিক্ষিত সমাজ কেরানীগঞ্জে এখন তৈরি হয়েছে। এখনকার ইয়াং জেনারেশন খুবই সচেতন।

প্রশ্ন: নির্বাচিত হলে আগামী সময়ে আপনি কী করবেন?
নসরুল হামিদ বিপু: কেরানীগঞ্জের জন্য ৫০ বছরের মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করেছি। একেবারে ডিটেইল এরিয়া অ্যাকশন প্ল্যান করেছি কনসালটেন্ট নিয়োগ করে, সোশ্যাল স্টাডি প্ল্যান করেছি। কারণ কেরানীগঞ্জ সাউদার্ন সাইডের গেটওয়ে তৈরি হচ্ছে। সিক্স লেন যেটা কানেক্টেড পদ্মা সেতুর সাথে।

যেহেতু কমিউনিকেশন ডেভেলপ করবে এবং রেল লাইন যাচ্ছে আমাদের উপর দিয়ে, তাই বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ এসে এখানে বসবাস শুরু করবে। তখন আমাদের অবস্থা কী হবে? এখানকার যে অরিজিনাল বাসিন্দা আমরাই বা কোথায় যাব? সেখানকার শিক্ষার অবস্থা কেমন হবে? সেই সময়ের অবকাঠামো তৈরি হবে কিনা? খেলাধুলার মাঠ থাকবে কিনা? পার্ক এবং খোলামেলা জায়গা থাকবে কিনা? খালগুলো রক্ষা করতে পারবো কিনা?

এই বিষয়গুলো চিন্তা করে ডিটেইল এরিয়া মাস্টার প্ল্যান করেছি ৫০ বছরের জন্য। এখন যে কাজটা আমার। আগামী দিনে আমি যদি নির্বাচিত হয়ে আসতে পারি। শেখ হাসিনার নৌকা মার্কা যদি আবার সরকার গঠন করতে পারে আমাদের টার্গেট সেই স্বপ্নের কেরানীগঞ্জ তৈরি করা। সকলের জন্যে আগামী দিনের একটি উদাহরণ তৈরি করা।

প্রশ্ন: ৪৯০০ মেগাওয়ারট থেকে বিদ্যুৎ ২০ হাজার মেগাওয়াট এ উন্নীত করেছে এই সরকার- এতে কি আপনারা সন্তুষ্ট?
নসরুল হামিদ বিপু: আমাদের মাস্টার প্ল্যান আছে। ২০৪১ সাল পর্যন্ত আমরা কাজ করছি সেইটাকে লক্ষ্য রেখে। ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন আমাদের করতে হবে। ৩০ সালে আমাদের ৪০ হাজার মেগাওয়াট করতে হবে। আর ২০৪১ সালে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে। টার্গেট এটাই। যতো বেশি আমি ইউজার বাড়াতে পারবো বিশেষ করে বিদ্যুৎ খাতে, আমার বিদ্যুতের ব্যবহার যতো বাড়াবো এবং যতো বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে পারবো ততো বাংলাদেশের হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্স বেড়ে যাবে। হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্স এর ধারাগুলো কী কী? আমাদের হেলথ সেক্টর, এডুকেশন সেক্টর। আমাদের লাইফ স্টাইলের এই জায়গায় শিক্ষা খাত, স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তার জায়গা থেকে শুরু করে সবকিছু ইমপ্রুভ করবে ওই একটা জায়গায় আমরা যতো বিদ্যুতায়ন করতে পারবো। তাই কিন্তু তৈরি হচ্ছে। সারা গ্রাম-গঞ্জে এই যে ৩৬৫ টি উপজেলাতে আমরা বলতে পারি বিদ্যুতের কানেটিভিটি ৯৪ এর উপরে চলে গেছে। অসম্ভব জায়গা তৈরি হয়ে গেছে।

প্রশ্ন: তারপরও এখনো গ্রামে বিদ্যুৎ নেই অনেক জায়গায়। তাই বাংলাদেশের সব মানুষকে কতো দিনে আলোর মধ্যে নিয়ে আসবেন?
নসরুল হামিদ বিপু: নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ আর বিদ্যুতায়ন দুটি কিন্তু দুই জিনিস। আমি যদি ধরে নেই যে, আধা ঘণ্টা বা ১ ঘণ্টা বিদ্যুৎ নাই। এ ক্ষতি হয় বিদ্যুতের চাহিদা কম বলে তা নয় কিন্তু। আমরা কিন্তু বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করছি সব জায়গায়। আমরা তখনই লোডশেডিং করবো যখন আমার বিদ্যুৎ থাকবে না। অনেকের ধারণা ভ্রান্ত হয়। বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে গেলে মনে করে লোডশেডিং হচ্ছে। কিন্তু তাতো নয়।

লোডশেডিং তখনই ছিল আগের দিনে- এক জায়গায় বিদ্যুৎ নাই, সেখান থেকে বিদ্যুৎ নিয়ে আরেক জায়গায় দিলাম। এটাকে বলে লোড শেড করা। কিন্তু এখন যেটি হচ্ছে নিরবিচ্ছিন্ন হচ্ছে না, দিতে পারছি না। বিকজ অফ অন দ্যা ট্যান্সমিশন, অনেক জায়গা পুড়ে যাচ্ছে, পুরনো কেবল জ্বলে যাচ্ছে, বাতাস বা ঝড় বৃষ্টির কারণে তার পড়ে যাচ্ছে- এই সব কারণে নিরবিচ্ছিন্ন হচ্ছে না। কিন্তু এইটা যদি সারা দেশে নিরবিচ্ছিন্ন করতে হয় তাহলে বিদ্যুতের সব কেবল লাইন আন্ডার গ্রাউন্ড করতে হবে। ইটস ভেরি এক্সপেনসিভ অ্যান্ড ভেরি চ্যালেঞ্জিং।

এই দেশ ৭০০ নদীর দেশ। খাল, বিল, নদী ও নালার দেশে বিদ্যুতের তার ক্ষেতের উপর দিয়ে হাজার হাজার মাইল চলে গেছে। ঝড় বাদল হলে তার পুড়বেই। তবে আমরা ভাল বিদ্যুতের দিকে যাচ্ছি। আমি মনে করি আমাদের আরও দুই তিন বছর লাগবে সারাদেশকে বিদ্যুতের একটি ভাল অবস্থানে নিয়ে আসতে।

প্রশ্ন: গ্যাস সংকট এবং তার দাম বাড়বে কিনা তা নিয়ে শিল্প উদ্যোক্তাদের উৎকণ্ঠা রয়েছে?
নসরুল হামিদ বিপু: আমরা নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস দিতে চাই ইন্ডাস্ট্রিগুলোতে। যেটা আমরা দেওয়া শুরু করেছি এখন। আমরা আবাসিক খাত থেকে সরে আসছি। নতুন কোন সংযোগ আমরা দিচ্ছি না। এটি বারবার বলে আসছি কারণ এটি সম্ভব না। একটা কথা মনে রাখতে হবে আমাদের গ্যাস কিন্তু ফুরিয়ে আসবে। তাই ইতোমধ্যে আমরা এলএনজি আমদানী শুরু করেছি। ডিপসি’তে আমাদের টার্মিনাল আছে। তা এই শেখ হাসিনা সরকারের সময়েই হয়েছে। এই টার্মিনাল থেকে ইতোমধ্যেই আমরা ৩০০ এমএমসিএফ গ্যাস নিচ্ছি এবং পাম্প করছি। ঢাকায় এখন বলা যেতে পারে গ্যাসের অবস্থা অনেকাংশেই ভাল। আগামী মাস থেকে নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাসের অবস্থা আরও ভাল হবে। আর আবাসিক খাতে এলপিজি ব্যবহার করতে বলবো সবাইকে।

প্রশ্ন: দাম নিয়ন্ত্রণ কিভাবে করবেন?
নসরুল হামিদ বিপু: দাম নিয়ন্ত্রণ করে কিন্তু ইন্টারন্যাশনাল মার্কেট। আর প্রাইভেট সেক্টর ডিস্ট্রিবিউট করে। বিদেশে তেলের দাম বাড়লে এটার সাথে প্লেট করা দামের। এলপিজি’র দাম প্লেট করা ওয়েলের সাথে। তাই দাম স্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। তবে আমরা একটি নীতিমালা তৈরি করছি। যদি আগামীতে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে তাহলে এলপিজি’র দাম কমে আসবে আশা করি।

প্রশ্ন: শীত আসলে দেয়াশলাই জ্বালালেও গ্যাস আসে না?
নসরুল হামিদ বিপু: পুরনো লাইন পাইপ লাইনে সমস্যা আছে। তবে আমি মনে করি না, ঢাকা শহরে এখন গ্যাসের সমস্যা আছে। যেহেতু নতন করে ৩০০ এমএমসিএফ গ্যাস দিচ্ছি এখন সেই কমপ্লেন কমে গেছে যে, গ্যাসের চাপ কম প্রেশার কম।

প্রশ্ন: এবারের নির্বাচনী ইশতেহারে বিদ্যুৎ নিয়ে নতুন কী সংযোজিত হবে?
নসরুল হামিদ বিপু: আমাদের ইশতেহারে ছিল ২০২১ সালের মধ্যে শতভাগ বিদ্যুতায়ণ করা। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের দিকে আমরা শতভাগের দিকে এগিয়ে যাবো এই চ্যালেঞ্জ আমরা নিয়েছিলাম। সেই জায়গায় গিয়েছি আমরা। আগামী এক বছরের মধ্যে শতভাগ হয়ে যাবে। কোন কোন জায়গায় ৮০ বা ৯০ শতাংশ বাকী আছে। তাই এক বছরের মধ্যে হয়ে যাবে। আমরা পিছিয়ে নেই। বরং আমরা এগিয়ে আছি। বিদ্যুতখাতে ইশতেহারে থাকবে যতো দ্রুত বাংলাদেশকে জ্বালানী নিরাপত্তার মধ্যে আনতে পারি।

একাদশ জাতীয় নির্বাচননসরুল হামিদ বিপু