আমেরিকায় বসে আরাম আয়েশে একটা জীবন কাটিয়ে দিতে পারতেন তিনি। কিন্তু নিজের দেশ, মা, মাটিকে ভালোবেসে সব ফেলে চলে এসেছিলেন নিজ জন্মভূমিতে। জীবনের সকল ধরনের স্বার্থপরতা ত্যাগ করে সিনেমা নির্মাণের মতো যুদ্ধে নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন! তিনি তারেক মাসুদ। বেঁচে থাকলে আজ তাঁর বয়স হতো ৬৩ বছর!
তারেক মাসুদ ভালোবাসতেন চলচ্চিত্রকে। তাকে সিনেমাযোদ্ধা বললেও ভুল হবে না। খুব সাধারণ জীবনযাপন করা মেধাবী এই মানুষটি যতদিন বেঁচে ছিলেন, ততদিন লড়াই করে গেছেন সিনেমা নিয়ে।প্রয়াত এই চলচ্চিত্র নির্মাতা ১৯৫৬ সালের ৬ ডিসেম্বর ফরিদপুরের ভাঙ্গার নূরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
এই চলচ্চিত্র নির্মাতার জন্মদিন উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বিভিন্ন সংগঠন। এদিন বিকাল ৫টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে ’তারেক মাসুদ স্মারক বক্তৃতা ২০১৯’ এবং তারেক মাসুদের সাক্ষাৎকারগ্রন্থ ’চলচ্চিত্রকথা’র প্রকাশনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে তারেক মাসুদ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ও ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটি।
প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘মাটির ময়না’র জন্য ২০০২ সালের কান চলচ্চিত্র উৎসবে ডিরেক্টর’ ফোর্টনাইটসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেন তারেক মাসুদ। তার অন্য ছবিগুলোও আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত।
তারেক মাসুদ নির্মিত অন্য পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রগুলো হলো— অন্তর্যাত্রা ও রানওয়ে। এছাড়া আ কাইন্ড অফ চাইল্ডহুড, নারীর কথা, মুক্তির কথা, মুক্তির গানসহ আলোচিত কিছু স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেন তিনি।
২০১১ সালে ১৩ আগস্টে কাগজের ফুল-এর শুটিং লোকেশন দেখে ঢাকায় ফেরার পথে মানিকগঞ্জের জোকা নামক স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহত হন।