সৌম্য-মোসাদ্দেক ঝড়ে বাংলাদেশের প্রথম শিরোপার স্বাদ

ম্যাচ সেরা মোসাদ্দেক

বোলারদের নিরুত্তাপ দিনে শিরোপার পথে মঞ্চটা এমনিতেই কঠিন হয়ে পড়েছিল বাংলাদেশের জন্য। বৃষ্টি আইনের ফাঁদে কণ্টকময় সেই মঞ্চটা হয়ে পড়ে যথেচ্ছ পিচ্ছিলও। যাতে শেষঅবধি পিছলে যায়নি আরেকটি শিরোপা স্বপ্ন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ছোট হয়ে যাওয়া ম্যাচে ২৪ ওভারে ২১০ রানের বড় লক্ষ্যটা সহজেই ছুঁয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ। মাশরাফীর দল লাল-সবুজের শোকেসে আরাধ্য প্রথম শিরোপাটা এনেছে ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে ৫ উইকেটে জিতে।

দুইশ পেরোনো লক্ষ্য তাড়ায় নেমে সৌম্য সরকারের ৪১ বলে ৬৬, মোসাদ্দেক হোসেনের ২৪ বলে অপরাজিত ৫২, মুশফিকুর রহিমের ২২ বলে ৩৬ রানে শিরোপা উঁচিয়ে ধরে বাংলাদেশ। নিজেদের ইতিহাসে প্রথম কোনো বহুজাতিক টুর্নামেন্টের শিরোপা জয়। আগে ছয়বার ফাইনালে উঠে প্রতিবারই ডুবতে হয়েছিল হতাশায়।

ডাবলিনে নির্ধারিত সময়ের প্রায় পাঁচ ঘণ্টা খেয়ে ফেলে বৃষ্টি ও ভেজা আউটফিল্ড। তার আগে উদ্বোধনীতে দাপটে ব্যাট চালিয়ে ক্যারিবীয় দুই ওপেনার হোপ-আমব্রিস ২০.১ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ১৩১ রান তুলে ফেলেন। তারপর বৃষ্টির হানা।

আবারও খেলা গড়ানোর সিদ্ধান্ত হলে ম্যাচ নেমে আসে ২৪ ওভারের লড়াইয়ে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সেখানে ১ উইকেটে ১৫২ রান তোলে। পরে বৃষ্টি আইনে টাইগারদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৪ ওভারে ২১০। ৭ বল আর ৫ উইকেট হাতে রেখেই লক্ষ্যে নোঙর ফেলেছে গ্রুপপর্বে অপরাজিত থেকে ফাইনালে আসা বাংলাদেশ।

এই উইন্ডিজকে দুবার ও আয়ারল্যান্ডকে একবার সহজে হারিয়ে ফাইনালে আসে বাংলাদেশ। গত ম্যাচে আইরিশদের বিপক্ষে চোটে পড়া সাকিব আল হাসানকে ছাড়া একাদশ সাজিয়ে নামতে বাধ্য হয়। টস হেরে শুরুতে বোলিং বেছে নিয়ে ধারহীন থাকেন মাশরাফী ও সতীর্থরা। পরে রড় লক্ষ্য। কিন্তু টাইগাররা খেয়ালি বৃষ্টিতে পিছলে যেতে দিল না প্রথম শিরোপা ছোঁয়ার স্বপ্ন!

বড় লক্ষ্য, শুরুটা হতে হত দুর্দান্ত। তেমন এক ঝড়ো শুরুই এনে দেন সৌম্য সরকার ও তামিম ইকবাল। দুজনে যোগ করেন ৫৯ রান, ৩৩ বলে। সৌম্যই ছিলেন আগ্রাসী। তাকে সঙ্গ দেয়া তামিম থামেন ১৩ বলে ১৮ করে।

তিনে প্রমোশন পাওয়া সাব্বির রানের খাতাই খুলতে পারেননি। তবে ভড়কে যাননি সৌম্য। ম্যাচের ভিত্তি গড়ে দিয়েছেন ঝড় তুলে, সেজন্য ভিত্তি গড়ে দেয়ার পুরস্কারটাও পেয়েছেন এ বাঁহাতি। যখন ফিরেছেন নামের পাশে ৪১ বলে ৬৬ রানের ঝলমলে ইনিংস। ৯ চার ও ৩ ছক্কায় সাজানো।

ফেরার আগে মুশফিকের সঙ্গে ৪৯ রানের আরেকটি কার্যকরী জুটি দিয়ে যান সৌম্য। পরে মুশফিক ফেরেন ২২ বলে ৩৬ করে। ২টি করে চার-ছক্কায় সাজানো ইনিংস। মোহাম্মদ মিঠুন মাঝে ১৪ বলে ১৭ রান দিয়ে যান।

শেষে ম্যাচজয়ী জুটি বাঁধেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মোসাদ্দেক হোসেন। দুজনে অবিচ্ছিন্ন থাকেন ৭০ রান তুলে। যাতে মাহমুদউল্লাহর অবদান ২১ বলে ১৯। আর কাজের কাজটা করেছেন ম্যাচসেরা মোসাদ্দেক। ২০ বলে ফিফটি, বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডেতে দ্রুততম, শেষপর্যন্ত ২৪ বলে ৫২ রানে অপরাজিত থাকেন এ ডানহাতি, ২ চার ও ৫ ছক্কার ইনিংস গড়ে।

এর আগে শাই হোপের ৬৪ বলে ৭২ ও সুনীল আমব্রিসের ৬৯ রানে চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পায় উইন্ডিজ।

বাংলাদেশ-উইন্ডিজলিড স্পোর্টস