আগামী এক মাসের মধ্যে ব্যাংক ঋণের সুদ হার ১০ শতাংশের মধ্যে আসবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত।
রোববার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে জনতা ব্যাংকের বার্ষিক সম্মেলন-২০১৮ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
আবুল মাল আবদুল মহিত বলেন, গতকাল (শনিবার) ব্যাংকাররা একটি বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকে আগামী এক মাসের মধ্যে ব্যাংক ঋণের সুদ হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আমানতের সুদ হার বাড়ার কোনো কারণ নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, ঋণের সুদের হার বাড়ানো খুবই অন্যায় কাজ হয়েছে। এটা তারাও (ব্যাংকাররা) বুঝতে পেরেছেন এবং সুদ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তিনি বলেন, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো স্বল্পমেয়াদে অর্থ নিয়ে তা দীর্ঘ মেয়াদে ঋণ দিচ্ছে; যা আর্থিক খাতের জন্য শুভ নয়।
সরকারি চাকরিজীবীদের উদ্দেশে অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকারি চাকরির প্রধান উদ্দেশ্য সেবা দেওয়া, হুকুম দেওয়া নয়। তাই সেবা দেওয়ার চরিত্র আরও বাড়ানোর দিকে মনোযোগী হতে হবে।
খেলাপি ঋণের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকের খেলাপি ঋণের বোঝাটা বেশ বড়। কিন্তু যদি পুরনো দিনের সঙ্গে চিন্তা করেন তাহলে এটাকে সেরকম বড় মনে হয় না। যখন আমি মন্ত্রী হই তখনই ৪০ শতাংশ খেলাপি ঋণ ছিল। সেখান থেকে এখন এটি ১০ শতাংশে পৌঁছেছে। হয়তো এক দুইতে পৌঁছে যাবে। এটার বিষয়ে আমাদের মনে রাখা দরকার এবং সেদিকে নজর দেয়া দরকার।
তিনি বলেন, সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে বাধ্যতামূলকভাবে তাদের অর্থের ২৫ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকে রাখতে হতো। সেটাকে ৫০ শতাংশ করা হবে।
এ বছর নির্বাচনের বছর উল্লেখ করে তিনি বলেন, অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত হওয়ার সুযোগ নেই। আগে নির্বাচন ঘিরে যে ‘অন্যরকম’ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো, তা এখন নেই।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির ব্যাংকগুলোর উদ্দেশে বলেন, ব্যাংকের উন্নতির জন্য বড় অর্থের ঋণ দিতে খুব আগ্রহী না হলেও চলবে। তবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ঋণ বেশি দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ব্যাংকের লোকসানি শাখার সংখ্যা কমিয়ে নিতে একটি অ্যাকশন প্ল্যান নিতে হবে। অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কার্যক্রম আরও জোরদার করতে হবে।
অনুষ্ঠানে জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান লুনা সামসুদ্দোহা, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ইউনুসুর রহমান এবং বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন।