বিশৃঙ্খলাকারীদের ‘সর্বোচ্চ শক্তি’ নিয়ে জবাব দেবে শ্রীলঙ্কা পুলিশ

দেশজুড়ে নৈশকালীন কারফিউ আংশিক তুলে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা সরকার। তবে বিশৃঙ্খলাকারীদের নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে জবাব দিতে প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

ইস্টার সানডেতে সিরিজ বোমা হামলার তিন সপ্তাহ পর শ্রীলঙ্কায় মুসলিম বিরোধী অস্থিরতা রোববার গুরুতর হয়ে সহিংসতায় রূপ নেয়ায় এ কারফিউ জারি করেছিল পুলিশ।

তবে পরবর্তী নির্দেশের আগ পর্যন্ত উত্তর-পশ্চিম প্রদেশে কারফিউ চলবে বলেও পুলিশ জানিয়েছে।

এই কারফিউয়ের মাঝেই সোমবার রাতে একদল হামলাকারীর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত হয়েছেন এক ব্যক্তি বলে জানিয়েছে গালফ নিউজ।

পুলিশ জানায়, ৪৫ বছর বয়সী ওই মুসলিম ব্যক্তির কাঠের ওয়ার্কশপে সোমবার রাতে অতর্কিতে হামলা চালায় একদল বিক্ষুব্ধ মানুষ। ওই সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে বারবার কুপিয়ে তাকে জখম করে হামলাকারীরা। তাকে উদ্ধার করে পুত্তালাম জেলার একটি হাসপাতালে নেয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়।

এটি রোববার থেকে চলমান দাঙ্গা-হামলার ঘটনায় প্রথম মৃত্যু বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা।

বিবিসি জানিয়েছে, টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে শ্রীলঙ্কার পুলিশ প্রধান চন্দনা বিক্রমারত্নে বিক্ষোভকারীদের সতর্ক করে বলেন, দাঙ্গা-বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কর্মকর্তারা সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে জবাব দিতে প্রস্তুত।

এর আগে সোমবার ভোরে দেশটির প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমেসিংহে সবাইকে শান্ত হতে আহ্বান জানিয়ে বলেন, এ বিশৃঙ্খলা গত মাসে হওয়া হামলার তদন্তে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, রোববার খ্রিস্টান অধ্যুষিত চিলাও শহর এবং আশপাশের এলাকায় লোকজন জড়ো হয়ে একাধিক মসজিদ এবং মুসলিম মালিকানাধীন কিছু দোকান লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া ও আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় এক মুসলিম ব্যক্তির বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সহিংসতামূলক হুমকি দেয়ার অভিযোগ এনে গণধোলাই দেয়া হয়।

এ হামলার পর দেশজুড়ে ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপসহ বেশ কিছু সামাজিক মাধ্যম ও মেসেজিং অ্যাপ সাময়িকভাবে বন্ধের ঘোষণা দেয় শ্রীলঙ্কা সরকার।

রোববার সন্ধ্যা থেকে শুরু করে সোমবার ভোর পর্যন্ত কুরুনেগালা জেলায় মুসলিম মালিকানাধীন বেশ কয়েকটি দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালানোর অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

হামলা চালানো বিক্ষুব্ধ দলগুলোকে ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রোববার বেশ কয়েকটি শহরে ফাঁকা গুলি এবং কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে পুলিশ।

শ্রীলঙ্কাশ্রীলঙ্কা-বোমা হামলাশ্রীলঙ্কায় বোমা হামলা