বাবার কবরের পাশে শায়িত হবেন মমতাজউদদীন আহমদ

নিজের ইচ্ছানুযায়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে বাবার কবরের পাশে শায়িত হবেন প্রখ্যাত নাট্যকার, অভিনেতা ও ভাষা সৈনিক অধ্যাপক মমতাজউদদীন আহমদ। চ্যানেল আই অনলাইনকে এমনটাই জানিয়েছেন তারঁ ভাগ্নে শাহরিয়ার মাহমুদ প্রিন্স।

প্রিন্স জানান, মামার ইচ্ছানুযায়ি উনার গ্রামের বাড়ি ভোলাহাটে বাবার পাশে দাফন হবে। তারআগে হাসপাতাল থেকে উনার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে গুলশানের আজাদ মসজিদে। সেখানে গোসলসহ ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে রূপনগর উনার বাসায় নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানেই একটি মসজিদে প্রথম জানাজা হবে বাদ এশা। এরপর সোমবার সকাল ৯টার দিকে তাঁর মরদেহ নেয়া হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে। সেখান থেকে সোজা চাঁপাইনবাবগঞ্জের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে শহীদ মিনারে নেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে প্রিন্স বলেন, শহীদ মিনারে নেয়ার বিষয়ে মমতাজউদদীন আহমদের অনীহা ছিলো। এখন পর্যন্ত সেখানে নেয়ার কোনো পরিকল্পনা তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে করা হয়নি বলেন জানান তিনি।

এ বিষয়ে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এ বিষয়ে মমতাজউদদীন আহমদের পরিবারের সাথে কথা বলছি, এখনো শহীদ মিনারে নেয়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। রাতের মধ্যেই বিষয়টি জানাতে পারবো।

রবিবার দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রখ্যাত নাট্যকার, অভিনেতা ও অধ্যাপক মমতাজউদদীন আহমদ। গত কয়েকদিন ধরেই জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ছিলেন তিনি। ভর্তি ছিলেন রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে।

১৯৩৫ সালের ১৮ জানুয়ারি চাঁপাইনবাবগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। তার লেখা নাটক ‘কী চাহ শঙ্খচিল’ এবং ‘রাজার অনুস্বারের পালা’ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্য তালিকাভুক্ত হয়েছে। তিনি একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মান লাভ করেছেন।

তার রচিত নাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘নাট্যত্রয়ী’, ‘হৃদয়ঘটিত ব্যাপার স্যাপার’, ‘স্বাধীনতা আমার স্বাধীনতা’, ‘জমিদার দর্পণ’, ‘সাত ঘাটের কানাকড়ি’। নিয়মিত চিত্রনাট্য রচনা ছাড়াও তার প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘বাংলাদেশের নাটকের ইতিবৃত্ত’, ‘বাংলাদেশের থিয়েটারের ইতিবৃত্ত’, ‘নীলদর্পণ’ (সম্পাদনা), ‘সিরাজউদ্দৌলা’ (সম্পাদনা)।

ছবি: তানভীর আশিক

চাপাইনবাবগঞ্জমমতাজউদদীন আহমদমরদেহলিড বিনোদন