প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় এসে শিক্ষার পরিবেশ ধ্বংস করেছিলো, শিক্ষার্থীদের হাতে অস্ত্র ও মাদক তুলে দিয়েছিলো, আওয়ামী লীগ তাদের হাতে বই তুলে দিয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের ৩০তম সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে অত্যাচার-নির্যাতন করে, ক্ষমতার বাইরে থাকলেও অগ্নিসন্ত্রাসের মাধ্যমে অত্যাচার করে। তাদের শাসনামলে জনগণের কোন ক্ষমতাই ছিলো না, তারা ক্ষমতায় বসিয়েছিলো যুদ্ধাপরাধীদের। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের ইতিহাসে একমাত্র আওয়ামী লীগই শান্তিপূর্ণ উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিলো।
প্রতিটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার পরিবেশ উন্নত করতে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে সরকার উল্লেখ করে করোনাসহ দুর্যোগ মোকাবেলায় ছাত্রলীগের ভূমিকার প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপির কাজই হচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করা। খালেদা জিয়া বলেছিলেন, আওয়ামী লীগকে শিক্ষা দিতে ছাত্রদলই যথেষ্ট। এর প্রতিবাদে আমি ছাত্রলীগের হাতে বই খাতা কলম তুলে দিয়েছিলাম। বলেছিলাম-শিক্ষা শুধু নিজেরাই গ্রহণ করবে না, গ্রামে গিয়ে নিরক্ষর মানুষকে শিক্ষা দেবে। তারা সেটিই করেছে। আমাকে রিপোর্টও দিয়েছে। আমাদের পেটুয়া বাহিনী লাগে না।
ছাত্রদলের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে খালেদা জিয়ার পেটুয়া বাহিনী সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে দেয়। ঢাবিতে রাতের অন্ধকারে ভিসিকে সরিয়ে নতুন আরেকজনকে বসিয়ে দিয়ে ভিসির পদটাও দখল করে নেয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই শিক্ষকসহ বহু নেতাকর্মী হত্যা করে। তাদের অত্যাচার নির্যাতনে সারা বাংলাদেশ ছিল নির্যাতিত। শুধু ক্ষমতায় থাকলেই না, ক্ষমতার বাইরে থেকেও অগ্নিসন্ত্রাসের কথা সবার জানা। ২০১৩/১৪ সালে প্রায় তিন হাজার মানুষকে দগ্ধ করে তারা। বাস, লঞ্চ রেল কোনো কিছুই তাদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি।
সাজাপ্রাপ্ত আসামি খালেদা-তারেকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে যারা এখন গণতন্ত্রের কথা বলে তাদের কঠোর সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘তারা বুদ্ধিজীবী না, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীজীবী।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ভোট চুরি করলে জনগণ জানে সেই সরকারকে কীভাবে উৎখাত করতে হয়। ‘হ্যাঁ’ ‘না’ ভোটের মাধ্যমে ভোট চুরির কালচার শুরু করেছিলেন জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাস করতেন না। তিনি এ দেশে যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন।
১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের স্মৃতিচারণ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ১৫ আগস্ট আমরা হারিয়েছি আপনজনদের। বাংলাদেশ হারিয়েছিল তার উন্নয়নের সব সম্ভাবনা। খুনিদের বানিয়েছিল সারাবিশ্বের প্রতিনিধি। তাদের যোগ্যতা কী? জাতির পিতার খুনি।
ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।