বাঘ রক্ষায় তৎপর হওয়ার আহবান

সুন্দরবনের ডাকাত আর পাচারকারীদের হাত থেকে বাঘ রক্ষা করতে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরো তৎপর হওয়ার আহবান জানিয়েছেন পরিবেশবাদীরা। তারা বলেছেন, বাঘ রক্ষা করতে না পারলে সুন্দরবনের সঙ্গে ঝড়-ঝঞ্ঝায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশবাসীও।

যে বাঘ এখন কার্যতোসুন্দরবনে ই সীমাবদ্ধ একসময় তা ছিল ঢাকাসহ সারাদেশেই । আর বাঘ হত্যার জন্য দেয়া হতো পুরস্কারও।

আগের দিনে বাঘ হত্যার জন্য পুরস্কার দেওয়া হতো উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, ১৮০৭ সালে ২১৭টা বাঘ মারার জন্য সরকার থেকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছিলো। ১৯০৭ সালেও এভাবে ১৩টি বাঘ মারার জন্য পুস্কার দেওয়া হয়েছিলো।

স্বাধীনতার পর পুরস্কার বন্ধ করে বাঘ হত্যায় শাস্তির বিধান হলেও বাঘ রক্ষা নিয়ে উদ্বেগ কমেনি।

প্রধান বন রক্ষক ইউনুস আলী শাস্তি প্রসঙ্গে বলেন, এর মধ্যে যে সকল চামড়া ও খুলি উদ্ধার হয়েছে-তার কারণে যে সকল মামলা হয়েছে। তারা আবারও জামিন পেয়ে স্বাভাবিক জীবনে চলে এসেছে। যতগুলো প্রসিকিউশন হয়েছে তার মধ্যে মাত্র একটার শাস্তি হয়েছে আর একটারও শাস্তি হয় নাই।

মানুষের সাক্ষাতকারের ভিত্তিতে বাঘের সংখ্যা ৩শ’। পায়ের ছাপের ভিত্তিতে বাঘের সংখ্যা ৪শ’ ৪০ বলা হলেও সবশেষ ক্যামেরা ট্রায়ালের মাধ্যমে বাঘের যে তথ্য পাওয়া গেছে তা প্রকশিত হলে সব হিসেব উল্টে দিতে পারে বলে এক গোলটেবিল আলোচনায় আশংকা করা হয়েছে। ।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মনিরুল হাসান খান মনে করনে, এর ফলাফল যেটাই হোক সেটা মেনে নেওয়া উচিত।

হরিণ ও বাঘের চামড়া পাচার, সুন্দরবনের কাছে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও ভেতর দিয়ে নৌ চলাচলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বক্তারা ।

আইইউসিএনের কান্ট্রি ডিরেক্টর ইসতিয়াক আহামেদ বলেন, বাঘের আবাসস্থল যাতে নষ্ট না হয় সেদিকে আমাদের নজর দেওয়া প্রয়োজন।

বাঘের জন্য সুন্দরবন দরকার আর সুন্দরবন যতটা না বাঘের প্রয়োজন তার চেয়ে বেশি আমাদের দরকার বলে উল্লেখ করেন পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ড. মিহির কান্তি মজুমদার।

বাঘ রক্ষায় পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, সুন্দরবনের পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে যে অপকর্ম হচ্ছে সেগুলো নিয়ন্ত্রণে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।

এরসঙ্গে বনজীবীদের বিকল্প কর্মসংস্থান আর সচেতনতা বাড়ানোর তাগিদ দেন পরিবেশবাদীরা।

বাঘের পাশাপাশি পরিবেশের সবকিছুর দিকে নজর দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুনদার বাবু বলেন, বাঘ যেমন খুবই গুরুত্বপূর্ণ পরিবেশের ব্যাপারটিও গুরুত্বপূর্ণ এবং আমাদের আশে পাশে যা আছে সব কিছুই কিন্তু আমাদের ইকো সিস্টেমরে ভারসম্য রক্ষা করছে।

আর এই প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারটা যতো প্রচার করা সম্ভব হবে বাঘ ও পরিবেশ রক্ষা সম্ভব হবে।

আব্দুল কাইউমের সঞ্চালনায় বন অধিদপ্তর ও প্রথম আলোর উদ্যোগে গোলটেবিলে বাঘের মতো অন্য বন্যপ্রাণী রক্ষায়ও কার্যকর উদ্যোগের আহবান জানান বক্তারা।

পরিবেশবাঘ