বাংলাদেশের দেখানো পথে চলুক প্রতিবেশীরা

প্রতিবেশী দেশগুলোর বিষয়ে স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ বিশেষ করে বর্তমান সরকার যে নীতিতে রয়েছে, তা নতুন করে স্মরণ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইন্ডিয়া ইকোনোমিক সামিটের সমাপনী অধিবেশনে এ বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন: প্রতিবেশী দেশের সাথে সংঘাত নয়, বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে বিশ্বাস করে বাংলাদেশ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ বক্তব্য বাংলাদেশের আপামর জনগণের ভাষা। দেশের প্রায় সব মানুষ এই নীতিতে বিশ্বাস করে বলে আমরা মনে করি। এ কারণে প্রতিবেশীর যেকোনো সংকটে সর্বস্তরের জনগণ এগিয়ে আসে। রাষ্ট্রীয়ভাবে বাংলাদেশও যেকোনো সংকটে প্রতিবেশীর পাশে দাঁড়ায়, যদিও সেখানে নানা ধরনের ঝুঁকি থাকে।

এমনই এক সংকটের নাম রোহিঙ্গা। মিয়ানমার যখন রাখাইনে নিজস্ব নাগরিকদের ওপর জাতিগত নিধন চালিয়েছে, তখন দরজা বন্ধ করে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। নানা ধরনের ঝুঁকি সত্ত্বেও মানবতার খাতিরে তাদেরকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে।

কিন্তু এই সংকটের অবসান বা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে মিয়ানমার সবসময় গোয়ার্তুমির পরিচয় দিয়েছে। এমনকি তারা বিভিন্ন উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডও করেছে। এটা কখনোই প্রতিবেশী সূলভ আচরণ নয়। তবুও বাংলাদেশ সেসব ফাঁদে পা না দিয়ে দক্ষতার সাথে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। সরকারের এই ভূমিকা প্রশংসনীয়।

এক্ষেত্রেও প্রতিবেশী একাধিক দেশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। মিয়ানমারের তৈরি করা আঞ্চলিক এ সংকট যে শুধু দুই দেশের সমস্যা, তা নয়। বরং এ সংকট দীর্ঘমেয়াদী হলে দক্ষিণ এশিয়াসহ বিশ্বের অনেক দেশকেই ভোগান্তিতে পড়তে হবে। এরপরও রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আঞ্চলিক ও বিশ্বনেতাদের গাফিলতি অগ্রহণযোগ্য।

এছাড়া ভারতের সঙ্গেও তিস্তা, সীমান্ত হত্যাসহ অমীমাংসিত নানা বিষয় রয়েছে। আমরা মনে করি, প্রতিবেশীর সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে সমস্যা থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। তবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে আলোচনার মাধ্যমে এসব সমস্যা সমাধানও করতে হবে। যত দ্রুত এর সমাধান হবে ততোই মঙ্গল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই বক্তব্যের পর প্রতিবেশী দেশ সমূহের সংশ্লিষ্ট সবাই সমস্যা সমাধানে আরও বেশি আন্তরিক হবেন বলেই আমাদের আশাবাদ।

ইন্ডিয়া ইকোনোমিক সামিট এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক সমস্যা সমাধান করে অগ্রযাত্রায় ভূমিকা রাখবে বলেই আমরা আশা করি।

ইন্ডিয়া ইকোনোমিক সামিটপ্রতিবেশীরোহিঙ্গাসম্পাদকীয়