ব্যাংকের মুনাফার ১ শতাংশ ব্যয় করতে হবে সিএসআরে

করোনাভাইরাস

চলমান করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় ব্যাংকগুলোর করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতায় (সিএসআর) বিশেষ কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশনা  দেয়া হয়েছে।

এর ফলে ব্যাংকগুলোকে ২০২০ সালের নিট মুনাফার ১ শতাংশের সমপরিমাণ অর্থ সিএসআর খাতে ব্যয় করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সোমবার এই নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

এতে বলা হয়, সম্প্রতি বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার বেড়ে গেছে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণজনিত কারণে দারিদ্রহার বেড়ে যাওয়ায় বিপদগ্রস্ত, কর্মহীন দরিদ্র, ছিন্নমূল, দুঃস্থ, অসহায় জনগোষ্ঠীর নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী, স্বাস্থ্য-সুরক্ষা সামগ্রীসহ চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ ও কর্মহীন মানুষের জীবিকা নির্বাহে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে সামাজিক দায়বদ্ধতা প্রতিপালনে তফসিলি ব্যাংকগুলোকে সিএসআর খাতে অতিরিক্ত বরাদ্দের মাধ্যমে বিশেষ সিএসআর কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

এ লক্ষে ব্যাংকগুলো ২০২০ সালের নিরীক্ষিত (হিসাব বিবরণী চূড়ান্ত না হওয়ার ক্ষেত্রে অনিরীক্ষিত) হিসাব অনুযায়ী যে পরিমাণ নিট মুনাফা অর্জন করেছে তার ১ শতাংশের সমপরিমাণ অর্থ সিএসআর খাতে বরাদ্দ করবে।

এ অর্থ ২০২১ সালের সিএসআর খাতের বাজেটে বরাদ্দকৃত অর্থের অতিরিক্ত হিসেবে বরাদ্দ দিতে হবে। প্রয়োজনে স্ব স্ব পরিচালনা পর্ষদ হতে এর অনুমোদন নিতে হবে।

বরাদ্দকৃত অতিরিক্ত অর্থ চলতি বছরের জুনের মধ্যে সিএসআর খাতে ব্যয় করতে হবে।

সামাজিক দায়বদ্ধতা খাতে বরাদ্দকৃত অতিরিক্ত অর্থ স্থানান্তর নিশ্চিত করে তা ১৫ মে’র মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স বিভাগকে জানাতে হবে।

অতিরিক্ত বরাদ্দ করা অর্থ ব্যাংকগুলো ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ৩ বছরে সিএসআর খাতে বরাদ্দ বা ব্যয়িত অর্থের সঙ্গে সমন্বয় করা যাবে।

বিশেষ এ বাজেট থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী, স্বাস্থ্য-সুরক্ষা সামগ্রীসহ চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ এবং কর্মহীন মানুষের জীবিকা নির্বাহে প্রয়োজনীয় সহায়তায় ব্যয় করতে হবে।

এ অর্থ সিটি কর্পোরেশন এলাকার বস্তিবাসী, ছিন্নমূল ও করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে সাময়িকভাবে বেকার হয়ে পড়া ব্যক্তিদের পরিবার; বিভিন্ন জেলার হতদরিদ্র, সাময়িক কর্মহীন ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী যারা করোনাভাইরাসের বিস্তারের কারণে স্বাভাবিক জীবন-জীবিকা নির্বাহে অসমর্থ কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তাদের জন্য ব্যয় করতে হবে।

অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে যেন কোনো বিশেষ এলাকায় কেন্দ্রীভূত না হয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

ব্যাংকগুলো সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের সহায়তায় অথবা শীর্ষ পর্যায়ের এনজিও/এমএফআইগুলোর মাধ্যমে অথবা উভয় প্রকারে প্রস্তাবিত বিশেষ সিএসআর কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে। তবে এ বিষয়ে পৃথক হিসাব রাখতে হবে।

জেলা প্রশাসকের সহায়তায় সিএসআর কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অনুকূলে পরিচালিত হিসাব ও এনজিও/এমএফআইর মাধ্যমে পরিচালনার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট এনজিও/এমএফআইর নামে রক্ষিত হিসাবে টাকা জমা বা স্থানান্তর করতে হবে।

প্রতিটি ব্যাংককে প্রদত্ত টাকার পরিমাণ, উপকারভোগীর সংখ্যা, সংশ্লিষ্ট জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নের নামসহ বিস্তারিত তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে।

বিশেষ সিএসআরের আওতায় এসব কাজ যথাসময়ে ও যথাযথভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অ্যাসোসিয়েশনঅব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এবিবি) সমন্বয়ক ও সহায়তাকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।

ব্যাংকগুলো সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও শীর্ষ পর্যায়ের এনজিও/এমএফআইগুলোর সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে এবিবির সহায়তা নেবে।

এ সংক্রান্ত কার্যক্রম শেষ করে বাস্তবায়ন প্রতিবেদন আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স বিভাগের মহাব্যবস্থাপকের কাছে জমা দিতে হবে।

এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

করোনাবাংলাদেশ ব্যাংকমুনাফাসিএসআর